জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিদেশ যাওয়া যাবে না : সিআইডি প্রধান
অবৈধভাবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিদেশে যাওয়া যাবে না বলে জানিয়েছেন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি ব্যারিস্টার মাহবুবুর রহমান।
সোমবার (২০ জুন) মালিবাগে অবস্থিত সিআইডির সদর দপ্তরের কনফারেন্স রুমে বিভিন্ন এনজিও এবং সিআইডি কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে আয়োজিত কর্মশালায় এ কথা জানান তিনি। মানব পাচারের বিরুদ্ধে লড়াই : জিও এবং এনজিওর ভূমিকা শীর্ষক কনফারেন্সটির আয়োজন করা হয়।
বিজ্ঞাপন
কর্মশালায় সদর দপ্তরের সব কর্মকর্তাসহ অনলাইনে সারাদেশের জেলা ও মেট্রো থেকে সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার এবং তদূর্ধ্ব পদমর্যাদার কর্মকর্তারা এবং ১৫টি এনজিওর প্রতিনিধি যুক্ত ছিলেন।
মাহবুবুর রহমান বলেন, বিদেশে পাসপোর্ট ছাড়া, কোনো পরিচয়পত্র ছাড়া মানুষদের মতো অসহায় আর কিছু হতে পারে না। এখন টাকার ঝুঁকি নয় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিদেশে যাচ্ছে মানুষ। আর মানব পাচার চক্রের সদস্যরা ভুক্তভোগীদের বিভিন্নভাবে প্ররোচিত করে, বিভিন্ন পথে বিদেশ নিয়ে যায়। আপনাদের বুঝাতে হবে, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিদেশ যাওয়া যাবে না।
তিনি বলেন, আপনারা (এনজিও) কোথায় কাজ করেন। সিআইডি জানে, খোঁজ রাখে। কর্মশালায় আপনাদের দেওয়া বক্তব্যের মাধ্যমে মানব পাচারের বাস্তব্য চিত্র উঠে এসেছে। আমরা দেখেছি আমাদের যে অফিসার ভালো কাজ করে তাদের এনজিওগুলোর সঙ্গে ভালো সম্পর্ক আছে। অনেক অফিসার এখন এনজিওগুলোর সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রাখেন। যাতে মানব পাচার রোধে কাজ করা যায়।
এ সময় তিনি হতাশা ব্যক্ত করে বলেন, অনেক সময় ভুক্তভোগীদের আইনি সহযোগিতা দিতে গিয়ে দেখা যায় উল্টো চিত্র। সিআইডি প্রস্তুত থাকলেও বাদী পাওয়া যায় না। আদালতে গিয়ে ভুক্তভোগীরা টাকার লোভে পড়ে অপরাধীদের সঙ্গে মিলে যায়। তারপরেও মানব পাচার চক্রের কোনো সংশ্লিষ্ট পেলে সিআইডি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের বিষয়ে সিআইডি প্রধান বলেন, আমরা জানতাম রোহিঙ্গারা দীর্ঘদিন বাংলাদেশে থাকলে, তারা বিভিন্ন ধরনের অপরাধে জড়িয়ে পড়বে। তারা এখন বিভিন্ন দেশে পাচারও হচ্ছে।
এদিকে কর্মশালায় অংশ নেওয়া বিভিন্ন এনজিও প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা মানব পাচার নিয়ে কাজ করতে গিয়ে তাদের অর্জিত অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।
তারা এ সময় বলেন, ভুক্তভোগীদের নিয়ে কাজ করতে গিয়ে আমাদের অনেক ধরনের সমস্যায় পড়তে হয়। এমনকি রিক্রুটিং এজেন্সি মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে। এ সময় পুলিশের পক্ষ থেকেও আমাদের সহযোগিতা করা হয় না। এনজিওর লোক দেখলেই বলে আপনাদের এখানে কিসের লাভে আসছেন। এছাড়া আদালতে পিপিদের সাথে রিক্রুটিং এজেন্সির যোগসাজশ আছে। তারা ভুক্তভোগী ও অপরাধীদের মধ্যে টাকার বিনিময়ে মিলিয়ে দেয়।
এ সময় তারা সিআইডি সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন এনজিওর দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা, ভিকটিমদের সব ধরনের আইনি সহায়তা, অভিবাসীদের চোরাচালান সংক্রান্ত আইন প্রণয়ন, মানব পাচারকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ, মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিসট্যান্স চুক্তি, ভিকটিম ও আসামী শনাক্তকরণের বিষয়, ভিকটিম সহায়তাকরণে জরুরি হটলাইন ব্যবস্থা চালু করার দাবি জানান।
কর্মশালায় জাস্টিস অ্যান্ড কেয়ার, ইউএনওডিসি, উইনরক ইন্টারন্যাশনাল, রাইট্স যশোর, ব্লাস্ট, ওকাপ, ঢাকা আহসানিয়া মিশন, ওয়ার্ল্ড ভিশন ও এসডিসির প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
এমএসি/এসকেডি