জনগণের ভোট কেড়ে নিয়ে ক্ষমতায় থাকতে চাই না
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জনগণের ভোট কেড়ে নিয়ে ক্ষমতায় থাকতে চাই না। মিলিটারি ডিক্টেটররা যা করেছে তার বিরুদ্ধে আমিই সংগ্রাম করেছি, আমি আন্দোলন করেছি। জেল-জুলুম, বোমা, গ্রেনেড, গুলির সম্মুখীন আমি হয়েছি। কিন্তু গণতন্ত্রটা করতে পেরেছি বলেই, এই ধারাবাহিকতাটা আছে বলেই আজ দেশের এই উন্নতি। ওদের (বিএনপি) জন্য তো কান্নাকাটি করে লাভ নাই। ওরা ইলেকশনটা করবে কী নিয়ে? পুঁজিটা কী? সমস্যা তো ওইখানেই। বাংলাদেশে বিএনপির একটাও কি যোগ্য নেতা নেই? যাকে তারা দলের চেয়ারম্যান করতে পারে? তাহলে তো তাদের এই দুরাবস্থাটা হয় না।
আজ (বুধবার) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিক প্রভাষ আমিনের করা প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ হচ্ছে এই উপমহাদেশের সবচেয়ে প্রাচীন একটা দল। যে দলটা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল একেবারে গণমানুষের মাধ্যমে। সেই সময়ে পাকিস্তানি সরকারের বিরুদ্ধে, তাদের অনিয়মের বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রতিবাদ করতে গিয়েই আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা লাভ করে ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন। আমাদের প্রতিপক্ষ যে কয়টা দল আছে তাদের জন্মস্থানটা কোথায়? যদি ধরেন মূল একটি দল আছে বিএনপি। বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেছে একজন মিলিটারি ডিক্টেটর, যে মিলিটারি ডিক্টেটর ১৫ আগস্ট জাতির পিতা হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত, খুনি মোশতাকের সাথে তার হাত মেলানো ছিল এবং মোশতাক যাকে সেনাপ্রধান হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিল জাতির পিতাকে হত্যার পর।
বিএনপি প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, দলের নেতৃত্বটা কার হাতে? কে নেতা? এতিমের অর্থ আত্মসাত এবং দুর্নীতির দায়ে একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামি, আরেকজন দশ ট্রাক অস্ত্র মামলা, একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলাসহ দুর্নীতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি। একজন তো ফিউজিটিভ। আরেকজনকে আমি অবশ্য আমার এক্সিজিকিউটিভ অথোরিটিতেই তার সাজা স্থগিত করে বাসায় থাকার সুযোগটা দিয়েছি বয়সের কথা বিবেচনা করে। এখন এই দলটা যে নির্বাচন করবে...আপনার বললেন কোনো দল অংশগ্রহণ করেনি, আপনারা কীভাবে বললেন অংশগ্রহণ করেনি? ১৮’র নির্বাচনে আসেন...বিএনপি একেকটা সিটে কয়জনকে নমিনেশন দিয়েছিল? সেটা কী আপনাদের মনে আছে? এক সিটে একজনকে সকালে দেয়, দুপুরে সেটা পরিবর্তন করে আরেকজন হয়। তারপর দ্বিতীয় দফায় আরেকজনের নাম দেয়। অর্থাৎ যে যত বেশি টাকা দিচ্ছে, তাকে নমিনেশন দিয়ে দিচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, এই অবস্থায় একটা দল যখন নির্বাচনে তাদের প্রার্থী দেয় ঢাকা থেকে তাদের এক নেতা একজনকে দিচ্ছে তো লন্ডন থেকে আরেক নেতা আরেকজনকে দিচ্ছে। যে টাকা না দেয় সে নমিনেশন পাবে না। দিনে যদি তিনবার আপনার নমিনেশন বদলান...তারপর দেখা গেল মাঝখানে নির্বাচন ছেড়ে চলে গেল। এটা কি অস্বীকার করতে পারবে বিএনপি? তাহলে এটা পার্টিসিপেটরি ইলেকশন হয় নাই- এ কথা কীভাবে বলেন? আর যখন আপনি নির্বাচনের মাঠ ছেড়ে মধ্যপথে চলে যান তখন মাঠ ফাঁকা। তখন বাকিরা যা খুশি তাই করতে পারে। সেই দোষটা কাকে দেবেন? এটা তো আওয়ামী লীগকে দিতে পারেন না। আর এই বাস্তবতা সবাই ভুলে যায়।
প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন রাখেন- তারা (বিএনপি) যে ইলেকশন করবে, তারা কাকে দেখাবে? সাজাপ্রাপ্ত ফিউজিটিভকে? সে তো এখন এই দেশের নাগরিকত্ব বাতিল করে দিয়ে বিদেশি নাগরিক হয়ে বসে আছে।
সাংবাদিকদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কত টাকা ইনভেস্ট করলে সহজে ব্রিটিশ নাগরিকত্ব পাওয়া যায়? একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামি হয়েও কীভাবে ব্রিটিশ নাগরিক হলো সেটা খোঁজ করবেন? সেটা খোঁজ করেন না...সেটা তো আপনারা করেন না।
শেখ হাসিনা বলেন, একটা ভালো শক্তিশালী দল করে দেন মাঠেই দেখা হবে। মাঠে আমরা দেখবো। সেখানে ঠিক আছে জনগণ যাকে চায়। আমার কথা একটাই, স্পষ্ট, প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ অনেক থাকে, ওই রকম সুযোগ নিয়ে আমি তো প্রধানমন্ত্রী হইনি কখনো।
এইউএ/এনএফ