চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় প্রশিক্ষণ ও ফায়ার ফাইটিং নিয়ে কোনো গাফিলতি ছিল না বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাঈন উদ্দিন।

মঙ্গলবার (৭ জুন) দুপুরে শহীদ ফায়ার ফাইটার শাকিল তরফদারের জানাজা শেষে এ কথা বলেন তিনি।

তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমরা খুবই মর্মাহত, খুবই বেদনায় আছি। ফায়ার সার্ভিসের ইতিহাসে এটাই সর্বোচ্চ ঘটনা। আমরা আমাদের ১২ জন সহকর্মীকে হারিয়েছি। আমরা এখন পর্যন্ত ৯ জনকে পেয়েছি, তিন জনকে এখনো পাইনি, তাদের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। একসঙ্গে ১২ জনের এর আগে কখনো মৃত্যু হয়নি। এটা আমাদের শোকের দিন, বেদনার দিন।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ডিজি বলেন, খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রথমে যে কাজটি করা হয় ওই এলাকায় সংশ্লিষ্ট এরিয়া থেকে প্রথমে একটি ইউনিট মুভ করে। আমরা যদি যাচাই-বাছাই করতে চাই তাহলে অনেক সময় লেগে যাবে, তখন আমাদেরকে নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়ে যাবে।

ওখানে কোনো ক্যামিকেল আছে কি না, আপনারা জানতেন কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ওখানে ক্যামিকেল আছে সেটা আমরা জানতাম না। ওখানে আমরা যাওয়ার পরে গার্ড ছাড়া কাউকেই পাইনি কিছু বলার জন্য। 

আপনাদের প্রথম কল কে করেছিল, এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ৯৯৯-এ একটা ফোন আসে ৯টা পঁচিশ মিনিটে। খবর পাওয়ার ৫ মিনিট পরে ঘটনাস্থলে আমাদের একটি ইউনিট উপস্থিত হয়।

কী কারণে এত প্রাণহানির ঘটনা ঘটল, প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি বহুবার আপনাদের সামনে বলেছি, আমাদের কাজ হলো ইমিডিয়েট রেসপন্স করা। অর্থাৎ খবর পাওয়ার ৩০ সেকেন্ডের মধ্যেই স্টেশন ত্যাগ করা, এটাই আমাদের রেসপন্স টাইম। আর ঘটনাস্থলে যেতে যতক্ষণ লাগে। ঘটনা জানার ৫ মিনিটের মধ্যেই ঘটনাস্থলে উপস্থিত হই। আমাদের প্রশিক্ষিত টিম ছিল ঘটনাস্থলে যাওয়ার পরে আগুন দেখার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের প্রথম যে কাজ একটি অ্যাসেসমেন্ট করা, অন্যটি ফায়ার ফাইটিং করা। দুটোই আমাদের একসঙ্গে করতে হয়। এমন না যে আমরা দাঁড়িয়ে দেখি পরে কিছু করি। ওখানে যে ক্যামিকেল ছিল সেটা আমাদের জানা ছিল না। আমাদের ফায়ার ফাইটাররা ইমিডিয়েট কাজ শুরু করেছে তখনই একটা বিস্ফোরণ ঘটেছে। আমার ধারণা প্রথম এক বিস্ফোরণে আমাদের ১২ জন সদস্য নিহত হয়েছেন। 

আপনাদের কোনো গাফিলতি ছিল কি না এমন প্রশ্নের জবাবে সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের প্রশিক্ষিত টিম চট্টগ্রামেও ছিল এবং ঢাকা থেকেও পাঠিয়েছি। আমাদের প্রশিক্ষণ ও ফায়ার ফাইটিং নিয়ে কোনো গাফিলতি ছিল না এটা আমি বলতে পারি। নিহতের মূল কারণ আমরা ধারণা করছি বিস্ফোরণের কারণে ঘটেছে। তবে তদন্ত চলছে তদন্ত শেষ হওয়ার আগেই স্পষ্ট করে কিছু বলতে পারছি না। এ ঘটনায় পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত টিম তখনই গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে ঘটনাটি জানা যাবে। আমাদের আরো দু'একদিন সময় দিন, প্রতিবেদন পেলে আপনাদের জানানো হবে।

এসএএ/জেডএস