চট্টগ্রামের বাকলিয়ায় দুই বছরের শিশু আবদুর রহমান আরাফ হত্যা মামলায় তিন জনকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। 

বুধবার (১৮ মে) চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জসিম উদ্দিন এই আদেশ দিয়েছেন।  

ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত পিপি প্রবীর কুমার ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, আজ আরাফ হত্যা মামলার রায় ঘোষণার নির্ধারিত তারিখ ছিল। আদালত তিন আসামির সবাইকে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- মো. ফরিদ, মো. হাসান ও হাসানের মা নাজমা বেগম। রায়ের সময় আসামিরা উপস্থিত ছিলেন। রায়ের পর তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

আরাফের পরিবারও রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে। আরাফের বাবা আব্দুল কাইয়ুম ঢাকা পোস্টকে বলেন, তিন আসামির সবাইকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এখন আমরা এই রায় দ্রুত বাস্তবায়ন চাই। এই রায় যেন দৃষ্টান্ত হয়ে থাকে। কোনো মা-বাবা যেন আমার মতো আর সন্তানহারা না হয়। আমাদের মতো যেন কেউ আঘাত না পায়। 

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের ৬ জুন চট্টগ্রাম নগরীর বাকলিয়া এলাকায় দুই বছরের শিশু আবদুর রহমান আরাফকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এই ঘটনায় ২০ জন সাক্ষী দিয়েছেন। আসামিপক্ষে ১০ জনের সাফাই সাক্ষ্য হয়েছে। এই মামলায় চার্জশিট হয়েছিল ২০২১ সালের ১০ মার্চ। 

আরও জানা গেছে, ঘটনার দিন বিকেলে ঘরের সামনের পার্কিং থেকে ভবনের ছাদে নিয়ে গিয়ে পানির ট্যাংকি থেকে ফেলে আরাফকে হত্যা করে আসামিরা। তারা নুরুল আলম নামের একজনের আটতলা ভবনের ভাড়াটিয়া ছিলেন। হত্যার পর ভবনটির বাসিন্দা নাজমা বেগম, তার ছেলে, বাড়ির দারোয়ান হাসান ও তাদের পাশের ভবনের বাসিন্দা ফরিদকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তখন নাজমা বেগম আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেন। 

জবানবন্দিতে তিনি বলেছিলেন, বাড়িওয়ালা নুরুল আলমকে ফাঁসাতে আরাফকে হত্যা করা হয়। নাজমা আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে আরও বলেছিলেন ঋণগ্রস্ত হয়ে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ায় অর্থের লোভ এবং পাশের ভবনের বাসিন্দা ফরিদের প্রলোভনে বাড়িওয়ালাকে ফাঁসাতে এ ঘটনা ঘটিয়েছেন তিনি।

কেএম/জেডএস