নিউ মার্কেটে সংঘর্ষে আহত মোরসালিনের মৃত্যু
ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিউ মার্কেটের দোকানকর্মীদের দফায় দফায় সংঘর্ষের সময় আহত মোরসালিন (২৬) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। তিনি একটি দোকানের কর্মচারী ছিলেন। এই নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনায় দুই জনের মৃত্যু হলো।
বৃহস্পতিবার (২১ এপ্রিল) ভোর ৫টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) তিনি মারা যান।
বিজ্ঞাপন
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া।
তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, নিউ মার্কেটে সংঘর্ষের ঘটনায় মোরসালিন নামে এক যুবক আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে এসেছিল। আজ ভোরে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালে সে লাইফ সাপোর্টে ছিল।
নিহত মোরসালিনের বড় ভাই নূর মোহাম্মদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার ভাই মার্কেটে একটি রেডিমেট দোকানে কর্মচারী হিসেবে কাজ করত। মঙ্গলবার সকালে সংঘর্ষের সময় আমার ভাই গুরুতর আহত হয়। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসা হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে তাকে জরুরি বিভাগে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। পরে সেখান থেকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। আজ ভোরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আমার ভাই মারা যায়।
মোরসালিন আমার ছোট ভাই, সে কামরাঙ্গীরচর থানার পশ্চিম রসুলপুর এলাকায় থাকত বলেও জানান বড় ভাই নূর মোহাম্মদ।
এর আগে সংঘর্ষের ঘটনায় আহত নাহিদ (১৮) নামে এক তরুণ চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার রাত ৯টা ৪০ মিনিটে মারা যান। তিনি একটি কুরিয়ার সার্ভিসের কর্মী ছিলেন। এছাড়া ঢাকা কলেজের এক শিক্ষার্থী আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভর্তি আছেন রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে।
গত সোমবার রাত ১২টার দিকে রাজধানীর নিউ মার্কেট এলাকায় ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে চলা এ সংঘর্ষে কয়েকজন শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ী আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এসময় আহত হন বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্যও।
মঙ্গলবার সকালে আবারও সংঘর্ষে জড়ান শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীরা। মুখোমুখি অবস্থান নিয়ে তারা ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকেন। ছাত্রদের অনেকে হেলমেট পরে এবং লাঠি হাতে নিয়ে সংঘর্ষে জড়ান। ব্যবসায়ী-কর্মচারীরাও লাঠিসোটা ও লোহার রড নিয়ে ছাত্রদের ওপর হামলা চালানো শুরু করেন।
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এ সংঘর্ষ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে গোটা নিউ মার্কেট ও সায়েন্সল্যাব এলাকায়। থেমে থেমে সারাদিন চলে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। এতে শতাধিক শিক্ষার্থী এবং প্রায় অর্ধশত ব্যবসায়ী-কর্মচারী আহত হন। দুই শিক্ষার্থীসহ বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হন।
সংঘর্ষের রেশ চলে বুধবার দিনভর। দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরেন ব্যবসায়ীরা। বিকেলে ব্যবসায়ীদের বক্তব্য প্রত্যাখান করে শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নামেন। এরপর রাতে তারা সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের ‘প্রশ্নবিদ্ধ’ ভূমিকায় সংশ্লিষ্ট ডিসি, এডিসি ও নিউ মার্কেট থানার ওসির প্রত্যাহারসহ ১০ দফা দাবি জানান।
এসএএ/জেডএস