ঈদযাত্রায় গণপরিবহনে ভাড়া নৈরাজ্য ও চাঁদাবাজি বন্ধের দাবি
যেকোনো মূল্যে আসন্ন ঈদযাত্রায় সড়ক ও নৌ-পরিবহনের ভাড়া নৈরাজ্য ও চাঁদাবাজি বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন।
সোমবার (২৫ এপ্রিল) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি। এতে স্বাক্ষর করেছেন সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান।
বিজ্ঞাপন
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ আই মাহবুব উদ্দিন আহমেদ, ভাইস চেয়ারম্যান এম. এস সিদ্দিকী, ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, আব্দুল হামিদ শরীফ, অধ্যাপক হাসিনা বেগম এবং নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমানর এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেন, এ বছর ঈদুল ফিতর উদযাপনে ৮০ থেকে ৯০ লাখ মানুষ রাজধানী থেকে বাড়ির উদ্দেশে যাত্রা করবে, যা আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। মাত্র পাঁচদিনে এত বিপুল সংখ্যক যাত্রী সুষ্ঠুভাবে পরিবহন করার মতো যানবাহন আমাদের নেই। ফলে অন্যান্য বারের চেয়ে এবার যানবাহনের সংকট ও নৈরাজ্য বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে।
এছাড়াও ঢাকা থেকে উত্তরবঙ্গগামী মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে অতি ধীরগতিতে সংস্কার ও সড়ক প্রশস্তকরণ কাজের কারণে তীব্র যানজট সৃষ্টির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। দেশের অন্যান্য সড়ক-মহাসড়কের বহু স্থানেও বেহাল দশা রয়েছে। ফলে ঈদযাত্রায় মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়বে।
এতে আরও বলা হয়, এই নাজুক অবস্থায় সড়কে ও নৌ-পথের ঘাটে-ঘাটে চাঁদাবাজির কারণে ভাড়া নিয়ে নৈরাজ্য সৃষ্টি হবে, যা ঈদযাত্রাকে অসহনীয় করে তুলবে। এরই মধ্যে ঈদযাত্রাকে কেন্দ্র করে সড়ক ও নৌ-পথে চাঁদাবাজ সিন্ডিকেট সক্রিয় হয়ে উঠেছে।
অতীত অভিজ্ঞতায় দেখা যায়, শুধু ঈদ মৌসুমেই কয়েক হাজার কোটি টাকার রাজনৈতিক চাঁদাবাজি হয়। দুর্ভাগ্যজনক যে, এসব চাঁদাবাজির সঙ্গে অনেক পুলিশ সদস্যও সম্পৃক্ততা থাকে। মূলত চাঁদাবাজির কারণেই সড়ক ও নৌ-পরিবহনের শৃঙ্খলা পুরোপুরি ভেঙ্গে পড়ে এবং সড়কে ভয়াবহ যানজটের সৃষ্টি হয়।
চাঁদার বিনিময়ে নদীতে ট্রলার ও ডিঙ্গি নৌকায় যাত্রী পারাপার, সড়কে পিকআপভ্যান ও ছোট ছোট ট্রাকে যাত্রী বহন, মহাসড়কে অননুমোদিত যানবাহন চালানোর সুযোগ দেওয়াসহ বিভিন্ন কারণে ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনা বাড়ে। হতাহত হয় বহু মানুষ। সেজন্য এবারের ঈদযাত্রার শুরুতেই চাঁদাবাজি বন্ধ করে যানবাহন চলাচলে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করতে হবে। বিষয়টির সার্বক্ষণিক নজরদারি করতে হবে এবং এই ব্যবস্থা ঈদের ফিরতি যাত্রা পর্যন্ত অব্যাহত রাখতে হবে। তা না হলে এবার পরিস্থিতি ভয়াবহ রকমের অবনতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
বিবৃতিতে সংগঠনের নেতারা বলেন, অতীত অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, ঈদযাত্রার শুরুতে সড়ক ও নৌ-পরিবহন পরিচালনা কর্তৃপক্ষ এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার পক্ষ থেকে ভাড়া নৈরাজ্য ও চাঁদাবাজি বন্ধের নানা প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও ঈদযাত্রার শুরুতেই সবকিছু ভেঙ্গে পড়ে। ফলে মানুষকে অবর্ণনীয় কষ্ট সহ্য করতে হয়।
কিন্তু এবার যেন আগের ঘটনাগুলোর পুনরাবৃত্তি না ঘটে সেজন্য রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নেতারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান।
এএজে/জেডএস