জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে গৃহহীন পরিবারের জন্য ৪০০টি ঘর নির্মাণ করেছে বাংলাদেশ পুলিশ। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ৫২০টি ঘর নির্মাণের কার্যক্রমের অংশ হিসেবে এ ৪০০টি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে।

রোববার (১০ এপ্রিল) দুপুরে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সের অডিটোরিয়ামে প্রতিটি থানা এলাকায় গৃহহীন পরিবারের জন্য একটি গৃহ নির্মাণ এবং নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী সার্ভিস ডেস্ক উদ্বোধন অনুষ্ঠানে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ এসব তথ্য জানান।

প্রধান অতিথি হিসেবে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। এছাড়া অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, আমরা বিশ্বাস করি বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে কল্যাণকর ও মানবিক কার্যক্রমের মাধ্যমে বাংলাদেশ পুলিশ তার প্রতি যথাযথ শ্রদ্ধা জানাতে সক্ষম হবে। বঙ্গবন্ধুর দর্শনে উজ্জীবিত হয়ে মুজিববর্ষে দেশের প্রতিটি থানায় নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীদের জন্য আলাদা ডেস্ক স্থাপন করা হয়েছে। এই আলাদা ডেস্কে নারী পুলিশ সদস্যরা অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের একটি মানুষও গৃহহীন থাকবে না। আপনার (প্রধানমন্ত্রী) এই দৃঢ় প্রত্যয় ও উদ্যোগ জাতির পিতার সূচিত গৃহায়ন কর্মসূচিরই আধুনিক ও সময়োপযোগী এক পদক্ষেপ। আপনার (প্রধানমন্ত্রী) এই কর্মসূচির সঙ্গে একাত্ম হয়ে বাংলাদেশ পুলিশ মুজিববর্ষ উপলক্ষে আপনার নির্দেশনায় এই গৃহ নির্মাণ কার্যক্রম গ্রহণ করে।

তিনি আরও বলেন, মুজিববর্ষে গৃহহীন মানুষদের জন্য গৃহ নির্মাণ করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ পুলিশ এই প্রকল্প গ্রহণ করে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সারা দেশে ৫২০টি থানায় একটি করে গৃহহীন পরিবারকে গৃহ নির্মাণ করে দেওয়ার কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ৪০০টি গৃহ নির্মাণ করা হয়েছে। উন্নত নির্মাণ সামগ্রী ও স্থাপত্য কৌশল ব্যবহার করা হয়েছে গৃহগুলো নির্মাণ করার ক্ষেত্রে। বাড়িগুলো নির্মাণ করার ক্ষেত্রে যে নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে তা ইউরোপে স্বল্পব্যয়ে নির্মিত গৃহে ব্যবহার করা হয়। প্রতিটি বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বাড়িগুলো ভূমিকম্প প্রতিরোধক ও ফায়ার রেজিস্ট্যান্স। আমরা মনে করি, একটি পরিবারকে আত্মপ্রত্যয়ী হিসেবে গড়ে তোলার প্রথম সোপান এটি।

এ সময় আইজিপি প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে বলেন, আপনার প্রাজ্ঞ ও দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ সফলতার গল্প গাঁথা নির্মাণ করে যাচ্ছে। দেশ একদিকে ধারাবাহিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করে যাচ্ছে, অন্যদিকে উন্নয়নের মূলধারায় সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণে উন্নয়নের বিস্ময় হিসেবে বিশ্ব পরিমণ্ডলে পরিচিতি লাভ করেছে। আপনার সরকারের গৃহীত উদ্যোগে দেশে আজ শিক্ষা-স্বাস্থ্য ও জেন্ডার সমতার মতো সব বিষয়ে অভূতপূর্ব উন্নতি হয়েছে। বাংলাদেশ আজ বিশ্বের দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশে পরিণত হয়েছে। আপনার নেতৃত্বে আগামী ২০৩০ সালে বাংলাদেশে এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ও ২০৪১ সালে উন্নত দেশ হিসেবে পরিণত হবে।

ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, বাংলাদেশ পুলিশ সরকার কর্তৃক গৃহীত উন্নয়নের মহাযজ্ঞে অংশীদার হওয়ার জন্য উদ্ভাবনী কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। আমরা বিশ্বাস করি মুজিববর্ষ উপলক্ষে দেশের প্রতিটি থানায় নারীদের জন্য আমাদের সার্ভিস ডেস্ক নির্মাণ ও গৃহহীনদের জন্য গৃহ নির্মাণ বঙ্গবন্ধুর কাঙ্ক্ষিত জনগণের পুলিশ হয়ে তার স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মাণে কাজ করতে অনুপ্রাণিত করবে।

এমএসি/এসএসএইচ