রাজ্য সরকারের কারণে তিস্তা চুক্তি হচ্ছে না
দীর্ঘদিন ঝুলে থাকা তিস্তা চুক্তি সমাধান ভারতের রাজ্য সরকারের কারণে হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত দেশটির হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী। তিনি বলেছেন, তিস্তার হিস্যা ঢাকাকে বুঝিয়ে দিতে রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার।
সোমবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ডিপ্লোমেটিক করেসপন্ডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ডিকাব) আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা।
বিজ্ঞাপন
বিক্রম দোরাইস্বামী বলেন, ‘তিস্তা নিয়ে আমরা রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে যাচ্ছি, তাদের কারণে চুক্তি করা সম্ভব হচ্ছে না। তিস্তা নিয়ে ভারত খুব দৃঢ়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তবে এটি শুধু কেন্দ্রীয় সরকারের বিষয় নয়, রাজ্য সরকার এটির সঙ্গে খুব বেশি জড়িত।’
এ সময় সীমান্ত হত্যা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘কেউ হত্যা চায় না। সীমান্তে সব হত্যাই বিএসএফ করছে সেটা বলা যাবে না। অনেকে তাদের আক্রমণ করে, তারা আত্মরক্ষা করতে গিয়েও কিছু ঘটনা ঘটে।’ সীমান্ত হত্যা বন্ধে ঢাকা-নয়াদিল্লি সচেষ্ট রয়েছে- যোগ করেন হাইকমিশনার।
আগামী মার্চে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে ঢাকায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আসছেন বলেও জানান দোরাইস্বামী।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ডিকাব প্রেসিডেন্ট পান্থ রহমান ও সাধারণ সম্পাদক এ কে এম মঈনুদ্দিন।
উল্লেখ্য, প্রায় এক দশক আগে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের ঢাকা সফরে বহুল প্রতীক্ষিত তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি হওয়ার কথা থাকলেও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরোধিতায় তা আটকে যায়। নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার ভারতের ক্ষমতায় আসার পর তিস্তা চুক্তি নিয়ে আশার কথা শোনা গেলেও মমতার মত বদলায়নি। ফলে বিজেপি সরকারের ইচ্ছা সত্ত্বেও এ চুক্তি হচ্ছে না।
বিদায়ী বছরের শেষ দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভার্চুয়াল আলোচনায় তিস্তা ইস্যু নিয়ে আগের মত আশ্বাস দেয় নয়াদিল্লি। তবে তিস্তা ইস্যু সমাধান না করতে পারায় শেখ হাসিনার কাছে লজ্জা প্রকাশ করেন মোদি।
সবশেষ গত ২৯ জানুয়ারি ভারতের হায়দ্রাবাদ হাউজে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন ও ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলার নেতৃত্বে দুই দেশের ফরেন অফিস কনসালটেশন (এফওসি) শীর্ষক বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে ঢাকা তিস্তা চুক্তি সমাধানে নয়াদিল্লিকে অনুরোধ করা হয়। জবাবে, নয়া দিল্লি ঢাকাকে আগের মত চুক্তি সমাধানে আশ্বস্ত করে। ভারতের পক্ষ থেকে তিস্তার বিষয়ে জানানো হয়, তিস্তা চুক্তি সমাধানের চিন্তা করা হচ্ছে। তবে ছয়টি অভিন্ন নদীর সমস্যা সমাধান প্রথমে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
এমএইচএন/এনআই/এসএসএইচ