জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার/ ফাইল ছবি

জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার বলেছেন, ‘আমি এখনও বিশ্বাস করি, বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে ছিলাম, নির্বাচন কমিশনে আসা এটা ছিল প্রধান কারণ। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে না থাকলে আমি নির্বাচন কমিশনার হতে পারতাম না। আমি মুক্তিযোদ্ধা ছিলাম না, কিন্তু আমার মুক্তিযুদ্ধের সনদ আছে। আমি মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পাচ্ছি। এই ভাতাকে আমি খুব সম্মানজনক মনে করি।’

বৃহস্পতিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) নির্বাচন ভবনে রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসি (আরএফইডি) আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদাসহ অন্য নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিব ও আরএফইডির সভাপতি সোমা ইসলাম এবং সাধারণ সম্পাদক কাজী জেবেলসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।

মাহবুব তালুকদার বলেন, ‘আমাকে কিন্তু সাংবাদিকতা ছাড়েনি। আমি সাংবাদিকতার পথ ধরেই বঙ্গভবনে এলাম ১৯৭২ সালে। বঙ্গবন্ধু রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর উনি আমাকে ডেকে বললেন, তুমি আমার সঙ্গে থাকবা। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আমি জীবনের সবচেয়ে গৌরবময় মুহূর্ত কাটিয়েছি। আমি সাংবাদিক হতে পারিনি, তারপরও সাংবাদিকতা আমাকে কতকিছু দিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘বর্তমানে আমি ৮০ বছরে পা দিয়ে যখন পেছনের দিকে ফিরে তাকাই তখন মনে হয়, জীবনের ধন কিছুই যাবে না ফেলা। আর এখানে আসা, এখানে নির্বাচন কমিশনার হওয়া এটা আমার স্বপ্নেরও অগোচরে ছিল। আমি কোনোদিনও ভাবিনি, আমার যোগ্যতা বলতে কিছুই ছিল না। ছিল শুধু ১৯৭০ সালের নির্বাচনে আমি ইলেকশন অফিসার ছিলাম। কারণ তখন আমি শিক্ষকতা করি, এর ফলে নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছিলাম। কিন্তু আকস্মিকভাবে একদিন আমি আবিষ্কার করলাম আমি নির্বাচন কমিশনার।’

জ্যেষ্ঠ এ কমিশনার বলেন, ‘জীবনের একটা স্বপ্ন ছিল, আমি একদিন সাংবাদিক হব। ৬০ বছর আগে আমি সাংবাদিক হয়েছিলাম। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধির পর আমি দৈনিক ইত্তেফাকের স্টাফ রিপোর্টার (নিজস্ব প্রতিবেদক) ছিলাম। কিন্তু ভাগ্য আমাকে সাংবাদিকতায় থাকতে দেয়নি। ওইসময় আমি ১০০ টাকা বেতন, আর পত্রিকার ইঞ্চি মেপে টাকা পেতাম।’

মাহবুব তালুকদার আরও বলেন, ‘আমি মুক্তিযোদ্ধা ছিলাম না, কিন্তু আমার মুক্তিযুদ্ধের সনদ আছে। দেশ স্বাধীনের প্রায় ৪৭ বছর পরে আমি সেটা পেয়েছি। মুক্তিযোদ্ধা সনদপত্র অনুযায়ী আমার সনদকে মুক্তিযোদ্ধা বলা হয় না। ৪৭ বছর পর সরকার নির্ধারণ করলেন যে, আমিও মুক্তিযোদ্ধা। সুতরাং আমি একজন কাগজে মুক্তিযোদ্ধা হয়ে গেলাম। তারপর থেকে আমি মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পাচ্ছি। এই ভাতাকে আমি খুব সম্মানজনক মনে করি। যদিও আমি সেই অর্থে মুক্তিযোদ্ধা নই।’

এসআর/এফআর