জার্মানি-জাপানসহ আরও অনেক দেশে দক্ষ নারী শ্রমিক পাঠানো প্রয়োজন
প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ইমরান আহমেদ বলেছেন, নারী অভিবাসীদের নিয়ে অনেক সম্ভাবনা আছে, আছে সমস্যা ও সমাধান। এই সমাধান নিয়ে আপনারা এগিয়ে আসেন, আমাদের পরামর্শ দেন। কারণ জার্মানি, জাপানসহ আরও অনেক দেশে দক্ষ নারী শ্রমিক পাঠানো প্রয়োজন।
বৃহস্পতিবার (২১ এপ্রিল) রাজধানীর প্রবাসী কল্যাণ ভবনে বিজয় একাত্তর হলে সেন্টার ফর উইম্যান অ্যান্ড চিলড্রেন স্টাডিজ আয়োজিত এক মোর্চা গঠন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন, গ্লোবাল এফেয়ার্স কানাডা এবং সহযোগী নারী অধিকার সংগঠন সেন্টার ফর উইম্যান অ্যান্ড চিলড্রেন স্টাডিজ রিটার্নি নারী অভিবাসী কর্মী/শ্রমিকদের নিয়ে 'নারী অভিবাসীদের সম্মিলিত কণ্ঠস্বর' নামে এই মোর্চা গঠন করে।
বিজ্ঞাপন
নারী অধিকারভিত্তিক ২২টি সংস্থা নিয়ে গঠিত এই মোর্চা কাজ করবে বৈদেশিক অভিবাসনের ক্ষেত্রে নারী অভিবাসীদের শারীরিক, মানসিক, আর্থিক ও যৌন নির্যাতনসহ বিভিন্ন ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের হাত থেকে মুক্ত করার জন্য।
ইমরান আহমেদ বলেন, এই জোট বা মোর্চা আমাদের মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করলে আমরা মেয়েদের দক্ষ ও শিক্ষিত কর্মশক্তিতে রূপান্তরিত করতে পারব এবং নিরাপদ অভিবাসনের পথে এগিয়ে নিতে পারব। কারণ অভিবাসী নারী কর্মী হতে পারে এ দেশের অর্থনীতির আরেকটি গেইম চেঞ্জার। আপনারা যারা অভিবাসী কর্মীদের নিয়ে কাজ করছেন, যেকোনো বিষয়ে আপনারা মন্ত্রণালয়ে এসে আমাদের সঙ্গে কথা বলেন। আপনার তৃণমূল পর্যায়ে কাজ করছেন, কাজেই সচেতনতা বাড়াতে হবে তাদের, যারা নিরক্ষর, অদক্ষ এবং চোখ বন্ধ করে দালালদের কথা বিশ্বাস করে বিদেশে চলে যান।
প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব মুনিরাস সালেহীন বলেন, প্রবাসীদের কল্যাণের জন্য আমরা সবাই ক্যাটালিস্ট হিসেবে কাজ করি। এর সঙ্গে আপনারাও আছেন। এখানে এসে দেখছি অনেক সংস্থা বিচ্ছিন্নভাবে একই উদ্দেশ্যে কাজ করছে। আমাদের উচিত এক প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে সমন্বিতভাবে কাজ করা। অভিবাসনের ক্ষেত্রে দক্ষতা অর্জনের কোনো বিকল্প নেই।
অনুষ্ঠানে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম বলেন, দারিদ্র্য থেকে মুক্তি, অধিক উপার্জনের পথ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এরপরেও আমাদের মেয়েরা কর্মসংস্থানের জন্য বৈদেশিক অভিবাসনকে বেছে নিচ্ছেন, এটা খুশির খবর। ২০২১ সালে দেখা বাংলাদেশের মোট অভিবাসী কর্মশক্তির ১৩ শতাংশই ছিল নারী অভিবাসী। এটা কিন্তু বড় একটা সংখ্যা।
তিনি আরও বলেন, আমরা কোনভাবেই চাই না নারী অভিবাসন বন্ধ হোক। শুধু চাই নারীর এই অভিবাসন যেন তাকে আরও কঠিন কঠোর অবস্থার দিকে ঠেলে না দেয়। দুর্ভাগ্যবশত আমরা দেখছি অনেকক্ষেত্রেই নারী অভিবাসীদের নিরাপদ অভিবাসন হচ্ছে না, যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছেন, কপর্দকহীন হয়ে দেশে আসছেন, কম মজুরি পাচ্ছেন, দীর্ঘসময় কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন ইত্যাদি। আমরা এইসব ইস্যু নিয়ে কাজ করেছি এবং করছি এবং সরকারের সাথে আরও কাজ করতে চাই। আমরা চাই অভিবাসনে ইচ্ছুক কর্মীদের দক্ষতা বাড়ুক।
সেন্টার ফর উম্যান অ্যান্ড চিলড্রেন স্টাডিজের নির্বাহী প্রধান প্রফেসার ইশরাত শামীম বলেন, যেহেতু প্রতিবছরই সম্ভাব্য নারী অভিবাসীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েই যাচ্ছে, তাই সময় এসেছে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সরকার, নিয়োগকর্তা, নিয়োগকারী সংস্থা, বিভিন্ন সেবা প্রদানকারী সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের নারী অভিবাসীদের অধিকার আদায় এবং তাদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য একত্রিতভাবে কাজ করার।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন কানাডিয়ান হাই কমিশনের গ্লোবাল এফেয়ার্স কানাডার ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসিসটেন্স প্রোগ্রাম অ্যাডভাইজার ফাহমিদা ওয়াহাব।
এমএইচএন/এসকেডি