বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের দেখভালের জন্য চলতি বছর ৮৮ কোটি ডলার বা ৮৮১ মিলিয়ন ডলার সহায়তা চেয়েছে জাতিসংঘ। এর মধ্যে নোয়াখালীর ভাসানচরে স্থানান্তরিত রোহিঙ্গাদের জন্য রাখা হয়েছে ১০ কোটি ডলার।

মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) সুইজারল্যান্ডের জেনেভাতে চলতি বছরের জন্য রোহিঙ্গাদের তহবিল সংগ্রহে যৌথ সাড়া দান পরিকল্পনা (জেআরপি) নিয়ে এক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে এ সহায়তা চায় জাতিসংঘ।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, কক্সবাজার ও ভাসানচরে অবস্থিত প্রায় ৯ লাখ ১৮ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী ও তাদের আশেপাশে থাকা প্রায় ৫ লাখ ৪০ হাজার বাংলাদেশি মিলিয়ে মোট প্রায় ১৪ লাখ মানুষের সহায়তার জন্য প্রায় ৮৮১ মিলিয়ন ডলারের তহবিল চাওয়া হয়েছে। এবারই প্রথম জেআরপিতে ভাসানচরের রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য মানবিক কার্যক্রম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ থেকে যুক্ত ছিলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম। অনুষ্ঠান শেষে মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন প্রতিমন্ত্রী।

প্রতিমন্ত্রী জানান, রোহিঙ্গাদের জন্য জাতিসংঘ ৯৪ কোটি ৩০ লাখ ডলার চেয়েছিল। সেই অর্থ থেকে বিভিন্ন বন্ধু ও দাতা রাষ্ট্রের কাছ থেকে পেয়েছিল ৬৭ কোটি ৫ লাখ ডলার। এ বছরের ৮৮ কোটি ডলার চাওয়া হয়েছে। এবার ভাসানচর যুক্ত করা হয়েছে এতে। আর ভাসানচরের জন্য আলাদা করে রাখা হয়েছে ১০ কোটি ডলার

বৈঠকে আলোচনার প্রসঙ্গে শাহরিয়ার আলম বলেন, প্রত্যাবাসনে জাতিসংঘের উদ্যোগে কার্যক্রম চালানোর জন্য মিয়ানমারে সঙ্গে একটি চুক্তি করেছিল জাতিসংঘ। বৈঠকের আগে জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার প্রধানের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তারা আমাকে জানিয়েছে, ওই চুক্তিটি নবায়ন করা হয়েছে। আমার মনে হয়, এটি একটি ভালো লক্ষণ।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে দুটি বিষয় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। একটি হচ্ছে প্রত্যাবাসন এবং অপরটি মানবিক সহায়তা। এ বৈঠকটি মানবিক সহায়তা সংক্রান্ত। কিন্তু এখানেও বক্তারা সবাই প্রত্যাবাসনের ওপর জোর দিয়েছেন।

বিশ্বে অন্যান্য সংকটের কারণে রোহিঙ্গা সংকট যেন হারিয়ে না যায় তার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, গত একবছরে বিশ্বে কয়েকটি সংকট তৈরি হয়েছে। আমরা চাই, রোহিঙ্গা সংকট যেন হারিয়ে না যায়। এ জন্য আমরা দাতা ও বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর সহযোগিতা চাই।

রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রসঙ্গে শাহরিয়ার আলম বলেন, রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান মিয়ানমারের হাতে। শরণার্থী প্রত্যাবাসনের জন্য অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে ইউএনএইচসিআর ও অংশীদার সংস্থাগুলো মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে তাদের উপস্থিতি বজায় রাখছে। যতদিন পর্যন্ত রোহিঙ্গা শরণার্থীরা স্বেচ্ছায়, নিরাপদে ও মর্যাদার সঙ্গে ফিরতে না পারছে ততদিন তাদের জীবন রক্ষাকারী সুরক্ষা ও সহায়তা দেওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অব্যাহত সহায়তা দরকার। আমরা বিশ্বাস করি মিয়ানমার তাদের নাগরিকদের সম্মানের সঙ্গে ফিরিয়ে নেবে।

এনআই/আইএসএইচ