ফেনীর ছাগলনাইয়ায় আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে যৌতুকের জন্য নির্যাতন ও গলা চেপে হত্যার ঘটনায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি স্বামী আব্দুল কাদেরকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। শনিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) ফেনীর ছাগলনাইয়া থানার পাঠানগড় কাচারি বাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

রোববার (২৭ ফেব্রুয়ারি) র‌্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মো. নূরুল আবছার ঢাকা পোস্টকে বলেন, আদালতে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

তিনি বলেন, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি আসামি আবদুল কাদেরকে আদালত মৃত্যুদণ্ড দেন। এরপরই তিনি বাড়ি থেকে ২ কিলোমিটার দূরের সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিল। তার আগেই র‌্যাব কঠোর নজরদারির মাধ্যমে তাকে গ্রেপ্তার করতে পেরেছে।

র‌্যাব সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯০ সালে আবদুল কাদেরের সঙ্গে একই এলাকার ভিকটিম আবু তারার বিয়ে হয়। তাদের একটি ছেলে সন্তান ও একটি মেয়ে সন্তান আছে। আবদুল কাদের মাদকাসক্ত ছিলেন।

বিয়ের পর থেকে প্রায় সময়ই মাদকসেবনের জন্য স্ত্রী আবু তারার কাছে যৌতুকের টাকা দাবি করত। টাকা না পেলে প্রায়ই অমানবিক নির্যাতন করত। একপর্যায়ে ২০০০ সালের ২৩ জুলাই রাতে আবদুল কাদের আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর ওপর বিভিন্নভাবে নির্যাতন ও মারধর করে গলা চেপে হত্যা করে।

পরে ঘটনা অন্যদিকে নিতে স্ত্রীকে ঘরের পাশে একটি গাছের সঙ্গে গলায় কাপড় পেঁচিয়ে ঝুলিয়ে রাখে। তিনি আশপাশের লোকজনকে বলতে থাকেন যে তার স্ত্রী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।

এ ঘটনায় ভিকটিমের বাবা মোহম্মদ আলী ছাগলনাইয়া থানায় ৯ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। ঘটনার সাত বছর পলাতক থাকার পর কাদেরকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গ্রেপ্তার করে। তিন বছর জেল খেটে জামিন নিয়ে আবার পালিয়ে যান তিনি। এরপর গত ২৪ ফেব্রুয়ারি আদালত কাদেরকে মৃত্যুদণ্ড দেন। কিন্তু রায় ঘোষণার সময় কাদের পলাতক ছিলেন। রায় ঘোষণার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই কাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

র‌্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মো. নূরুল আবছার বলেন, তার বিরুদ্ধে আরও ছয়টি মামলা রয়েছে। তাকে ছাগলনাইয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

কেএম/এসএসএইচ