পাট শিল্প রক্ষা ও বকেয়া পরিশোধের দাবিতে সমাবেশ ও বিজেএমসি ঘেরাও কর্মসূচি পালন করেছে শ্রমিক-কৃষক-ছাত্র-জনতা ঐক্য আন্দোলন নামে একটি সংগঠন।

সোমবার সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। সংগঠনের আহ্বায়ক রুহুল আমীনের সভাপতিত্বে শ্রমিক সমাবেশ ও বিক্ষোভ কর্মসূচিতে চার দফা দাবি উত্থাপন করা হয়।

এ সময় শ্রমিক নেতারা বলেন, দেশের ৪০-৪৫ লাখ চাষি প্রত্যক্ষভাবে পাট চাষের সঙ্গে সম্পৃক্ত এবং পাটচাষ, পাট প্রক্রিয়াজাতকরণ, পাট ও পাটজাতীয় বিভিন্ন দ্রব্যের উৎপাদন ও ব্যবসার সঙ্গে প্রায় ৪ কোটি মানুষের জীবন-জীবিকা জড়িত। দেশের মোট রপ্তানি আয়ের ৩-৪% আসে পাট ও পাটজাত পণ্য থেকে। বিশ্বে পাট উৎপাদনে দ্বিতীয় হলেও পাট ও পাটপণ্য রপ্তানিতে বাংলাদেশ প্রথম এবং সবচেয়ে ভালো মানের পাট আমাদের দেশেই উৎপাদিত হয়। বর্তমান সময়ে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বব্যাপী পাটপণ্যের চাহিদা ব্যাপকহারে বাড়ায় পাট ও পাটপণ্যের সুদিন ফিরে এসেছে।

তারা আরও বলেন, সরকার সামগ্রিকভাবে পাট-শিল্পকে বিকশিত করার কোনো পরিকল্পনা হাতে না নিয়ে কেবল লোকসানের অজুহাতে ২০২০ সালের ২ জুলাই সরকার একযোগে রাষ্ট্রায়ত্ত ২৫টি পাটকল বন্ধ ঘোষণা করে দেয়। যেটা আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত ছাড়া আর কিছুই নয়। গত ৫০ বছরে ৭৮টি পাটকলে যেখানে লোকসানের পরিমাণ ১০ হাজার ৫০০ কোটি টাকা (বছরে ২০০ কোটি টাকার বেশি), সেখানে বিদ্যুৎ খাতের রেন্টাল সেক্টরে গত এক বছরে ভর্তুকি দিতে হয়েছে ৯ হাজার কোটি টাকা।

যেখানে সরকারের উচিত ছিল পাটকলের লোকসানের কারণ অনুসন্ধান করে তা দূর করার পরিকল্পনা হাতে নেওয়া, অথচ সেটা না করে পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীসহ সিনথেটিক ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষা করতে বন্ধ করে দেওয়া হয় ২৫টি রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল। ফলে কর্মহারা হন ৭০ হাজার শ্রমিক। চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে প্রতিটি পাটকল এলাকার স্থানীয় অর্থনীতি ও জনজীবন। পাটকল বন্ধের আজ প্রায় দুই বছর অতিবাহিত হতে চললেও ৫টি জুটমিলের প্রায় ১১ হাজার শ্রমিক বুঝে পায়নি তাদের বকেয়া। এ অবস্থায় চারটি দাবি উত্থাপন করা হয়। দাবিগুলো হলো, 

১. ৫টি জুটমিলের (খালিশপুর জুটমিল, দৌলতপুর জুটমিল, জাতীয় জুটমিল, আর আর জুটমিল ও কে এফ ডি জুটমিল) শ্রমিকদের এরিয়ারসহ সকল বকেয়া পাওনা অবিলম্বে পরিশোধ করতে হবে।

২.রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে দ্রুত চালু করে পর্যায়ক্রমে আধুনিকায়ন করতে হবে।

৩. নাম জটিলতায় ভুক্তভোগী স্থায়ী-বদলি শ্রমিকদের সব বকেয়া পাওনা পরিশোধ করতে হবে।

৪. সব শ্রমিকের নামে মিথ্যা ও হয়রানি মূলক মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।

শ্রমিক সমাবেশ ও বিজেএমসি ঘেরাও কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সংগঠক নিয়াজ মোর্শেদ দোলন, শিহাব বৈদ্যনাথ, শ্রমিক নেতা আলমগীর হোসেন, রুবেল হোসেন প্রমুখ। 

এসকেডি