টিকিট না পাওয়া যাত্রীদের লোকাল বাসই ভরসা
স্বজনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে কয়েকদিন ধরে গ্রামের বাড়ি যাচ্ছেন ঢাকার বাসিন্দারা। শনিবার (৩০ এপ্রিল) সকাল থেকে রাজধানীর গাবতলীতে দেখা গেছে ঘরমুখো মানুষের চঞ্চলতা। দুই হাতে ব্যাগ নিয়ে নির্দিষ্ট বাসের কাউন্টার খুঁজে বেড়াচ্ছেন অনেকে। তবে দূরপাল্লার যাত্রীর চাপ কম দেখা গেছে। ঢাকার পাশের জেলাগুলোর যাত্রী বেশি দেখা গেছে।
গাবতলী আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল থেকে উত্তর, দক্ষিণ ও পশ্চিমবঙ্গের সব বাস ছেড়ে যাচ্ছে। অনেকে আজ আধা বেলা অফিস করে পরিবার নিয়ে ছুটছেন গাবতলীতে। তবে টিকিটপ্রাপ্তরা নির্বিঘ্নে বাসে উঠতে পারলেও বিড়ম্বনায় পড়ছেন টিকিট না পাওয়া সাধারণ যাত্রীরা। যারা আগে টিকিট কাটেননি বা টিকিট পাননি তাদের একমাত্র ভরসা এখন লোকাল বাস। এই বাসগুলোতে গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়াও।
বিজ্ঞাপন
শনিবার (৩০ এপ্রিল) সকাল ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত সরেজমিনে দেখা যায়, গত কয়েকদিনের তুলনায় গাবতলীতে যাত্রীদের চাপ কম। কাউন্টারের টিকিট বিক্রেতারা বলছেন, সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত চাপ কম থাকবে। তবে সন্ধ্যা থেকে আবার চাপ বাড়বে কাউন্টারগুলোতে।
সাভার, নবীনগর, টাঙ্গাইল, মানিকগঞ্জ, ঢাকার ধামরাই, গাজীপুর ও পাটুরিয়া ঘাটগামী নিকট দূরত্বের যাত্রীদের সংখ্যা বেশি। অধিকাংশ যাত্রী সড়ক ও ফুটপাতে দাঁড়িয়ে আছেন। গন্তব্যে যেতে যে যা পাচ্ছেন তাতেই উঠে পড়ছেন।
পাটুরিয়া ঘাটগামী যাত্রী সবুজ মিয়া জানান, বাস টার্মিনালে ভিড় কম থাকলেও লোকাল ও গেটলক বাসগুলোতে মানুষের চাপ বেশি। এ সুযোগে বেশি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। দেড়শ টাকার ভাড়া নেওয়া হচ্ছে ২০০ থেকে আড়াইশ টাকা।
পাটুরিয়া ঘাটে যাবেন আরেক যাত্রী বেলাল মিয়া। তিনি বলেন, অন্য সময় ভাড়া নিত ১৫০ টাকা, আজ নেওয়া হচ্ছে ৩০০ টাকা। ভাড়া এক এক গাড়িতে একেক রকম। বাসও মিলছে না। বাধ্য হয়ে পরিবারসহ সেলফি বাসে উঠেছি।
একটি বেসরকারি অফিসের কর্মকর্তা আবু নাছের বলেন, গাবতলীতে এসে পরিবহন ভোগান্তিতে পড়েছি। লাইনে দাঁড়িয়ে কখনো টিকিট কিনি না। সিডিউল বাসেই যাওয়া যায়। কিন্তু এবার এসে দেখছি ভাড়া বেশি, পরিবহনও কম। অল্প বাসে ঠাসাঠাসি অবস্থা।
এসবি লিংক পরিবহনের সুপারভাইজার সাজেদুল জানান, আমাদের ঈদ আছে। আমাদের কেনাকাটা করতে হয়। পরিবহন মালিকরা সব সময় সে খরচ দেয় না। তাই যাত্রীরাই আমাদের ভরসা। ঈদ আসছে, গাজীপুরগামী যাত্রীদের চাপ আছে। তাদের কাছ থেকে বলে-কয়ে ২০/৫০ টাকা বেশি নিচ্ছি।
ঢাকা-মানিকগঞ্জ রুটে চলাচল করা নীলাচল বাস ঈদ উপলক্ষে বিশেষ সার্ভিস দিচ্ছে। বাসটির হেলপার মাহমুদ বলেন, অতিরিক্ত যাত্রী নিচ্ছি না। গাবতলী ছাড়া কোথাও দাঁড়াবেও না বাস। গাবতলীতে সিট ভরে পাটুরিয়া ঘাট পর্যন্ত যাবে। ভাড়া ২০০ টাকা।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ বাস ট্রাক মালিক সমিতির চেয়ারম্যান রমেশ চন্দ্র ঘোষ বলেন, চলতি যাত্রার অগ্রিম টিকিট বিক্রি শেষ। যাত্রাও শুরু হয়ে গেছে। যাত্রীর চাপ সামলানোর সার্বিক প্রস্তুতি রাখতে বলা হয়েছে কাউন্টারগুলোকে।
বাড়তি ভাড়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাস টার্মিনালে মনিটরিং টিম আছে। র্যাব ও পুলিশের কন্ট্রোল রুম রয়েছে। মালিক সমিতির নজরদারিও রয়েছে। যদি কোনো যাত্রীর কাছে বাড়তি ভাড়া চাওয়া হয় তবে অভিযোগ করুক, আমরা ব্যবস্থা নেব।
জেইউ/এসএসএইচ/জেএস