ঢাকার সমস্যা সমাধানে সমন্বিত পদক্ষেপ জরুরি
সমন্বিত পদক্ষেপ না নিলে ঢাকার সমস্যা সমাধান হবে না, তাই সমস্যা সমাধানে সমন্বিত পদক্ষেপ জরুরি বলে মত দিয়েছেন আলোচকরা।
সোমবার (১১ এপ্রিল) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে ঢাকা ইউটিলিটি রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন-ডুরা আয়োজিত ‘অসহনীয় যানজট : সমাধান কী’ শীর্ষক সংলাপে আলোচকরা এ মত দেন।
বিজ্ঞাপন
ডুরার সভাপতি রুহুল আমিনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শাহেদ শফিকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন পরিবহন বিশেষজ্ঞ বুয়েটের অধ্যাপক ড. মো. শামসুল হক। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। এছাড়া বক্তব্য রাখেন ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, নগর পরিকল্পনাবিদ স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন, নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন, ড্যাপের প্রকল্প পরিচালক আশরাফুল ইসলাম, ট্রাফিক প্ল্যানার আসাদুর রহমান মোল্লা, ঢাকা পরিবহন মালিক সমিতির কার্যকরী সভাপতি আবুল কালাম।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, যানজট নিরসনে রাস্তায় বিভিন্ন দোকানপাট বসানো এবং যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং বন্ধ করতে হবে। রাজধানীর অধিকাংশ জায়গায় দেখা যায় রাস্তা দখল করে দোকান-পাট বসানো হয়েছে। রাস্তার উপরে গাড়ি পার্কিং করে রাখা হয়। যা ট্রাফিক জ্যামের অন্যতম কারণ। যারা রাস্তার উপরে গাড়ি রাখবে তাদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নিতে হবে। এ ব্যাপারে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও কঠোর হতে হবে।
ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত বলেন, সমন্বিত পদক্ষেপ না নিলে ঢাকার সমস্যা কখনোই সমাধান হবে না। ট্রাফিক আইন বাস্তবায়ন করা জরুরি। লাখ লাখ রিকশা দিয়ে আধুনিক নগরী চিন্তা করা যায় না। গণপরিবহণ নিয়ে ভাবতে হবে। একটা স্কুলে এক হাজার শিক্ষার্থী হলে এক হাজার গাড়ি বের হচ্ছে। নিরাপদ সড়ক নিয়ে যখন বাচ্চারা আন্দোলন করছিল তখন দেখেছি ট্রাফিক সিস্টেম ভালো চলেছে কারণ তারা ট্রাফিক না মানাদের ধরেছে। তারা জবাবদিহিতার আওতায় নিয়ে এসেছিল। জবাবদিহিতার আওতায় আনা গেলে যানজট অর্ধেক কমে যাবে।
ড. শামসুল হক বলেন, ঢাকায় অনেক মেগাপ্রজেক্ট করা হলেও সঠিক পরিকল্পনার অভাবে সেগুলো কোনো কাজে আসেনি। আমি অনেক বিনিয়োগ করতে পারি, কিন্তু রাস্তা ঠিক নাই, ভূমি ব্যবহারের কোনো পথ আমরা রাখিনি। সে কারণে এসব প্রকল্পের সুফল পাচ্ছি না। সমস্যা সমাধানে গণপরিবহনের অবকাঠামো বানাতে হবে, কোনোভাবেই ব্যক্তিগত গাড়ির জন্য নয়। ফ্রাঞ্চাইজির আওতায় এসব বাস চালাতে হবে।
আমাদের পথ খোলা আছে সফল যারা হয়েছে তাদের পথে হাঁটলে গণপরিবহনের জোর দিয়ে যদি আমরা আমাদের উন্নয়ন কাজ করি তাহলে সমাধান সম্ভব।
স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন বলেন, বেইলি রোডে সচিবদের জন্য আবাসন করা হয়েছে। সেখান থেকে প্রতিদিন সকালে একসঙ্গে ১১৪ জন সচিব-অতিরিক্ত সচিব গাড়ি নিয়ে বের হন। সচিবদের যদি বিশ্বমানের অত্যাধুনিক বাস বা মিনিবাসে করে সচিবালয়ে নিয়ে আসেন তাহলে এসব গাড়ি রাস্তায় বের হবে না।
ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ঢাকায় যানজট সমস্যার সমাধানে কেউ দায়িত্ব নিচ্ছে না। চাইলে এখনও যানজট নিরসন করা সম্ভব। নারায়ণগঞ্জের পুলিশ শহর যানজটমুক্ত ঘোষণা দেয়ার মাত্র কয়েকদিনের মাথায় অবৈধ গাড়ি পার্কিং, ফুটপাত দখলমুক্ত করেছেন। সেখানে এখন যানজট হয় না। এইভাবে কাউকে না কাউকে দায়িত্ব নিতে হবে।
এএসএস/আইএসএইচ