সমুদ্র মন্ত্রণালয় গঠনের দাবি এমজেএনের
‘যৌথ কর্মে সমুদ্র পাবে পুনরুজ্জীবন’ প্রতিপাদ্য নিয়ে এবার উদযাপিত হতে যাচ্ছে বিশ্ব সমুদ্র দিবস-২০২২। বুধবার (৮ জুন) তারিখে সারাবিশ্বে উদযাপিত হবে দিবসটি।
সমুদ্র ও পরিবেশ বিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ‘মেরিন জার্নালিস্ট নেটওয়ার্ক (এমজেএন)’ দিবসটি যথাযথভাবে উদযাপনের পাশাপাশি দেশে পৃথক সমুদ্রবিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠনেরও দাবি জানিয়েছে।
বিজ্ঞাপন
এমজেএনের সভাপতি গোলাম মাওলা ও সেক্রেটারি সাজেদ রাজু সংগঠনের পক্ষে মঙ্গলবার (৭ জুন) এক যৌথ বিবৃতিতে এ দাবি জানান।
বিবৃতিতে বলা হয়, মেরিন জার্নালিস্ট নেটওয়ার্ক মনে করে, সমুদ্র মানুষের জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে থাকলেও মানুষ সাগর-মহাসাগর সম্পর্কে কম অবগত। বঙ্গোপসাগরসহ যত সাগর ও মহাসাগর রয়েছে, এগুলো হচ্ছে পৃথিবীর ফুসফুস, যা প্রাণীজগতের বেঁচে থাকার জন্য অপরিহার্য।
সমুদ্রের সঙ্গে প্রতিটি মানুষই সংযুক্ত। সমুদ্র মানুষকে বাঁচিয়ে রাখে। এই সমুদ্রকে জানা, সমুদ্র ও সমুদ্রের সঙ্গে সম্পৃক্ত বিষয়গুলোকে কাজে লাগানো এবং সমুদ্রকে দূষণ থেকে মুক্ত রাখতে বাংলাদেশে ব্যাপক সচেতনতামূলক কর্মসূচি গ্রহণ ও পালনের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। এসব দিক বিবেচনায় যথাযথভাবে দেশে ’বিশ্ব সমুদ্র দিবস’ উদযাপনের গুরুত্ব রয়েছে। তাই দিবসটি পালনের জন্য সংশ্লিষ্টদের আহ্বান জানায় এমজেএন।
বাংলাদেশ একটি নদী-মাতৃক দেশ। নদী বাঁচলে বাংলাদেশ বাঁচবে। নদীর সঙ্গে রয়েছে সমুদ্রের গভীর সম্পর্ক ও যোগসূত্র। সমুদ্রকে সুন্দর ও দূষণমুক্ত রাখলে দেশের নদীগুলো বাঁচবে। অন্যদিকে বাংলাদেশ সমুদ্র তীরবর্তী একটি দেশ। এর রয়েছে বিশাল সমুদ্রসীমানা তথা ১ লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গকিলোমিটার সীমানা। সমুদ্রের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে ব্লু ইকোনমি বা সুনীল অর্থনীতির বিপুল সম্ভাবনা। আগামী দিনে সাগর অর্থনীতি হবে বাংলাদেশের অর্থনীতির মূলশক্তি। এসব সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো, সমুদ্রের বিশাল সম্পদ আহরণ করতে দক্ষ জনশক্তি তৈরি, সমুদ্র দূষণ রোধে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ এবং সমুদ্র সংক্রান্ত সামগ্রিক বিষয় যথাযথভাবে পরিচালনা করতে আলাদা একটি সমুদ্র বিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠনের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলে এমজেএন মনে করে। এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান গোলাম মাওলা ও সাজেদ রাজু।
১৯৯২ সালে ব্রাজিলের রিও ডি জেনেরোতে অনুষ্ঠিত বিশ্ব ধরিত্রী সম্মেলনে প্রতি বছর ৮ জুন বিশ্ব সমুদ্র দিবস পালনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সে বছরই প্রথমবারের মতো দিবসটি পালন করা হয়। এরপর ২০০৮ সালে জাতিসংঘ বিশ্ব সমুদ্র দিবস পালনের বিষয়টিকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়।
এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য হচ্ছে— ‘যৌথ কর্মে সমুদ্র পাবে পুনরুজ্জীবন’। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেখা গেছে, সমুদ্রের সঙ্গে একটি নতুন ভারসাম্য তৈরি করতে হলে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। এতে করে সাগর-মহাসাগরের প্রাণবন্ততা পুনরুদ্ধার হবে এবং নতুন জীবন নিয়ে আসবে। তাই সমুদ্র রক্ষায় এবং একে পুনরুজ্জীবিত করার প্রয়োজনে একসঙ্গে কাজ করার তাগিদ সৃষ্টির জন্য এই প্রতিপাদ্য গ্রহণ করা হয়।
জেইউ/এসএসএইচ