নীতিগতভাবে অভিন্ন হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সুসম্পর্ক তৈরি হওয়ার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে বলে মনে করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। রোববার যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মত ব্যক্ত করেন।

মোমেন বলেন, আমেরিকার সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক খুব গভীর। আমরা চাই, সুসম্পর্ক আরও গভীর করতে। আমাদের ভ্যালুস সমান। নীতিগতভাবে আমরা অভিন্ন। তারা যা চায়, আমরাও তাই চাই। আমরা সন্ত্রাস চাই না, তারাও সন্ত্রাস চায় না। আমরা মানবপাচার কমাতে চাই, তারাও তা চায়। আমরা ড্রাগ ট্রাফিকিং কমাতে চাই, তারাও চায়। আমরা চাই গণতন্ত্র, তারাও চায়।

তিনি বলেন, আমাদের দেশে গত কয়েক বছরে অত্যন্ত সুষ্ঠু গণতন্ত্র রয়েছে। তবে গণতন্ত্র সব দেশে সমান নয়। আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাসী, আমাদের স্বাধীনতা আছে। আমাদের হিউম্যান রাইটস ভ্যালুস আছে। তারাও এটাতে বিশ্বাস করে। তাদের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্ক হওয়ার যথেষ্ট সুযোগ আছে। আমরা সেগুলোই বলব। আমাদের রাজনৈতিক সম্পর্ক ভালো। তবে আরও ভালো হওয়ার সম্ভাবনা আছে। আমরা এসব বিষয়ে তাদের উৎসাহিত করব।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাইডেন প্রশাসন ক্ষমতায় আসার পর দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে প্রথমবারের মতো সশরীরে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসছেন ড. মোমেন। ঢাকা-ওয়াশিংটনের কূটনৈতিক সম্পর্কের সুবর্ণজয়ন্তীর দিনে সোমবার (৪ এপ্রিল) যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব স্টেটে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হবে।

বৈঠকে আলোচনা প্রসঙ্গে মোমেন বলেন, গত কয়েক বছরে আমরা অনেক উন্নতি করছি। আমাদের দেশে অনেক অনেক সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। আমরা আগামী কয়েক বছরের মধ্যে একটা বড় অর্থনীতির দেশ হব। আমরা তাদের বলব, আপনারা আমাদের উন্নয়ন সহযোগী হোন। গত ৫০ বছর আপনারা আমাদের সঙ্গে ছিলেন। আগামী ৫০ বছরে আমরা চাই আপনারা আমাদের সঙ্গে থাকুন। আমাদের দেশে যেসব সুযোগ আছে সেগুলো গ্রহণ করুন।

তিনি বলেন, আমরা চাই যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে বিনিয়োগ করুক। আমরা বিরাট সমুদ্র একটা খুলে দিয়েছি। আপনারা আসুন। আমাদের এখানে তাদের বিনিয়োগের ৯০ ভাগ এনার্জি অ্যান্ড ইলেকট্রনিক সেক্টরে। আমরা চাই, তারা ফার্মাসিউটিক্যালস ও আইটিতে ইনভেস্ট করুক। আমাদের তৈরি পোশাক খাতে তাদের ট্যারিফটা তুলে নিক। এতে তাদের ক্রেতারা উপকৃত হবে।

যুক্তরাষ্ট্র অবস্থানরত বঙ্গবন্ধুর খুনি রাশেদ চৌধুরীকে এখনো বাংলাদেশে ফেরত না পাঠানোয় উষ্মা প্রকাশ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমরা চাই সুশাসন। আমরা আইনের শাসন চাই। একজন খুনি এ রকম একটা সুন্দর দেশে আশ্রয় নিয়েছে। আমরা যে আইনের শাসন চাই, সুশাসন চাই, সেখানে একজন লোকের কারণে তা ব্যাঘাত হচ্ছে। আমরা আশা করব, ২০০৭ সালে যেভাবে তারা একজন খুনিকে আমাদের দেশে ফেরত দিয়েছিল সেভাবে আরেকজন খুনিকে যেন তারা ফেরত দেয়। আমরা তাদের বলব। তাতে আমরা তাদের উদ্দেশ্য অর্থাৎ সুশাসন ও রুল অব ল অর্জন করতে পারব।

র‌্যাবের বিরুদ্ধে দেওয়া মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়টি আলোচনায় তোলা হবে কি না- জানতে চাইলে ড. মোমেন বলেন, অবশ্যই তুলব।

এনআই/আরএইচ