ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন সংশোধন জরুরি : টিক্যাব
ডিজিটাল খাতের ভোক্তাদের স্বার্থ সুরক্ষায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ সংশোধন জরুরি বলে দাবি করেছে টেলি কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টিক্যাব)।
সোমবার (১৫ মার্চ) ‘বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবস’ উপলক্ষে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি জানান টিক্যাব’র আহ্বায়ক মুর্শিদুল হক। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য— ‘ডিজিটাল আর্থিক ব্যবস্থায় ন্যায্যতা’।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, ‘আজ বিশ্বজুড়ে পালিত হচ্ছে ভোক্তা অধিকার দিবস। ১৯৬২ সালের এদিনে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি ভোক্তার স্বার্থ রক্ষার বিষয়ে চারটি অধিকার সম্বন্ধে আলোকপাত করেন। সেগুলো হচ্ছে— নিরাপত্তার অধিকার, তথ্যপ্রাপ্তির অধিকার, পছন্দের অধিকার এবং অভিযোগ প্রদানের অধিকার। ১৯৮৫ সালে কেনেডি বর্ণিত চারটি মৌলিক অধিকারকে আরও বিস্তৃত করে অতিরিক্ত আরও আটটি মৌলিক অধিকার সংযুক্ত করে জাতিসংঘ। কেনেডির ভাষণের দিনকে স্মরণীয় করে রাখতে দিনটিকে বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবস হিসাবে বৈশ্বিকভাবে পালন করা হয়।
টিক্যাব’র আহ্বায়ক বলেন, ‘একুশ শতকের উন্মুক্ত বাজার ব্যবস্থার যুগে নিরাপদ, মানসম্পন্ন, স্বাস্থ্যসম্মত পণ্য ও সেবা পাওয়া ভোক্তার অধিকার। বাংলাদেশের মতো একটি জনবহুল ও ক্রমবিকাশমান বাজার ব্যবস্থাপনার দেশে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ ও ভোক্তা অধিকারবিরোধী কাজগুলো রোধ করা খুবই জরুরি। ভোক্তাদের অধিকার সংরক্ষণে নবম জাতীয় সংসদে, ‘ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯’ প্রণয়ন করা হয়। ২০১০ সালে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠিত হয়। কিন্তু দেশের ১৬ কোটি ভোক্তার অধিকার সংরক্ষণে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের জনবল খুবই নগণ্য। জনবল সংকট থাকায় প্রতিনিয়ত বাজার মনিটরিংসহ ভোক্তা স্বার্থরক্ষার কার্যক্রম পরিচালনা অধিদপ্তরের পক্ষে চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠছে। তাই জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরকে আরও জনবান্ধব ও শক্তিশালী করতে হবে।’
মুর্শিদুল হক আরও বলেন, ‘অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ এ দেশের প্রচলিত পণ্যের গ্রাহদের বিষয়টি উল্লেখ থাকলেও তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতের গ্রাহকদের অধিকার রক্ষার বিষয়টি সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ নেই। সম্প্রতি বিভিন্ন ইকমার্স প্রতিষ্ঠানের জালিয়াতি, ডিজিটাল আর্থিকখাতে প্রতারণা, মোবাইল ব্যাংকিং এ প্রতারণা, অনলাইনে অবৈধভাবে ঋণদানের নামে প্রতারণা, ই-টিকেটিংয়ের ক্ষেত্রে মনগড়া সার্ভিস চার্জ আদায় এরই প্রমাণ।’
তিনি বলেন, ‘বিদ্যমান আইন অনুযায়ী কোনো ভোক্তা যদি তার পণ্য বা সেবা নিয়ে অভিযোগ জানাতে চায় তাহলে তাকে ৩০ দিনের মধ্যে অভিযোগ সম্পর্কে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কিংবা অধিদপ্তরের ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করতে হয়। এরপর রয়েছে শুনানি ও প্রয়োজনে আদালতের দীর্ঘসূত্রতা। যা অনেক ক্ষেত্রে গ্রাহকদের ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনের সুযোগ নিতে নিরুৎসাহিত করে।
এ আইনকে আরও জনপ্রিয় ও সহজলভ্য করতে গ্রাহক অভিযোগ ও তা নিষ্পত্তির বিষয়টি অনলাইন মাধ্যমে করা যেতে পারে বলে মনে করেন তিনি।
এসআর/এএইচএস