নানা নাটকীয়তার অবসান শেষে বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার খুলে গেছে। চলতি মাসের মধ্যেই দেশটিতে কর্মী যাওয়া শুরু হবে বলে জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ।

বৃহস্পতিবার (২ মে) প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে তিনি সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান

তিনি বলেন, বাজার খুলে গেছে। আমরা এখন প্রস্তুত আছি। জুন মাসের ভেতরেই কর্মী যাওয়া শুরু হবে।

বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারের জট খুলতে সকালে বৈঠক করেন ঢাকা ও কুয়ালালামপুরের জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের কর্মকর্তারা। এরপর ঢাকায় সফররত মালয়েশিয়ার মানবসম্পদমন্ত্রী দাতুক সেরি এম সারাভাননের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী। দুই বৈঠকের পর সাংবাদিকদের ব্রিফ করা হয়।

ব্রিফিংয়ে মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন জানান, মিটিং সম্পন্ন করেছি চমৎকারভাবে। আমরা যে এমওইউ সম্পাদন করেছি, তার ইমপ্লিমেন্টের জন্য প্রথম জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের মিটিং ছিল এটি। এমওইউতে যে পদ্ধতি বর্ণনা করা আছে, বাংলাদেশ তাদের রিক্রুটিং এজেন্সির লিস্ট দেবে। তারা তাদের নিয়ম অনুযায়ী বাছাই করবে।

কস্ট অব মাইগ্রেশনের বিষয়ে মালয়েশিয়ার মন্ত্রী জানিয়েছেন, জিরো মাইগ্রেশন কস্ট নিয়ে কাজ করছেন তারা। এটা এমওইউতে যেভাবে আছে সেই অক্ষরে অক্ষরে যেন প্রতিপালিত হয় তার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সচিব বলেন, মালয়েশিয়ার মন্ত্রী বলেছেন, আগামী এক বছরের মধ্যে অন্তত দুই লাখ মানুষ মালয়েশিয়ার বিভিন্ন ইকোনোমিক সেক্টরে যাবে। একইসঙ্গে নতুন অনেকগুলো সেক্টর আছে, যেগুলো এখনও ওপেন হয়নি, বাংলাদেশের জন্য সেগুলো ওপেন করতে তারা আন্তরিকভাবে চেষ্টা করবেন। একটি হচ্ছে সিকিউরিটি পারসোনাল আরেকটি হচ্ছে ডোমেস্টিক ওয়ার্কারস। এছাড়া আমাদের মন্ত্রণালয়ের যারা তালিকাভুক্ত হবেন, এ রকম তালিকা থেকেই তারা মেডিকেল সেন্টার ঠিক করবেন।

মুনিরুছ সালেহীন বলেন, কর্মীদের সর্বোচ্চ কল্যাণ কীভাবে নিশ্চিত করতে পারব, সেটাই আমাদের প্রথম প্রায়োরিটি। তাদের থাকার ব্যবস্থা হবে। যাবতীয় সোশ্যাল সিকিউরিটি দেওয়া হবে, যা মালয়েশিয়ান আইনে আছে।

কত খরচে কর্মী যেতে পারবেন জানতে চাইলে প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী জানান, মাইগ্রেশন কস্ট আমাদের এমওইউতে করা আছে। মালয়েশিয়ার মন্ত্রী আমাদের কমিটমেন্ট করেছেন, জিরো কস্ট মাইগ্রেশান ওনারা নিশ্চিত করার চেষ্টা করে যাবেন। সঠিক খরচ এখনও বলতে পারব না। আশা করি আগের চেয়ে কম হবে। অনেক কম হবে। ঠিক কত কম এটা বলতে পারব না। কিন্তু কম হবে।

তবে এটা বলতে পারি কর্মীর অংশটুকু কর্মী বহন করবে। এ নিশ্চয়তাটুকু আমাদের দেওয়া হয়েছে। এর বাইরে পাসপোর্ট, মেডিকেল খরচ কর্মীদের। এছাড়া কোভিড টেস্ট ও কোয়ারেন্টাইন খরচ এখনও কর্মীদের ঘাড়েই আছে। আসা-যাওয়া টিকিট তারা দেবেন।

ইমরান আহমদ বলেন, কোনো কর্মী বা এজেন্সি যদি আইন ভঙ্গ করে, তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবে মালয়েশিয়া। এর বাইরে যদি কোনো ফিস নিতে যায়, আমরা কিন্তু একই হিসেবে ব্যবস্থা নেব।

দেশের কতগুলো রিক্রুটিং এজেন্সি কর্মী নেবে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে বৈধ এজেন্সি আছে এক হাজার ৫২০টি। আমরা তালিকা মালয়েশিয়াকে পাঠিয়েছিলাম, এদের মাধ্যমে যাবে। কিন্তু এমওইউতে থাকা সিলেকশনের বিষয়টি মালয়েশিয়ার অধিকার। যেহেতু ওনারা মানুষ নেবে, এ অধিকার তাদের।

এনআই/এমএইচএস