টাকা ছাড়াই চাল মেলে ডোনেট বক্সে
‘যাদের সামর্থ্য আছে, তারা ডোনেট বক্সে চাল রাখবেন। আর যাদের চাল কেনার টাকা নেই তারা ডোনেট বক্স থেকে চাল নিতে পারবেন।’ ছোট একটি ব্যানারে এমন লেখার নিচে স্থাপন করা হয়েছে ‘চাউল ডোনেট বক্স’। চট্টগ্রামের গরীবুল্লাহ হাউজিং সোসাইটির একটি মোদি দোকানের সামনে চাল ডোনেট বক্স স্থাপন করেছেন মুসাইদাহ নামের একটি সংগঠন ও ব্যবসায়ী কায়সার আলী চৌধুরী।
সোমবার (৪ এপ্রিল) থেকে এই চাল ডোনেট বক্স স্থাপন করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
উদ্যোক্তারা বলেন, চাল ডোনেট বক্সে প্রতিদিন তাদের পক্ষ থেকে ৩০ কেজি চাল রাখা হবে। সেখান থেকে ছোট ফ্যামিলি হাফ কেজি চালের প্যাকেট ও বড় ফ্যামিলি হলে এক কেজি চাল বিনা খরচে নিতে পারবেন। আমাদের আশা সমাজের বিত্তশালীরা ডোনেট বক্সে চাল রেখে যাবেন। আর যাদের চাল কিনতে কষ্ট হয় তারা বিনে পয়সায় এখান থেকে চাল নিতে পারবেন।
স্থানীয় সংগঠন ‘মুসাইদাহ’ এর উদ্যোক্তা মো. আবু হাসান ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিভিন্ন জনের সহযোগিতায় আগে বিভিন্ন এলাকায় ৩০টি সবজি ডোনেট বক্স বসিয়েছি। এ উদ্যোগের ফলে দোকানের বাইরে রাখা প্লাস্টিকের ক্যারেট বক্সে ক্রেতারা সাধ্যমতো সবজি রেখে যাচ্ছেন। আর যাদের সামর্থ্য নেই তারা নিচ্ছেন প্রয়োজন মতো। এ উদ্যোগ সাড়া ফেলেছে চট্টগ্রামে। এখান থেকে সবজি নিতে আসা অনেকেই চাল খোঁজেন। তাই রমজান মাস উপলক্ষে প্রথমে গরীবুল্লাহ হাউজিং সোসাইটির বাজারে একটি চাল ডোনেট বক্স স্থাপন করেছি ।
তিনি বলেন, পুরো রমজান মাস আমাদের কার্যক্রম চলবে। প্রথমে আমি ও কায়সার চৌধুরী মিলে ৩০ কেজি চাল ডোনেট বক্সে রাখছি। এভাবে আমাদের দুইজনের পক্ষ থেকে প্রতিদিন ৩০ কেজি চাল রাখা হবে। এছাড়া বাজারে আসা যে কেউ ডোনেট বক্সে চাল রাখতে পারবেন। আশা করি অনেকেই এগিয়ে আসবেন।
মো. আবু হাসান বলেন, আজ (সোমবার) থেকে চাল ডোনেট বক্সে রাখা হয়েছে। আশা করছি সবজি ডোনেট বক্সে মানুষ যেভাবে সেচ্ছায় সবজি রাখছেন, চাল ডোনেট বক্সেও চাল রাখবেন। এখান থেকে অসহায় পরিবারগুলো বিনামূল্যে চাল নিতে পারে। যাদের ছোট পরিবার তারা হাফ কেজি চালের প্যাকেট ও বড় পরিবার হলে প্রতিদিন এক কেজি চালের প্যাকেট বিনামূল্যে নিতে পারছেন।
তিনি আরও বলেন, যে দোকানের সামনে চাল ডোনেট বক্স স্থাপন করা হয়েছে, তিনিই বক্সটির রক্ষণাবেক্ষণ করবেন।
এ উদ্যোক্তা বলেন, আগামী সপ্তাহ থেকে ডোনেট বক্সে তেল, ডাল রাখার পরিকল্পনা আছে। আমাদের সব খরচ বহন করার সাধ্য নেই। এ ব্যাপারে একজন সাহায্য করার আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি যদি সহযোগিতা করেন, তাহলে আশা করছি যাদের সামর্থ্য নেই তারা চালের সঙ্গে তেলও নিতে পারবেন।
চাল ডোনেট বক্স থেকে চাল নেওয়া রমিজ উদ্দিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, বক্স থেকে এক বেলা খেতে পারব এমন পরিমাণে চাল নিয়েছি। যারা আমাদের একবেলা ভাতের ব্যবস্থা করেছেন তাদের জন্য দোয়া করি।
এর আগে গত ৯ মার্চ চট্টগ্রাম নগরীর খুলশী থানার শাহ গরীবুল্লাহ হাউজিং সোসাইটির কাঁচাবাজারে প্রথম সবজির ডোনেট বক্স স্থাপন করা হয়। সাড়া পেয়ে ধাপে ধাপে চকবাজার, পূর্ব বাকলিয়া, কামাল বাজার, মোহরা, হাটহাজারীর মদুনাঘাট, নজুমিয়া হাট, সাবান ঘাটা, রাহাত্তারপুল, কালামিয়ার বাজারসহ চট্টগ্রামের ৩০টি স্থানে সবজি ডোনেট বক্স চালু করা হয়।
কেএম/আইএসএইচ