চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে অসুস্থ হয়ে দুই হাজতির মৃত্যু হয়েছে। তাদের নাম রফিক উদ্দীন (৫৪) ও বাবুল মিয়া (৩৪)।

সোমবার (৪ এপ্রিল) ভোরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক ঘণ্টার ব্যবধানে এ দুই হাজতির মৃত্যু হয়। চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার দেওয়ান মো. তারিকুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, মারামারির মামলায় রফিক গত ২৭ মার্চ কারাগারে আসেন। আর মাদক মামলায় গত বছরের ১৮ নভেম্বর বাবুলকে কারাগারে পাঠানো হয়।

কারাগার ও চমেক সূত্রে জানা গেছে, রফিকের হাজতি নং (৫৫৬৭/২২)। হঠাৎ অসুস্থতা অনুভব করলে ভোর ৫টার দিকে তাকে চমেক হাসপাতালে নিয়ে আসেন কারারক্ষীরা। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ১২ নম্বর ওয়ার্ডে পাঠান। পরে ৫টা ৩৭ মিনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। রফিকের বাড়ি চন্দনাইশের ধোপাছড়ি ইউনিয়নে।

রফিকের বড় ভাই জামাল উদ্দিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, গত ২৬ মার্চ চন্দনাইশের চিড়িংঘাটা এলাকায় রফিকের ওপর হামলা করে স্থানীয় সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় তিনি আহত হোন। পরে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি। উল্টো রফিককে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায়।

জামাল অভিযোগ করেন, সন্ত্রাসীদের হামলায় আহত রফিককে চিকিৎসা না দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। সেখানে বেশি অসুস্থ হয়ে তার মৃত্যু হয়েছে। রফিককে থানায়ও নির্যাতন করা হয়।

এদিকে রফিকের পরিবারের অভিযোগ অস্বীকার করে চন্দনাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, রফিকের মামলাও নেওয়া হয়েছে। রফিকের সঙ্গে একটি পক্ষের দীর্ঘদিন জায়গা জমি নিয়ে বিরোধ ছিল। গত ২৬ তারিখ একটি মারামারি ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মামলা হয়, যেখানে আসামি ছিল রফিক। তাকে মারামারি মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। সকালে জেলখানা থেকে খবর পাই রফিক হার্ট অ্যাটাক করে হাসপাতালে মারা গেছেন।

তিনি বলেন, এখন ময়নাতদন্ত করা হবে। সে পরিপ্রেক্ষিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আসামিকে থানায় মারধর করার কোনো সুযোগ নেই বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার বলেন, রফিক হামলায় আহত হয়েছিলেন কি না বিষয়টি জানা নেই। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পরে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।

অপরদিকে, বাবুল রোজা রাখার জন্য ভোরে সেহেরি খেয়েছিলেন। হঠাৎ করে বুকে ব্যথা অনুভব করলে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেলের জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয়। জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক সোয়া ৬টার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করেন। বাবুল চন্দনাইশের হাছানদণ্ডীর বাসিন্দা।

কেএম/এমএইচএস