মানবপাচার ও প্রতারণার মাধ্যমে ৩৮ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে লক্ষ্মীপুরের সাবেক এমপি কাজী শহিদুল ইসলাম পাপুলের অন্যতম সহযোগী সাদিকুর রহমান মনিরকে (৩৭) গ্রেফতার করা হয়েছে। 

মানবপাচারের সুনির্দিষ্ট অভিযোগে বুধবার (২ মার্চ) রাজধানীর খিলগাঁও তালতলা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। বৃহস্পতিবার মালিবাগ সিআইডির কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সিআইডি ফাইন্যানসিয়াল ক্রাইমের বিশেষ পুলিশ সুপার (এসএসপি) হুমায়ুন কবির এ তথ্য জানিয়েছেন। 

হুমায়ুন কবির বলেন, সাদিকুর রহমান মনিরের ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে রাজধানীর রাজারবাগ রূপালী ব্যাংকের শাখায় ৩৮ কোটি টাকার লেনদেন করেন। মনিরের হিসাব থেকে আরো ছয় জনের হিসাবে এসব টাকা বিভিন্ন সময় পাঠানো হয়। সাবেক এমপি পাপুলের হিসাবেও মনিরের হিসাব থেকে টাকা পাঠানো হয়েছে। মানবপাচার ও প্রতারণার মাধ্যমে এসব টাকা তার হিসাবে জমা হয়। পাপুলের নির্দেশে এসব টাকা তার হিসাবে জমা পড়ে এবং বিভিন্ন জায়গায় দিয়ে দেওয়া হয়।

তিনি বলেন, এই হিসাব ছাড়াও আরো ৫৩টি হিসাবের সন্ধান আমরা পেয়েছি। সেগুলোর বিষয়ে আমরা তদন্ত অব্যাহত রেখেছি। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে কাজী শহিদুল ইসলাম পাপুলকে আসামি করে সিআইডি মামলাটি দায়ের করে। মামলাটিতে মানবপাচার ও প্রতারণার মাধ্যমে ৩৮ কোটি ২২ লাখ ৪০ হাজার ৫৬৭ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছিল।

তিনি আরো বলেন, এ মামলার এক নম্বর আসামি সাবেক এমপি কাজী শহিদুল ইসলাম পাপুল দেশের বাইরে কারাগারে রয়েছে‌ন। মামলায় মানবপাচারকারী চক্রের যার সহায়তায় তিনি এ টাকাগুলো ট্রান্সফার করেছেন সেই ব্যক্তিকে আমরা গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি। পাপুলের কী ধরনের সম্পত্তি কুয়েতে রয়েছে সে বিষয়ে জানতে আমরা সে দেশের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছি।

এসএসপি হুমায়ুন কবীর বলেন, কাজী শহিদুল ইসলাম পাপুলের প্রতারণার শিকার ভুক্তভোগীদের সঙ্গে সিআইডির পক্ষ থেকে কথা বলা হচ্ছে। তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। চেষ্টা করছি, মামলাটি নিষ্পত্তি করার জন্য। আমাদের কাছে যতগুলো হিসাব সম্পর্কে তথ্য এসেছে সেগুলো ফ্রিজ করা হয়েছে। কিন্তু এর আগেই তারা সেসব হিসাব থেকে টাকা তুলে নিয়েছিল। ওই হিসাবগুলো থেকে কী ধরনের লেনদেন হয়েছে সে বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। গ্রেপ্তার মনির যেসব তথ্য দিয়েছেন সেগুলো ও অন্যান্য তথ্য আমরা পর্যালোচনা করছি।

কতজনের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়েছে- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিষয়টি এখনো তদন্তাধীন। এখন পর্যন্ত সুনির্দিষ্টভাবে সংখ্যা বলা সম্ভব হচ্ছে না, কতজন ভুক্তভোগী। আমরা অনেক ভুক্তভোগী পেয়েছি। তবে পাপুলের দেশে কী ধরনের সম্পদ রয়েছে এ বিষয়ে তথ্য চাওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত বিস্তারিত তথ্য আমাদের হাতে পৌঁছেনি।

এমএসি/এইচকে