রাজধানীর রমনা এলাকায় অভিযান চালিয়ে সংঘবদ্ধ মানবপাচার চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে এলিট ফোর্স র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)। গ্রেপ্তাররা হলেন, ইফতাফ শাহীন (৩৮) ও মিজানুর রহমান (৩২)।

র‌্যাব-৩ এর একটি দল সোমবার (১৪ মার্চ) বিকেলে রমনা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেপ্তার করে।

র‌্যাব-৩ এর স্টাফ অফিসার (অপস্ ও ইন্ট শাখা) সহকারী পুলিশ সুপার মো. খায়রুল কবীর বলেন, গ্রেপ্তারদের জিজ্ঞাসাবাদে ও প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, তারা সংঘবদ্ধ পাচারকারী চক্রের সদস্য। চক্রের মূলহোতা সজিবুল ইসলাম (৩৫)। তার বাড়ি মাদারীপুরের কালকিনী থানার ছোট কয়ারিয়া। তিনি বর্তমানে তুরস্কে থাকেন। চক্রটি এক ভুক্তভোগীকে সার্বিয়াতে ৬০ হাজার টাকা বেতনের চাকরি, থাকা খাওয়া ফ্রি, বাৎসরিক দুইটি বোনাসসহ ভালো কাজের ভিসা আছে এই আশা দেখিয়ে সার্বিয়াতে পাঠায়। এছাড়া কোনো সমস্যা হলে তাকে তাৎক্ষণিক দেশে ফিরিয়ে নিয়ে আসবে এ মর্মে প্রলোভন দেখায়।

মো. খায়রুল কবীর বলেন, চক্রটি সার্বিয়া যাওয়ার খরচ বাবদ ভিকটিমের কাছ থেকে ছয় লাখ টাকা নেয়। গত বছরের ১৭ নভেম্বর ভুক্তভোগী সার্বিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা করেন। সার্বিয়া পৌঁছার পর ভিকটিম দালালদের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কোনো কাজ পাননি। সেখানে কাজ না পেয়ে মানবেতর জীবন যাপন করতে থাকেন এবং মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন।

তিনি বলেন, সার্বিয়াতে কোনো কাজের সন্ধান না পাওয়ায় চক্রটি ভুক্তভোগীকে অবৈধ পথে ইতালি যাওয়ার প্রস্তাব দেয়। গত ৭ মার্চ দুপুর দুটায় একটি ফোনের মাধ্যমে ভিকটিমের স্ত্রী জানতে পারেন যে, তার স্বামী সার্বিয়াতে মারা গেছেন।

সহকারী পুলিশ সুপার মো. খায়রুল কবীর বলেন, চক্রটি দীর্ঘদিন যাবৎ সামাজিকভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষকে থাকা-খাওয়াসহ উচ্চ বেতনে উন্নত জীবন-যাপনের প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণামূলকভাবে দেশি-বিদেশি পাচারকারীদের সহায়তায় মানব পাচারের মতো জঘন্য অপরাধ করে আসছে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, চক্রটি ১০০ জনকে পাচার করে ৮ কোটি টাকা হাতিয়েছে। চক্রের দুই সদস্যের বিরুদ্ধে সাভার থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

জেইউ/আইএসএইচ