আগের কমিশনের দোষ-ত্রুটি নিয়ে কিছু বলব না : সিইসি
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, আগের কমিশনের ব্যর্থতা-সফলতা মূল্যায়নের প্রশ্ন আসবে। কিন্তু এ মুহূর্তে আগের কমিশনের দোষ-ত্রুটি নিয়ে কিছু বলতে চাই না। তবে শিক্ষণীয় কোনো বিষয় থাকলে সে বিষয়ে আমরা কাজ করব।
সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে প্রথমবারের মতো সংবাদ সম্মেলনে এসে এ কথা বলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার।
বিজ্ঞাপন
সিইসি বলেন, নির্বাচন একটি বিশাল কর্মযজ্ঞ, বিশেষ করে জাতীয় নির্বাচন। যেখানে রাজনৈতিক দলগুলোর আগ্রহ থাকে, সবার আবেগ বুঝতে হয়। নির্বাচন সুষ্ঠু করতে রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকা রয়েছে। নির্বাচনে অনেক কর্মী থাকে, তাদের দায়িত্ব পালন করতে হবে। মাঠ ছেড়ে এলে হবে না, ছেড়ে গেলেও হবে না, থাকতে হবে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট পালিয়ে যেতে পারতেন, কিন্তু প্রতিরোধ গড়ে রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ করে যাচ্ছেন।
তিনি বলেন, নির্বাচনি প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কিছু ধস্তাধস্তি হয়। আমাদের যে সামর্থ্য ও দক্ষতা আছে সে অনুযায়ী আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করব আমাদের ওপর আরোপিত দায়িত্ব পালনের।
বিএনপিকে আস্থায় আনার বিষয়ে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, নির্বাচন কমিশন দলীয় সরকারের জন্য নির্বাচন করে না। একটি সরকার তো থাকবেই। যেমন- ওয়ান ইলেভেনে একটা সরকার ছিল, আবার নির্দলীয় সরকারও ছিল। তাদের অধীনেও কমিশন থাকে। এখন যে সাংবিধানিক ব্যবস্থা আছে, আমরা চেষ্টা করব ভোটাররা যাতে ভোট দিতে পারেন, তাদের আস্থা অর্জনের চেষ্টা করব। বিএনপি যদি ঘোষণা দিয়েও থাকে (নির্বাচনে না আসার ব্যাপারে) তাদের কি আমরা আহ্বান জানাতে পারব না? কোনো কিছুই শেষ নয়। আমরা তাদের চা খেতে আমন্ত্রণ জানাতেও পারি।
সিইসি বলেন, নির্বাচনের মাঠ উত্তপ্ত। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড কমিশন একা তৈরি করতে পারে না। পলিটিক্যাল লিডারশিপ আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি মিলিয়েই কিন্তু হয়। কিন্তু আমরা যদি মুখ ফিরিয়ে থাকি তাহলে দূরত্ব বাড়বে। রাজনৈতিক দলগুলোর কাউকে না কাউকে অহংকার বাদ দিয়ে আলোচনা করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচনে দলীয় কর্মী থাকে, তারা ভোটারদের নিয়ে যায়। তাদের যে ভূমিকা নেই তা নয়, তাদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। যদি গ্রাউন্ড লেভেলে নির্বাচন ব্যবস্থা দুর্বল হয় তাহলে সমস্যা তৈরি হয়। আমরা সবাইকে নির্বাচনমুখী করতে চাই।
তিনি বলেন, ভোট ভোটের নিয়মে হবে। আগের রাতে হতো কি না জানি না। তবে আমরা সেদিকে যেতে চাই না। যদি দেখেন আমরা সেটি করেছি আপনারা তখন বলবেন। যদি মানুষের আস্থা বিনষ্ট হয় তাহলে সেটি ফেরানোর চেষ্টা কি আমরা করব না? আমাদের আপনারা পর্যবেক্ষণে রাখুন, আমরা সেখানে বাধা দেবো না। রাজনৈতিক দলগুলো একটি চুক্তিতে আসতে পারে যে তারা কেন্দ্রে কোনো সহিংসতা করবে না, সংঘাত তৈরি করবে না।
বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আন্তরিকভাবে চেষ্টার কোনো ঘাটতি থাকবে না। নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী চেষ্টা করব। নির্বাচনের সময় অভিযোগ পেলে তাৎক্ষণিক সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করব। সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।
ইভিএম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ইভিএম নিয়ে কী সিদ্ধান্ত হবে সেটি এখনই বলতে পারব না। আমরা আলোচনা করব। ইভিএমের ভালো-মন্দ আলোচনা করব। আমি নিজেও ইভিএম ভালো করে বুঝি না। ব্যালটের ভালো-মন্দটাও হয়ত বসে দেখব। পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে। নির্বাচন সংশ্লিষ্ট আইনগুলোও পর্যাপ্ত কি না আমরা সেটি দেখব। নির্বাচন পরিচালনায় আমরা গুরুত্ব দেবো। আমরা সেনসেটাইজ করব। পর্যবেক্ষণও করব।
সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন কমিশনার অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ বেগম রাশিদা সুলতানা, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আহসান হাবীব খান, অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র সচিব মো. আলমগীর ও আনিছুর রহমান এবং ইসি সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার উপস্থিত ছিলেন।
এসআর/জেডএস/জেএস