পোশাক নিয়ে নরসিংদী রেলওয়ে স্টেশনে তরুণীকে হেনস্তা করার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ, তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। ওই ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্তদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় এনে উপযুক্ত শাস্তির দাবিও জানিয়েছে সংগঠনটি।

রোববার (২২ মে) দুপুরে মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম এবং সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, গত বুধবার (১৮ মে) ঢাকা থেকে বেড়াতে যাওয়া ঢাকাগামী ট্রেনের জন্য অপেক্ষমাণ তরুণীকে পরিহিত পোশাকের জন্য নরসিংদী রেলস্টেশনে তার দুই বন্ধুসহ হেনস্থার শিকার হতে হয়েছে। পরে মেয়েটি দৌড়ে স্টেশন মাস্টারের কক্ষে গিয়ে নিজেকে উগ্রজনতার হাত থেকে রক্ষা করে। মহিলা পরিষদ এই ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করছে।

বর্তমান বিশ্ব আধুনিকতার ছোঁয়ায় রাষ্ট্র থেকে শুরু করে মানুষের জীবনযাত্রার মান, রুচি, চাহিদা সব কিছুই পরিবর্তন হচ্ছে। এই একবিংশ শতাব্দীতে এসে কোন স্বাধীন দেশের নারীকে পোশাকের জন্য হেনস্থা হবার বিষয়টি ন্যক্কারজনক এবং লজ্জাজনক। এই ঘটনা আমাদেরকে মৌলবাদী মানসিকতারই ইঙ্গিতই দেয়।

স্বাধীনতার ৫২ বছর পরে স্বাধীন সার্বভৌম একটি রাষ্ট্রে রেলস্টেশনের মতো জনবহুল একটি স্থানে নারীর পোশাককে কেন্দ্র করে এই ধরণের ঘটনা নারীর প্রতি সমাজের দৃষ্টিভঙ্গিরও প্রতিফলন। আমরা মনে করি, এ ধরনের ঘটনা বাংলার আবহমানকালের জাতি ধর্ম, বর্ণ গোত্র নির্বিশেষে সব নারী স্বাধীনভাবে চলাচলের অধিকার ও নারীর সাজ এবং পোশাকের অধিকারকে বাধাগ্রস্ত করার অপপ্রয়াস।

নারীর পোশাক পরিধান ও নারীর স্বাধীনভাবে চলাচলের অধিকার নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব তাছাড়াও আমরা মনে করি সমাজের মধ্যে বসবাসকারী নারীবিদ্বেষী ধর্মীয় মৌলবাদ গোষ্ঠীর এই ধরণের কর্মকাণ্ড সম্মিলিতভাবে এখনই প্রতিহত করা দরকার।

মহিলা পরিষদ নারী বিদ্বেষী ও সব ধরনের সাম্প্রদায়িকতা তৎপরতা প্রতিরোধ ও পুনরাবৃত্তিরোধে প্রশাসনের যথাযথ দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের দাবি জানাচ্ছে এবং একইসঙ্গে ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্তকে দ্রুত শনাক্ত করে আইনের আওতায় এনে উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানাচ্ছে। মহিলা পরিষদ নারীর স্বাধীন চলাচল নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছে।

জেইউ/আইএসএইচ