রাইস ব্র্যান থেকে দেশের ভোজ্যতেলের চাহিদার ২৫ শতাংশ মেটানো সম্ভব উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, এটির রপ্তানি বন্ধ করার বিষয়ে চিন্তা করা যেতে পারে।

বুধবার (১৯ মে) দুপুরে সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে দ্রব্যমূল্য ও বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত টাস্কফোর্স কমিটির দ্বিতীয় সভা শেষে তিনি এ কথা বলেন। 

মন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেড়ে যাওয়ায় আমাদের দেশে তেলের দাম বেড়েছে। প্রতিনিয়তই দাম বাড়ছে। এ পরিস্থিতিতে আমরা দেশেই সরিষা, রাইস ব্র্যান তেলের উৎপাদন বাড়ানোর চেষ্টা করব। আমরা যদি অনেক চাপ দেই তাহলে রাইস ব্র্যান থেকে ৭ লাখ টন তেল উৎপাদন সম্ভব। আমাদের চাহিদার ২৫ শতাংশ এখান থেকে পাওয়া যাবে। এখন আমরা পাচ্ছি ৫০ থেকে ৬০ হাজার টন। ফলে রাইস ব্র্যান রপ্তানি বন্ধ করার বিষয়ে চিন্তা করা যেতে পারে। কৃষি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তবে এর দাম বেশি হলে চলবে না, কাছাকাছি থাকতে হবে। 

পাশাপাশি রাইস ব্র্যান তেলের সুবিধাগুলো মানুষকে জানাতে হবে। এভাবে প্রচার করে আগাতে হবে, বলেন তিনি।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা ৫ মে ভোজ্যতেলের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছিলাম। আমদানিকারকরা বলেছে সাপ্লাই, পাইপ লাইন, এলসি ও দেশে যা আছে সেটা আমাদের প্রয়োজন অনুযায়ী ঠিক আছে। সেটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে, আমাদের চিন্তার কোনো কারণ নেই। সব সাপ্লাই ঠিক আছে।

তিনি বলেন, আজকে আলোচনায় একটা কথা এসেছে, কোথাও কোথাও দাম বেশি নেওয়া হচ্ছে। ভোক্তা অধিকার গিয়ে জরিমানা করছে। ভোক্তা অধিকার শুধুমাত্র সেসব জায়গাতেই জরিমানা করেছে, যেগুলো আগের মজুদ করা। যেগুলোর দাম লেখা আছে ১৬০ টাকা। সেটা কমে এসেছে। আমরা বাজারে ভয়ভীতি সৃষ্টি করতে চাই না। মিলিতভাবেই সমস্যার সমাধান করতে হবে। আমাদের সাপ্লাই চেইন স্বাভাবিক হয়ে গেছে সমস্যার কিছু নেই।

নিত্যপণ্যের দাম কবে মানুষের নাগালে আসবে- এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ প্রশ্নের উত্তর আমার জানা নেই। এর উত্তর জানতে হলে আমার আর্জেন্টিনা-ব্রাজিলে যেতে হবে। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম না কমা পর্যন্ত আমরা কিছুই করতে পারব না। কলকাতায় খবর নিন সেখানে কত দামে তেল বিক্রি হচ্ছে। মানুষকে বৈশ্বিক অবস্থা জানাতে হবে।

ডলারের রেট বাড়ায় সমস্যা তৈরি হচ্ছে- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, আমাদের দুই বছর ইম্পোর্ট (আমদানি) কম ছিল। এখন খুলে যাওয়ায় প্রভাব পড়েছে, দুই বছরের চাপ একসঙ্গে পড়েছে। সবকিছু মিলেই একটা প্রভাব পড়েছে। বৈদেশিক রিজার্ভে চাপ পড়েছে। গত দুই বছর ইম্পোর্ট কমায় রিজার্ভ বেড়েছিল। এখন চাপ পড়ায় এ সমস্যা হচ্ছে। এখন স্বাভাবিকভাবেই কমছে। শ্রীলঙ্কায় বিপদ বলেই আমাদের বিপদ, তা তো নয়। আমরা তো তাদেরই সহায়তা করেছি। আমাদের ঘাবড়ানোর কোনো কারণ নেই। প্রধানমন্ত্রী এটি নিয়ে সুন্দরভাবে বলেছেন যে, আমাদের দেশে বৈশ্বিক প্রভাব পড়েছে, আমাদের সাশ্রয়ী হতে হবে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ। এছাড়াও দ্রব্যমূল্যের সঙ্গে সম্পর্কিত সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ এবং গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধি ছাড়াও এফবিসিসিআইসহ খাতসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

এসএইচআর/ওএফ