বন্ধুর হাতে প্রাণ গেলো যুবকের, মরদেহ দেখতে এসে অভিযুক্ত গ্রেপ্তার
রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর থানার আমিন মসজিদ গলি এলাকায় পূর্ব শত্রুতার জেরে রাফিন রহমান শাওন (২২) নামে এক যুবককে ছুরিকাঘাতে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় নিহতের বন্ধু অভিযুক্ত রেশাদকে (২০) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (২৪ জুন) মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) মর্গে পাঠায় পুলিশ।
বিজ্ঞাপন
কামরাঙ্গীরচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোস্তাফিজুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, গতকাল বৃহস্পতিবার আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। পরে দরজা ভেঙে রাফিন রহমান শাওনের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করি। নিহতের শরীরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে ৩০টি আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। ঘটনাস্থলে ভিড়ের মধ্যে রেশাদ নামে একটি ছেলেকে আমাদের সন্দেহ হয়। পরে তাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসি। আনার পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে আমাদের কাছে রাফিন রহমান শাওনকে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করে।
হত্যার বর্ণনা দিয়ে রেশাদ আমাদের জানায়, রাফিন রহমান শাওন ও রেশাদ পূর্ব পরিচিত। রাফিন রহমান শাওন তাজিয়া মিছিলের নেতৃত্ব দেয়। রাফিন যে বাসায় একা থাকতেন সেখানে বন্ধু-বান্ধব অনেকেই আসত। গতকাল রেশাদের সঙ্গে রাফিনের ফোনে কথা হয়। পরে বৃহস্পতিবার ভোর তিনটার দিকে রাফিনের বাসায় আসে। আসার সময় পাশের একটি দোকান থেকে ছুরি নিয়ে আসে। রেশাদের চুরি করার অভ্যাস ছিল। পরে রাতে দুজনের মধ্যে কোন একটি বিষয় নিয়ে ঝগড়া হয়। এক পর্যায়ে রাফিন শুয়ে পড়ে, এরপর রেশাদ ছুরি দিয়ে প্রথমে কানের পাশে একটি আঘাত করে। রাফিন উঠে বসে পড়লে রেশাদ তাকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করতে থাকে। মৃত্যু নিশ্চিত হলে সে গোসল করে রাফিনের বাবার একটি লুঙ্গি পরে বাইরে থেকে তালা দিয়ে বেরিয়ে যায়।
রেশাদ আরও জানায়, রাফিনকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করার সময় তার হাত কেটে যায়। পরে সে একটি ফার্মেসিতে গিয়ে তার হাতে সেলাই দিয়ে ঘটনাস্থলে আসে। তাকে যাতে কেউ সন্দেহ না করে সেজন্য সে এখানে এসেছিল। পরে পুলিশ তার সন্দেহজনক গতিবিধির কারণে জিজ্ঞাসাবাদ করলে কথার গরমিল পাওয়া যায়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে তাকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
ওসি আরও বলেন, রেশাদ খুব চালাক কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। আমরা বিভিন্ন সিসিটিভি ফুটেজও মিলিয়ে দেখেছি। এ ঘটনায় নিহতের বাবা সোহেল রানা বাদী হয়ে কামরাঙ্গীরচর থানায় একটি হত্যা মামলা (মামলা নং-৪১) দায়ের করেন। নিহত রাফিন মার্কেটের একটি দোকানে কর্মচারী হিসেবে কাজ করতেন। গ্রেপ্তার আসামিকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
এসএএ/এসকেডি