বাসা বাড়ির ময়লা টানাই আমাদের কাজ, ঈদের সময় গৃহস্থালি বর্জ্যের পরিমাণ আরও বাড়ে। এ সময় যদি আমরা বাসা বাড়িতে গিয়ে ময়লা সংগ্রহ বন্ধ করে ঈদে বাড়ি যেতাম তাহলে ঘরে ঘরে দুর্গন্ধের সৃষ্টি হতো। যে কারণে আমাদের ঈদে বাড়ি যাওয়া হয় না...

কথাগুলো বলছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ২১ নম্বর ওয়ার্ডের বেসরকারি প্রাইমারি ওয়েস্ট কালেকশন সার্ভিস প্রোভাইডার (পিডাব্লিওসিএসপি) সদস্য সুলতান আহমেদ।

তিনি বলেন, আমার গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহ, ঈদে অন্যরা সবাই বাড়ি গেলেও আমরা যারা আবর্জনা টানার কাজ করি তারা বাড়িতে যেতে পারিনি। কারণ ঈদের সময় বাসায় বাসায় গৃহস্থালি বর্জ্য উৎপাদন হয় বেশি, এ সময় যদি আমরা ঈদের ছুটি নিয়ে বাড়িতে যাই তাহলে ঘরে ঘরে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হবে। ওয়ার্ড ভিত্তিক বেসরকারি প্রাইমারি ওয়েস্ট কালেকশন সার্ভিস প্রোভাইডার প্রতিষ্ঠানে বর্জ্য সংগ্রহকারী কর্মী হিসেবে কাজ করি, যে কারণে ঈদে ছুটি পাইনি। তাই ঈদে বাড়ি যাওয়া হয়নি। গতকালও সারাদিন কাজ করেছি, আজও করতে হচ্ছে। আমরা বাড়ি চলে গেলে দুর্গন্ধের দুর্ভোগে পড়ত নগরবাসী।

রাজধানীর শাহজাদপুর এলাকায় কথা হয় আরেক পিডাব্লিওসিএসপির বর্জ্য সংগ্রহকারী নাজিম উদ্দিনের সঙ্গে। তিনিও একইভাবে বলেন, ঈদে আমাদের বাড়ি যাওয়া হয় না। সারা বছর ময়লা টানি ঈদের আগে বাড়ি বাড়ি গিয়ে বোনাস চাই, কেউ দেয় কেউ দেয় না। যেহেতু সারা বছর ধরে বাসা বাড়ির ময়লা টানি সেহেতু ঈদের সময় যদি ৩/৪ দিনের জন্য বন্ধ করে দেই তাহলে প্রতিটি বাড়িতে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হবে তাহলে ভাড়াটিয়ারা অসন্তুষ্ট হতে পারে। যে কারণে আমরা ঈদের সময় ইচ্ছে থাকলেও বাড়ি যেতে পারি না।

গুলশান লেক পাড়ে অন্তর্বর্তীকালীন বর্জ্য স্থানান্তর কেন্দ্রের (এসটিএসি) সামনে কথা হয় বর্জ্য সংগ্রহকারী আব্দুর রসিদের সঙ্গে। তিনি বলেন, প্রতি বছরই বলতে গেলে ঈদের বাড়ি যাওয়া হয় না। এবারও যাইনি। মন খারাপ হয়, সবাই যখন বাড়ি যায় ঈদে, তবে আমরা যেহেতু জরুরি বর্জ্য অপসারণকারী সেহেতু আমাদের বাধ্য হয় ঈদের দিন, ছুটির দিন সব দিনই কাজ করতে হয়। আমরা বর্জ্য না নিলে বাসা বাড়িতে দুর্গন্ধ হয়ে যাবে। তাই জরুরি সেবা মনে করে ঈদে বাড়িতে যাওয়া হয় না।

এএসএস/এসকেডি