কদমতলীর টিটু হত্যা মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি রবিন শেখকে প্রায় এক দশক পর গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। শুক্রবার (২৪ জুন) ভোর ৪টার দিকে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব-১০ এর একটি দল।

গ্রেপ্তার রবিন চাঞ্চল্যকর টিটু হত্যা মামলার অন্যতম প্রধান আসামি আয়নাবাজ সোহাগের সহযোগী। কখনো রাজমিস্ত্রি, কখনো অটোচালক সেজে আত্মগোপনে কাটিয়ে দিয়েছেন প্রায় ১০ বছর।

শুক্রবার বিকেল ৪টায় রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাব-১০ এর উপ-অধিনায়ক মেজর শাহরিয়ার জিয়াউর রহমান।

তিনি বলেন, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে একদল দুর্বৃত্ত পরিকল্পিতভাবে ২০১০ সালের ২৬ নভেম্বর হুমায়ুন কবির ওরফে টিটুকে গুলি চালায়। গুলিবিদ্ধ টিটু ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে কদমতলী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় সোহাগ ওরফে বড় সোহাগ (৩৪), মামুন (৩৩) ও রবিন শেখসহ (৩০) অজ্ঞাতনামা আরও ৩-৪ জনকে আসামি করা হয়। ২০১০ সালে টিটু হত্যা মামলায় রবিন শেখকে অভিযুক্ত হিসেবে গ্রেপ্তার করা হয়। ২০১২ সালে কারাগার থেকে জামিনে মুক্তির পর আত্মগোপনে চলে যান তিনি।
২০১৭ সালের ২৮ ডিসেম্বর রবিন শেখের অনুপস্থিতিতে আদালত রায় ঘোষণা করেন। সেখানে তাকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেন আদালত। 

গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব-১০ এর একটি দল বৃহস্পতিবার রাত ১টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ থানাধীন বরাবো এলাকা থেকে ১০ বছর ধরে পলাতক আসামি রবিন শেখকে গ্রেপ্তার করে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, রবিন টিটু হত্যাকাণ্ডের সময় নবাবপুর এলাকায় একটি ওয়ার্কশপে কাজ করতেন। ২০১২ সালে জামিনে মুক্তি লাভের পর তিনি নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন এলাকায় মিথ্যা পরিচয় দিয়ে রাজমিস্ত্রি হিসেবে কাজ করেন। পরবর্তীতে নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ থানাধীন বরাবো এলাকায় অটো-চালক হিসেবে কাজ করতেন। 

জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায়, আসামি রবিন ও আয়নাবাজ সোহাগ একই এলাকায় পাশাপাশি বাসায় বসবাস করতেন। সেই সুবাদে রবিনের সঙ্গে মামুন ও সোহাগের ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব গড়ে উঠে। ফলে রবিন সোহাগের অন্যতম সহযোগী হিসেবে কাজ করতেন। 

উল্লেখ্য, র‌্যাব-১০ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত প্রধান আসামি আয়নাবাজ সোহাগকে গত ২৯ জানুয়ারি স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল মিটফোর্ড হাসপাতাল এলাকা থেকে, ২ নং পলাতক আসামি মামুনকে গত ১০ মার্চ নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও থানাধীন মেঘনা ঘাট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে। সর্বশেষ তিন নং আসামি রবিন গ্রেপ্তার হলো। তাকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তরের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

জেইউ/এসকেডি