অতিরিক্ত আইজির বাসা থেকে গৃহকর্মীর মরদেহ উদ্ধার
গলায় রশির দাগ দেখে যা বলছে পুলিশ
রাজধানীর রমনা এলাকায় পুলিশের এক অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শকের (অতিরিক্ত আইজি) বাসা থেকে মৌসুমী আক্তার (১৪) নামে এক গৃহকর্মীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ওই গৃহকর্মী আত্মহত্যা করেছে। সুরতহাল রিপোর্টেও আত্মহত্যার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে।
রমনা থানা পুলিশের সুরতহাল প্রতিবেদনে বলা হয়, মরদেহের গলার মাঝখানে রশি পেঁচানোর দাগ পাওয়া গেছে। এছাড়া মৃতের হাত ও শরীরের দুই পাশ স্বাভাবিক অবস্থায় ছিল। তবে দুটি হাতই মুষ্টিবদ্ধ অবস্থায় দেখা গেছে। এছাড়া মরদেহে আর কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি।
বিজ্ঞাপন
সুরতহাল প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, মৌসুমী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হচ্ছে।
এদিকে বৃহস্পতিবার (২ জুন) মৌসুমীর মরদেহের ময়নাতদন্ত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে সম্পন্ন হয়েছে। তবে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মৌসুমীর মরদেহ নিতে পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো কেউ আসেননি।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মৌসুমীর বাড়ি টাঙ্গাইল জেলার ঘাটাইল উপজেলার বাইচাইল গ্রামে। তার বাবা মুক্তার মৃত। তার মা ফরিদা। ২০১৯ সাল থেকে মৌসুমী ওই অতিরিক্ত আইজিপির বাসায় কাজ করছিল। ঘটনার সময় বাসায় মৌসুমী ছাড়া আর কেউ ছিল না।
এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার রমনা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মনিরুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, মৌসুমীর মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় পুলিশ সদরদপ্তরে এক পুলিশ সদস্য আমাদের থানায় একটি অপমৃত্যু (ইউডি) মামলা করেছেন। মামলাটি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে।
মৌসুমীর মৃত্যু নিয়ে পুলিশ প্রাথমিকভাবে কী মনে করছে? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন ও বিশেষজ্ঞের মতামত ছাড়া এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট করে কিছু বলা যাবে না। তবে মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট আত্মহত্যার দিকে ইঙ্গিত দিচ্ছে। আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি, এটি আত্মহত্যার ঘটনা হয়ে থাকতে পারে। তবে সে যদি আত্মহত্যাও করে থাকে তবে কী কারণে করেছে আমরা তা জানার চেষ্টা করছি।
উল্লেখ, বুধবার বিকেল ৫টার দিকে রমনায় অবস্থিত অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক আবু হাসান মুহাম্মাদ (অতিরিক্ত আইজিপি) তারিকের বাসার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্য বাসায় যান। এ সময় বাসার দরজা ভেতর থেকে বন্ধ ছিল। কিন্তু অনেকক্ষণ ডাকাডাকির পর দরজা না খোলায় ওই পুলিশ সদস্য রমনা থানায় বিষয়টি জানান। পরে রমনা থানা পুলিশ খবর পেয়ে বাসার দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে বাসার বারান্দা থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় মৌসুমী আক্তারের মরদেহ উদ্ধার করে।
রমনা থানা পুলিশ জানায়, ঘটনার সময় অতিরিক্ত আইজিপির বাসায় মৌসুমী ছাড়া আর কেউ ছিল না। তার স্ত্রী-সন্তানরা তখন বাসার বাইরে ছিলেন। অতিরিক্ত আইজিপি আবু হাসান মুহাম্মাদ বর্তমানে বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমির প্রিন্সিপাল হিসেবে কর্মরত আছেন।
এমএসি/এসকেডি