‘শারীরিক-মানসিক নির্যাতনে লেখক মুশতাকের মৃত্যু’
রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকারকে জনগণের আন্দোলনের মাধ্যমেই সরাতে হবে, তাতে কোনো আলোচনার প্রয়োজন নেই। বাংলাদেশে রিমান্ড মানে ধরে নেওয়া হয়, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন । এভাবেই লেখক মুশতাককে মেরে ফেলা হয়েছে।
শুক্রবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন আয়োজিত লেখক মুশতাক আহমেদ স্মরণে আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
হাসনাত কাইয়ুম বলেন, ‘এ দেশের রাজনীতির র-ও যারা বুঝে তারা জানে অত্যাচার থেকে বাঁচতে এ সরকারকে অপসারণ করতে হবে। তবুও তারা কেন আন্দোলন সংগ্রামে যাচ্ছে না? আমরা সরকারকে সরিয়ে দিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার করি কিংবা তত্ত্বাবধায়ক সরকার বা যাই করি না কেন, এর মাধ্যমে যে নির্বাচন হয় এবং এর মাধ্যমে যে সরকার ক্ষমতায় যায় তা পূর্ববর্তী পরিস্থিতি থেকে দেশকে আরও খারাপের দিকে নিয়ে যায়। পূর্ববর্তী অভিজ্ঞতা থেকে আমরা মনে হয়, শুধুমাত্র নির্বাচনের জন্য মানুষ নিজের জীবন দেবে না।’
তিনি বলেন, ‘ভোট যদি মানুষ দিতে পারে এবং তা গণনা হয় তাহলে দেখা যাবে এ সরকার এখন যে জায়গায় আছে তার ১০ শতাংশ আসনও তারা পাবে না। ৩০টা আসন পাবে বলেও মনে হয় না। কিন্তু এর জন্য মানুষ জীবন দিয়ে দেবে, সেটাও তারা চায় না। মানুষ তখনই জীবন দিতে উদ্বুদ্ধ হবে, যখন মানুষ ভবিষ্যৎ প্রজন্ম প্রকৃতি নিয়ে একটি গ্রহণযোগ্য মুক্তির পথ দেখবে।’
বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘শুধু মুশতাক একা নয়, এর আগেও অনেককে এভাবে হত্যা করা হয়েছে। মুশতাকের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে কিশোরের জামিন হয়েছে। মুশতাকের মৃত্যু না হলে হয়ত কিশোরেরও এভাবে মৃত্যু হতো। আপনি বলছেন, আইনের চোখে সবাই সমান। কিন্তু ৬ বার আবেদন করার পরও তাকে আপনি জামিন দিলেন না কেন?’
তিনি বলেন, ‘আমাদের খাদ্যমন্ত্রী ও বাণিজ্যমন্ত্রী বলেছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বৃদ্ধির কারণে নিত্য-পণ্যের দাম বাড়ছে, তাদের কিছু করার নেই। আপনাদের কিছু করার না থাকলে কেন আপনারা এ মন্ত্রণালয় আছেন? কেন আপনারা দায়িত্ব ছেড়ে দিচ্ছেন না?’
তিনি আরও বলেন, ‘আগামী রবি অথবা সোমবার রাষ্ট্রপতি নির্বাচন কমিশন ঘোষণা করবেন। যেই হোক না কেন এটা আমরা জানি প্রধানমন্ত্রী দপ্তর বা তার দিক থেকে যে তালিকা ধরিয়ে দেওয়া হবে রাষ্ট্রপতি সেটাই ঘোষণা করবেন। এর বাইরে অন্য কোন কিছু হওয়ার সুযোগ নেই। আরেকটা হুয়া মার্কা কমিশন তৈরি হবে।’
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকী বলেন, ‘২০২১ সালের আজকের এ দিনে মুশতাক আহমেদ কারাগারে নিহত হন। মুশতাক আহমেদের বিরুদ্ধে মামলা হলো সঙ্গে আরও ১২ জনের নামও উল্লেখ করা হয়েছে। আপনারা কার্টুনিস্ট কিশোরের কথাও জানেন। কিশোর যদি জামিন পায় তাহলে মুশতাক কেন জামিন পেল না?’
রাস্তা সংস্কার আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতা সৈয়দ হাসিবউদ্দিন হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনায় আরও উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক মহাসচিব নঈম জাহাঙ্গীর, জেএসডির কার্যকরী সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, রাষ্ট্র সংস্কারের সাংগঠনিক সমন্বয়ক ইমরান প্রমুখ।
এমএইচএন/এসকেডি