পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বলেছেন, করোনাকালে বিশেষ পরিস্থিতিতে টেলিমেডিসিন সেবা চালু করেছিলাম। এটাকে আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি। তবে আমরা প্র্যাকটিক্যাল চিকিৎসাকে আরও বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। এক সময়কার ২৫০ বেডের কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে এখন সাড়ে ১১শ বেডে রোগী সেবা পাচ্ছে। আধুনিক সরঞ্জাম সংযুক্ত করা হয়েছে।

এ বছরই হার্টের রোগে ভোগা পুলিশ সদস্যদের কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে হার্টে রিং পরানো যাবে। পাশাপাশি আগামী দুই বছরের মধ্যে ঢাকা বিভাগীয় একটি পুলিশ হাসপাতাল তৈরি করা হবে।

বিভিন্ন দেশের পুলিশে কর্মরত অবস্থায় মৃত্যুবরণকারী পুলিশ সদস্যদের সম্মানে তৈরি পুলিশ মেমোরিয়ালের উদ্বোধন শেষে এসব কথা বলেন তিনি।

রোববার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর মিরপুর-১৪ পুলিশ স্টাফ কলেজ কম্পাউন্ডে তৈরি এ মেমোরিয়ালের উদ্বোধন করেন তিনি। অতিরিক্ত আইজিপি, ডিএমপি কমিশনারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়ে পুলিশ মেমোরিয়াল ভবন পরিদর্শন করেন আইজিপি।

সাংবাদিকদের আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন ধরনের দায়িত্ব ও কাজের পরিবেশের কারণে বিশেষ ধরনের রোগ হচ্ছে পুলিশ সদস্যদের। শ্বাসকষ্ট, কিডনি, ক্যান্সার, হার্টের সমস্যা হচ্ছে। আমরা ইতোমধ্যে ডায়ালাইসিস ইউনিট যুক্ত করেছি। যেখানে ১০০ থেকে ১৫০ কিডনি আক্রান্ত পুলিশ সদস্য ডায়ালাইসিস সুবিধা পাচ্ছেন। আমরা ক্যাথ ল্যাব (কার্ডিয়াক ক্যাথেটারাইজেশন) সংযুক্ত করছি। এর ফলে আর বাইরে যাওয়া লাগবে না হার্টের রোগীদের। ইন হাউজ রিং পরানো যাবে।

তিনি বলেন, এই মুহূর্তে আমরা কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে ক্যান্সার ল্যাব প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছি। কাজ শুরু হয়েছে। আগামী দুই বছরের মধ্যে আশা করছি ক্যান্সারের ইউনিট যুক্ত হবে। তখন ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীদের ক্যামো থেরাপি দিতে বাইরে যেতে হবে না। লাখ লাখ টাকা খরচও করতে হবে না।

ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, দুই বছরে করোনার কারণে আমাদের কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের অনেক সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফোর্সও বাড়ানো হয়েছে। আক্রান্তের হার বৃদ্ধির সঙ্গে সব ধরনের সক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে।

ঢাকার জন্য হচ্ছে বিভাগীয় পুলিশ হাসপাতাল

আইজিপি বলেন, একটি সুখবর দিতে চাই, আমরা ঢাকা বিভাগীয় একটি পুলিশ হাসপাতাল তৈরির পরিকল্পনা করেছি। অন্যান্য বিভাগে ছোট বড় পুলিশ হাসপাতাল থাকলেও ঢাকায় নেই। সেজন্য আমরা প্রথমবারের মতো কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের পাশাপাশি ঢাকাতেই বিভাগীয় হাসপাতালের কাজ শুরু করব। ইতোমধ্যে সরকার সম্মতি দিয়েছে। আশা করছি আগামী দুই বছরের মধ্যে কাজ শুরু হবে। এতে ঢাকায় কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে চাপ কমবে। ঢাকায় যারা বসবাস করছেন, তারা চিকিৎসা সেবাটা দ্রুত পাবেন। পাশাপাশি আমরা বিভাগীয় শহরের পুলিশ হাসপাতালগুলোর উন্নয়নে কাজ করছি। চিকিৎসার মান যেন ন্যূনতম স্ট্যান্ডার্ড বজায় থাকে।

পুলিশ কল্যাণ তহবিল থেকে নিয়মিতই পুলিশ চিকিৎসার জন্য অর্থ সহায়তা দেয়। তবে তাদের বিশেষ রোগের ব্যয়বহুল চিকিৎসার জন্য তাদের চিকিৎসা খরচ বাড়ানো হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা ১০ জন বিশেষ রোগে ভোগা সদস্যের পেছনে ব্যয়বহুল চিকিৎসা করতে গিয়ে যদি তহবিলই শেষ করি তাহলে অন্যদের বঞ্চিত করা হবে। আগামীতে যাতে এর প্রয়োজনই না হয় সেজন্য ক্যান্সার, হার্ট ও কিডনি রোগের চিকিৎসার ব্যবস্থা করব পুলিশ হাসপাতালেই। ৫ লাখ, ১০ বা ১৫ লাখ টাকা না দিয়ে পুরোপুরি চিকিৎসা ব্যবস্থাই যেন পুলিশ হাসপাতালে করা যায় সেই চেষ্টাই আমরা করছি।

জেইউ/এসএসএইচ