ওয়াসার পানির সঙ্গে ডায়রিয়ার সম্পৃক্ততা নেই, দাবি এমডির
ওয়াসার পানির সঙ্গে ডায়রিয়ার কোনো সম্পৃক্ততা নেই বলে দাবি করেছেন ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী তাকসিম এ খান।
মঙ্গলবার (৫ এপ্রিল) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে ঢাকা ইউটিলিটি রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ডুরা) আয়োজিত 'নগরবাসীর চাহিদ-ঢাকা ওয়াসার সক্ষমতা' শীর্ষক সংলাপে তিনি এ দাবি করেন।
বিজ্ঞাপন
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে রাজধানীতে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআর,বি) হাসপাতালে প্রায় প্রতিদিনই হাজারের বেশি রোগী ভর্তি হচ্ছেন। এ অবস্থায় গরম বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি ওয়াসার লাইনে আসা পানির মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রাজধানীবাসী।
তাকসিম এ খান বলেন, আইসিডিডিআর,বির সঙ্গে আমাদের ঘনঘন যোগাযোগ আছে। তারা যখনই ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়ে যাওয়া তখনই ১০টি এলাকার ঠিকানা আমাদের দেয়, সঙ্গে সঙ্গে আমরা ওইসব এলাকার পানি ল্যাবে টেস্ট করাই। সেই ল্যাব টেস্টে আমরা কোনো ব্যাকটেরিয়া পাইনি। বিষয়টি সঙ্গে সঙ্গে আইসিডিডিআরবিকে জানিয়েছি।
তিনি বলেন, পানিতে যদিওবা কোনো জীবাণু থাকে, সেটি যাতে মরে যায় বা ধ্বংস হয়ে যায় সেজন্য ক্লোরিন দিয়ে থাকি। অনেক সময় ক্লোরিন শেষ মাথা পর্যন্ত যায় না। কিন্তু আমরা ওই বিশেষ স্থানগুলোতে ক্লোরিন বাড়িয়ে দিয়েছি। এই ডায়রিয়ার সঙ্গে আমাদের ল্যাব টেস্টের মাধ্যমে যা পেয়েছি, তাতে কোনো সম্পৃক্ততা সরাসরি নেই।
ওয়াসার এমডি বলেন, পানি খুবই প্রয়োজনীয়। জীবনধারণের অংশ হচ্ছে পানি। পৃথিবীতে প্রায় ২ বিলিয়ন মানুষ খাওয়ার পানি থেকে বঞ্চিত। কাজেই আমরা সেই বিলিয়ন মানুষের বাইরে আছি। পৃথিবীতে যদি আবারও কোনো সংঘাত হয়, তাহলে এই সংঘাত পানি নিয়েই হবে। তেল আর গ্যাসের থেকে সবচেয়ে বেশি সমস্যা হয় পানি নিয়ে। পৃথিবীর বহু দেশের রাজধানী পানির অভাবে পরিবর্তন করা হয়েছে। আমাদের এখানে অনেক বড় বড় চ্যালেঞ্জ আছে। পানিরও চ্যালেঞ্জ রয়েছে। সেই চ্যালেঞ্জ আমরা আংশিক হলেও সমাধান করতে পেরেছি। সাউথ এশিয়ায় পানির সূচকে আমরা অনেক ভালো অবস্থানে আছি।
পানির জন্য আগের মতো হাহাকার নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ২০১৩ সালের জানুয়ারি থেকে চাহিদার তুলনায় আমরা বেশি পানি উৎপাদনের সক্ষমতা অর্জন করেছেন। কাজেই ঢাকা শহরে পানির হাহাকার বা অভাব এখন নেই। আমরা সবাইকে পানি দিতে পারছি। এখন ২৪ ঘণ্টা পানি আছে। দিন শেষে আমাদের কিছু প্যাকেট লস হয়।
এক প্রশ্নের জবাবে ওয়াসার এমডি বলেন, ওয়াসা যেই পরিমাণ পানি উৎপাদন করে, সেই পরিমাণ পানি গ্রাহকের কাছে যায়। আমাদের পাঁচ থেকে ছয় শতাংশ সিস্টেম লস আছে, যা খুবই নগণ্য। কিন্তু রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি দেখলেই সাধারণ মানুষ মনে করেন, এটা ওয়াসার লাইন।
পানি ফুটিয়ে পান করার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তাকসিম এ খান বলেন, ওয়াসার পানি নিরাপদে ট্যাংকি পর্যন্ত দেওয়ার দায়িত্ব আমাদের। বাসার লাইন পর্যন্ত নেওয়ার দায়িত্ব আমাদের না। সেজন্য আমরা বলব আপনারা পানি ফুটিয়ে খান। এছাড়া পানিতে কোনো সমস্যা হলে- আমরা তিন স্থান থেকে পানি নিয়ে পরীক্ষা করি। একটা হচ্ছে আমাদের পাম্প, দ্বিতীয় হচ্ছে যে এলাকায় সমস্যা ওই এলাকার লাইন, আর তৃতীয় হচ্ছে বাসার লাইন থেকে।
পানির দাম বাড়ানোর বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পানির দাম বাড়ানোর বিষয়ে সবকিছু আমরা জানিয়েছি, এখন সিদ্ধান্ত নেবে সরকার।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ডুরা সভাপতি রুহুল আমিন, সাধারণ সম্পাদক শাহেদ শফিক প্রমুখ।
এমএইচএন/জেডএস