ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়াদের বিষয়ে বাহরাইনের বাদশাহর সহযোগিতা কামনা
করোনা পূর্ববর্তী সময়ে দেশে ফিরে ভিসার মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়া প্রায় হাজারখানেক বাংলাদেশি প্রবাসী বাহরাইনে যেতে পারছেন না। আটকে পড়া এ প্রবাসীদের বাহরাইনে ফিরিয়ে নিতে দেশটির বাদশাহর সহযোগিতা চেয়েছেন দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মো. নজরুল ইসলাম।
রোববার বাহরাইনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আব্দুল লতিফ বিন রাশিদ আল জায়ানির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ড. মো. নজরুল ইসলাম। এ সময় তিনি এ সহযোগিতা চান।
বিজ্ঞাপন
দূতাবাস জানায়, বাহরাইনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ বিষয়টি নিয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে ফলপ্রসূ সিদ্ধান্তের আশ্বাস দেন। রাষ্ট্রদূত সম্প্রতি সাধারণ জনগণ, সরকারি কর্মকর্তা, এমনকি কূটনীতিকসহ তাদের পরিবার ভিসা পেতে জটিলতা হচ্ছে মর্মে উল্লেখ করে বাহরাইনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ব্যক্তিগত হস্তক্ষেপ কামনা করেন। রাষ্ট্রদূত দু’দেশের নাগরিকদের মধ্যে অধিকতর যোগাযোগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে কূটনৈতিক এবং অফিসিয়াল পর্যায়ে ভিসা অব্যাহতি সংক্রান্ত চুক্তিতে স্বাক্ষরের বিষয়ে প্রস্তাব করেন।
বৈঠকে রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশ ও বাহারাইনের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বৃদ্ধির গুরুত্ব তুলে ধরেন এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন গত বছরের ডিসেম্বরে বাহরাইনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ঢাকা সফরের যে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন সে বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দেন। তিনি বাহরাইনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে আমন্ত্রণপত্রের একটি কপি আবার হস্তান্তর করেন। বাহরাইনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমন্ত্রণপত্রটি গ্রহণ করেন এবং শিগগিরই ঢাকা সফরের আগ্রহ প্রকাশ করেন।
রাষ্ট্রদূত কোভিডকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব উন্নয়ন অগ্রযাত্রার সাফল্যগাথা তুলে ধরেন। বিশেষ করে তিনি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ধারাবাহিক ঈর্ষণীয় হার, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নারীর ক্ষমতায়ন, খাদ্য নিরাপত্তা অর্জন এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে সক্ষমতা অর্জনে বাংলাদেশের অভাবনীয় অগ্রগতির বিষয়ে আলোকপাত করেন। এছাড়া তিনি কোভিড-১৯ মোকাবিলায় বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক গৃহীত বিভিন্ন কার্যক্রম বাহরাইনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে অবহিত করেন এবং বাহরাইন সরকার কর্তৃক গৃহীত বিভিন্ন কার্যক্রমের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
২০১৫ সালে বাংলাদেশ ও বাহরাইনের মধ্যে ফরেন অফস কনসালটেন্ট (এফওসি) নিয়ে স্বাক্ষরিত এমওইউয়ের কথা স্মরণ করে রাষ্ট্রদূত দু’দেশের মধ্যকার অর্থনৈতিক, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়াসহ সকল ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তিনি বলেন, ঢাকা প্রথম এফওসি আয়োজনে বেশ আগ্রহী এবং এর প্রস্তুতি হিসেবে দু’দেশের সচিব পর্যায়ে সফর হতে পারে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে এ বিষয়ে একমত পোষণ করেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস করেন।
রাষ্ট্রদূত বাহরাইনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে বাহরাইন সরকার থেকে দূতাবাসের জন্য জমি পেলে বাংলাদেশ সরকার বাহরাইনে নিজস্ব জমিতে দূতাবাস নির্মাণে আগ্রহী। এ প্রেক্ষিতে বাহরাইনে বাংলাদেশ দূতাবাসকে নিজস্ব জমি বরাদ্দ দেওয়ার বিষয়টি বাহরাইন সরকার গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী অবহিত করেন।
এ সময় রাষ্ট্রদূত ঢাকায় বাহরাইনের দূতাবাস স্থাপনের আহ্বান জানান। এছাড়া বাহরাইনের বাদশাহ কর্তৃক প্রদত্ত জমিতে বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে স্কুল নির্মাণ প্রকল্পের বিষয়ে রাষ্ট্রদূত পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে অবহিত করেন এবং এ ব্যাপারে তার সহযোগিতা কামনা করেন।
এনআই/এনএফ