পুরোনো ভোটারদের ‘তথ্য ঘাটতি’, আবেদন করলেই পাবেন স্মার্টকার্ড
ভোটারদের স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র দিচ্ছে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ। কিন্তু শুরুর দিকের ভোটার হয়ে এখনও অনেকেই স্মার্টকার্ড পাননি। পুরোনো ভোটারদের স্মার্টকার্ড না পাওয়ার কারণ হিসেবে বেশির ভাগেরই ডাটাবেজে ঠিকানায় গলদ আছে বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। এক্ষেত্রে যারা ২০০৮ সালের ভোটার হয়েও এখনও স্মার্টকার্ড পাননি তাদের এনআইডি’র তথ্য পূরণ করতে এনআইডি কর্তৃপক্ষ আবেদনের সুযোগ দিচ্ছে। নাগরিকরা আবেদনের মাধ্যমেই সহজেই তাদের সমস্যা সমাধান করতে পারবেন।
ইসি সংশ্লিষ্টরা জানান, নাগরিকদের এনআইডি ডাটাবেজে স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রের মাধ্যমে কার্ডের ভেতর ভোটারদের তথ্য সন্নিবেশ করা হয়। এক্ষেত্রে সফটওয়্যারে তথ্যের সংখ্যা নির্দিষ্ট করে দেওয়া আছে। কোনো ব্যক্তির এনআইডি তথ্যে বা ভোটার হওয়ার ফরমে ওই নির্দিষ্ট সংখ্যক তথ্যের ঘাটতি থাকলে তার ক্ষেত্রে ‘ডাটা নট ফাউন্ড’ দেখায়।
বিজ্ঞাপন
কর্মকর্তারা আরও জানায়, স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্রের শুরুর দিকে ডাটাবেজে ১৮টি তথ্য সুনির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এতে তথ্যে গলদ থাকায় বিরাট সংখ্যক নাগরিকের স্মার্টকার্ড প্রিন্ট করা যাচ্ছিল না। এ সমস্যা সমাধানে ডাটাবেজ থেকে তথ্য কমিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু তথ্য কমিয়ে দিয়েও এ সমস্যা সমাধান করা সম্ভব হচ্ছে না। এখনও ডাটাবেজে তথ্যে ঘাটতি রয়েছে বলে চিহ্নিত করেছে এনআইডি কর্তৃপক্ষ।
ফলে এখনও যেসব নাগরিক স্মার্টকার্ড পাননি তাদের বেশির ভাগেরই ঠিকানায় ঘাটতি রয়েছে। বিশেষ করে উপজেলার নাম নেই অনেকের। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট নাগরিক আবেদন করলেই কেবল সমস্যার সমাধান পাবেন।
সম্প্রতি মাঠ পর্যায় থেকে নির্ধারিত ফরমে এ সংক্রান্ত আবেদন প্রাপ্তি সাপেক্ষে এনআইডি উইং থেকে ডাটা কমপ্লিট করে কারিগরি অধিশাখার সহায়তায় ডাটাবেজ আপডেট করা হয়। এ বিশেষ কাজের জন্য এনআইডি উইংয়ের তিন জন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০০৭-২০০৮ সালে ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা কার্যক্রম হাতে নেয় নির্বাচন কমিশন। সেই সময় ৯ কোটি ভোটারের ডাটাবেজ তৈরি করা হয়। এরপর ২০১১ সালে এটিএম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় আইডিইএ প্রকল্প হাতে নেয়। যে প্রকল্পের মাধ্যমে ২০১৬ সাল থেকে শুরু হয় স্মার্টকার্ড বিতরণ।
প্রকল্পটি শেষ হলে ২০২১ সালে হাতে নেওয়া হয় আইডিইএ-২ নামের একটি নতুন প্রকল্প। এ প্রকল্প নেওয়া হয়েছে সরকারি তহবিল থেকে। ২০২৫ সালের মধ্যে প্রায় ১৫ কোটি নাগরিককে এর আওতায় দেওয়া হবে স্মার্টকার্ড। বিতরণ শুরু পর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ছয় কোটির মতো স্মার্টকার্ড প্রিন্ট করেছে ইসি। এর মধ্যে সাড়ে পাঁচ কোটির মতো স্মার্টকার্ড বিতরণ করা হয়েছে।
দেশে বর্তমানে ১১ কোটি ৩২ লাখ ৮৭ হাজার ১০ জন ভোটার রয়েছে। এর মধ্যে ৫ কোটি ৭৬ লাখ ৮৯ হাজার ৫২৯ জন পুরুষ, ৫ কোটি ৫৫ লাখ ৯৭ হাজার ২৭ জন নারী ভোটার এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার আছেন ৪৫৪ জন।
এসআর/এসএসএইচ