অবৈধ গ্যাস সংযোগ বাড়ছেই, তিতাসের সংশ্লিষ্টতা দেখছে সংসদীয় কমিটি
গ্যাসের অবৈধ সংযোগ দিন দিন বেড়েই যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে সংসদীয় কমিটিতে। এর পেছনে তিতাসসহ সরকারের গ্যাস কোম্পানিগুলোর একশ্রেণির কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংশ্লিষ্টতারও অভিযোগ উঠেছে। গ্যাসের প্রি-পেইড মিটার স্থাপন কাজে ধীরগতির জন্যও একশ্রেণির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দায়ী করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণায় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। কমিটি প্রি-পেইড মিটার স্থাপন কাজ দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন করার পাশাপাশি অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্নে আরও কঠোর হওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে। এক্ষেত্রে কোনো প্রভাবশালী ব্যক্তির সংশ্লিষ্টতা থাকলেও ছাড় না দিতে পরামর্শ দিয়েছে।
বিজ্ঞাপন
বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি শহীদুজ্জামান সরকার বলেন, গ্যাসের অবৈধ সংযোগ যেখানে দিন দিন কমার কথা কিন্তু উল্টো তা বেড়েই যাচ্ছে। বিষয়টি উদ্বেগজনক। আমাদের মনে হয়েছে যতটা গুরুত্ব দিয়ে বিষয়টি দেখা দরকার, তা হচ্ছে না। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তিতাসের সংশ্লিষ্টরা জড়িত না থাকলে এভাবে অবৈধ গ্যাস সংযোগ থাকার কথা নয়। তাদের কোনো স্বার্থ রয়েছে বলে আমাদের মনে হয়েছে।
জানা গেছে, অবৈধ গ্যাস সংযোগের পেছনে বিভিন্ন সময়ে সংসদ সদস্যসহ জনপ্রতিনিধিদের সম্পৃক্ত থাকার প্রসঙ্গটিও বৈঠকে উঠে আসে। কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট আবু জাহির প্রসঙ্গটি তোলেন বলে জানা গেছে। এক্ষেত্রে কোনো জনপ্রতিনিধিদের যেন ছাড় না দেওয়া হয় সেই পরামর্শ দেন তিনি। বৈঠকে গ্যাসের বকেয়া বিল আদায়ে আরও তৎপরতার হওয়ার পাশাপাশি আগামী বৈঠকে কমিটি ২০০১ থেকে ২০২০ পর্যন্ত গ্যাসের বকেয়া বিলের প্রতিবেদন দেওয়ার সুপারিশ করা হয়।
প্রি-পেইড মিটার স্থাপনে ধীরগতির প্রসঙ্গ টেনে আবু জাহির বলেন, আমাদের কাছে মনে হয়েছে একশ্রেণির লোকজনের সুবিধা কমে যাবে যার কারণে প্রি-পেইড মিটার স্থাপন কাজে গতি আসছে না। এছাড়া গ্যাসের বকেয়া বিল বন্ধে প্রি-পেইড মিটার সংযোগ দ্রুত চালু করার ব্যাপারে কমিটি থেকে জোর সুপারিশ করা হয়।
বৈঠকে প্রকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে আরও সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। এবিষয়ে কমিটির সভাপতি বলেন, অনেক প্রকল্প নেওয়া হয় কিন্তু সময়মত বাস্তবায়ন হয় না। এতে প্রকল্পের ব্যয় যেমন বেড়ে যায়ে তেমনি জনগণ প্রত্যাশিত সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়। এ জন্য আমরা সতর্ক হতে বলেছি। আর ভবিষ্যতে যেসব প্রকল্প গ্রহণ করা হবে, সেখানে যেন আগে থেকেই সঠিক পরিকল্পনা করে নেওয়া হয়। বারবার যেন সময় বাড়াতে না হয়।
কমিটির সভাপতি মো. শহীদুজ্জামান সরকারের বৈঠকে কমিটির সদস্য মো. আবু জাহির, মো. নূরুল ইসলাম তালুকদার, মো. আছলাম হোসেন সওদাগর, মোছা. খালেদা খানম, বেগম নার্গিস রহমান ও মো. নুরুজ্জামান বিশ্বাস অংশগ্রহণ করেন।
এইউএ/এসএসএইচ/এফআর