চট্টগ্রামের বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরণের ঘটনায় হতাহত ৬৯ জনের পরিবারের মাঝে চেক বিরতণ করেছে বিএম কনটেইনার ডিপো লিমিটেড কর্তৃপক্ষ।

সোমবার (২০ জুন) দুপুরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে হতাহতদের পরিবারের মাঝে চেক তুলে দেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান।

এসময় চেক নিতে আসা নিহত ব্যক্তিদের স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। ফায়ার সার্ভিসের কুমিরা স্টেশনের নিহত লিডার এমরান হোসেন মজুমদারের স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস চাঁদপুর থেকে এসেছেন চেক নেওয়ার জন্য। তার সঙ্গে ছিল পাঁচ বছর বয়সী ছেলে তাহসিন। ছেলেকে নিয়ে চেয়ারে বসে কান্না করছিলেন তিনি। ঢাকা পোস্টকে তিনি বলেন, আমার স্বামীকে তো আর ফিরো পাবো না। ছেলেকে কীভাবে মানুষ করবো সেই চিন্তায় দিন পার করছি। আজকে বিএম ডিপো কর্তৃপক্ষ থেকে ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দিয়েছে।

বিএম ডিপো কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিএম ডিপোতে মারা যাওয়াদের মধ্যে থেকে আজকে ২৬ জনের পরিবারকে চেক দেওয়া হয়েছে।  এরমধ্যে ফায়ার সার্ভিসের নিখোঁজ ৩ জনসহ ১৩ পরিবারকে ১৫ লাখ টাকার চেক দেওয়া হয়েছে। আর নিহত অন্য ১৩ পরিবারকে ১০ লাখ টাকার চেক দেওয়া হয়েছে। আর আহত ৪৩ জনের পরিবারকে আহতের মাত্রা অনুযায়ী ২ লাখ টাকা থেকে ১০ লাখ টাকার চেক দেওয়া হয়েছে।

অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান বলেছেন, বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরণের পর চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে হতাহতের পাশে দাঁড়াতে চট্টগ্রামবাসী যেভাবে ছুটে এসেছেন সেটি সারাদেশে নজির স্থাপন করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও চট্টগ্রামবাসীর এ আন্তরিকতায় মুগ্ধ হয়েছেন।

মমিনুর রহমান বলেন, যারা নিহত হয়েছেন তাদের পরিবারে যদি কেউ কর্মক্ষম থাকে তাহলে তাকে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবেন বিএম ডিপো কর্তৃপক্ষ। যাদের কর্মক্ষম কেউ নেই তাদের ভরন-পোষনের ব্যবস্থা করবেন যাতে তারা চলতে পারে। এছাড়া যারা আহত হয়ে কর্মক্ষম হয়েছেন তাদের পরিবারের কাউকে চাকরির ব্যবস্থা করবেন। বিএম ডিপো কর্তৃপক্ষ এ পর্যন্ত যে কথা বলেছেন সব তারা রক্ষা করেছেন। আশা করি বাকি কথাগুলোও তারা রক্ষা করবেন।

অনুষ্ঠানে স্মার্ট গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক মেজর (অব.) শামসুল হায়দার সিদ্দিকী বলেন, বিএম ডিপোর ঘটনায় আমরা মর্মাহত। যারা মারা গেছেন তাদের আত্মত্যাগকে চিরস্মরণীয় করে রাখার জন্য আমাদের অফিসের সামনে দুটি স্মৃতিসৌধ করবো। 

এ সময় চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন বলেন, যারা হতাহত হয়েছেন তাদের পরিবারে যদি সক্ষম কেউ থাকে তাকে চাকরি দেন। যে আর্থিক অনুদান আপনারা পাচ্ছেন সেগুলো কাজে লাগাবেন। কাউকে অতিরিক্ত মুনাফার আশায় নগদ টাকা দেবেন না। বিএম কনটেইনার ডিপোর ঘটনায় যারা এগিয়ে এসেছেন তাদের কাছে চট্টগ্রামের মানুষ কৃতজ্ঞ। 

কেএম/এসএম