ফেনী কারাগারে অভিযান, এসপি বাবুলসহ ১১ জনকে হাসপাতালে পেল দুদক
বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগে ফেনী জেলা কারাগারে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অভিযানের সময় পুলিশের আলোচিত সাবেক এসপি বাবুল আক্তার ও স্বর্ণ ডাকাতি মামলার আসামি ডিবি পুলিশের সাবেক ওসি সাইফুল ইসলামসহ মোট ১১ জনকে কারা হাসপাতালে পেয়েছে দুদকের এনফোর্সমেন্ট টিম। এর মধ্যে অভিযান পরিচালনার সময় সাবেক ওসি সাইফুল ইসলামের কারা হাসপাতালের রেজিস্টারে ভর্তি সংক্রান্ত কোনো তথ্য পায়নি দল।
রোববার (৫ জুন) ফেনী জেলা কারাগারে দুদকের নোয়াখালী সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সুবেল আহমেদের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনা করে। দুদকের সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) মোহাম্মদ শফিউল্লাহ অভিযানের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বিজ্ঞাপন
মূল অভিযোগ ছিল ফেনী জেলা কারাগারের জেল সুপারের বিরুদ্ধে ঘুষের বিনিময়ে অবৈধভাবে বন্দিদের সঙ্গে স্বজনদের সাক্ষাতের ব্যবস্থা করা এবং অসুস্থ কয়েদিদের জন্য হাসপাতাল ওয়ার্ডের সিট বরাদ্দ না দিয়ে ঘুষের বিনিময়ে সুস্থ ব্যক্তিদের সিট দেওয়াসহ বিভিন্ন অনিয়মের।
দুদক জানায়, এক অভিযোগকারী তার অভিযোগে উল্লেখ করেন, ফেনী জেলা কারাগারের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা টাকার বিনিময়ে অবৈধভাবে বন্দিদের সাক্ষাতের ব্যবস্থা করে ও কারা ক্যান্টিনে খাবারের মূল্য বেশি রাখছেন। এছাড়া বন্দিদের মোবাইল ফোনে কথা বলার জন্য সরকারি খরচের বাইরে অতিরিক্ত টাকা নেওয়া, কারা হাসপাতালে অসুস্থ রোগীদের ভর্তি না করে টাকার বিনিময়ে সুস্থ রোগীদের ভর্তি করার ও বন্দিদের সরকারিভাবে বরাদ্দ করা খাবার না দিয়ে ভুয়া বিল ভাউচার করে টাকা আত্মসাৎ।
অভিযান পরিচালনার সময় দুদক টিম দেখতে পায়, কারা হাসপাতালে পুলিশের সাবেক এসপি বাবুল আক্তার ও স্বর্ণ ডাকাতি মামলার আসামি ডিবি পুলিশের সাবেক ওসি সাইফুল ইসলামসহ মোট ১১ জন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তবে অভিযান পরিচালনার সময় সাইফুল ইসলামের কারা হাসপাতালের রেজিস্টারে ভর্তি সংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। অন্যান্য অভিযোগের বিষয়ে কারাবন্দিদের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান যে, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ফি দিয়ে তারা সেবা পাচ্ছেন। ভুয়া বিল ভাউচার করে টাকা আত্মসাৎ সংক্রান্তে রেকর্ডপত্র; জেল সুপার ও জেলারের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের সংক্রান্তে আয়কর নথি এবং সহকারী প্রধানরক্ষী মনির হোসেনের ভুয়া ঠিকানা দিয়ে চাকরি করা সংক্রান্তে অভ্যন্তরীণ তদন্ত প্রতিবেদন চাওয়া হয়েছে।
চট্টগ্রামের আলোচিত মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় কারাবন্দি তার স্বামী সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ২০২১ সালের ২৯ মে ফেনী জেলা কারাগারে স্থানান্তর করা হয়।
২০১৬ সালের ৫ জুন ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে গিয়ে চট্টগ্রাম নগরের জিইসি মোড়ের কাছে নিজাম রোডে সন্তানের সামনে নির্মমভাবে খুন হন মাহমুদা খানম মিতু। ছুরিকাঘাত ও গুলি চালিয়ে হত্যা করা হয় তাকে। এ ঘটনায় বাবুল আক্তার অজ্ঞাতপরিচয় তিন ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে আদালতের নির্দেশে মিতু হত্যা মামলা তদন্তের দায়িত্ব পায় পিবিআই। তদন্তে বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততা বেরিয়ে এলে ২০২১ সালের ১১ তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আরএম/জেডএস