গণমাধ্যমে থাকা স্বৈরাচার ও ফ্যাসিস্ট সরকারের সহযোগীদের অপসারণ ও আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী গণমাধ্যম আন্দোলন। এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে সাত দিনের সময় দিয়েছে সংগঠনটি। অন্যথায় প্রয়োজনে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দিয়েছে তারা।

শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) বৈষম্যবিরোধী গণমাধ্যম আন্দোলনের সমন্বয়ক আবিদ আজম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে গণঅভ্যুত্থান একটি সফল বিপ্লবের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে। বিপ্লবের ফসল হিসেবে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করেছে। সরকার এরই মধ্যে গণআকাঙ্ক্ষার অনুকূলে বেশ কিছু সংস্কারমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, যা আমাদের আশাবাদী করে। তবে এও লক্ষ্য করা যাচ্ছে রাষ্ট্রের সর্বক্ষেত্রে কাঙ্ক্ষিত বৈষম্য দূর হয়নি, এমনকি দূর হওয়ার কোনো লক্ষণও দেখা যাচ্ছে না, যা উদ্বেগের কারণ।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে তথা শত শত শহীদের রক্তের ওপর দিয়ে প্রতিষ্ঠিত এই বাংলাদেশে আর কোনো বৈষম্য, অনিয়ম ও অবিচার থাকতে পারে না। তবে আমরা দেখছি স্বৈরাচার ও ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন ঘটলেও গণমাধ্যমসহ রাষ্ট্রের বিভিন্ন সেক্টরে দুষ্টু কালো বিড়ালগুলো ঘাপটি মেরে রয়ে গেছে। তারা এখনও প্রতিবিপ্লবের স্বপ্ন দেখছে এবং পতিত স্বৈরাচার ও ফ্যাসিস্ট শক্তির দালালি করে যাচ্ছে।

এতে আরও বলা হয়েছে, অন্যায়কারীর মতো অন্যায়ের সহযোগী হয়ে এরাও সমান দোষে দুষ্ট। গণমাধ্যমে থেকে এরা মূলত সাংবাদিকতাকে কলুষিত করেছে। গণমাধ্যমের নাম ব্যবহার করে, সাংবাদিকতার মতো পবিত্র একটি পেশাকে তারা দালালির হাতিয়ারে পরিণত করেছে। তাই সাংবাদিকতাকে কলুষতামুক্ত রাখার স্বার্থে সাংবাদিক পরিচয়ধারী এই দুর্বৃত্ত ও দালালদের পেশা এবং সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমে থাকা পদ থেকে অপসারণের পাশাপাশি দ্রুত আইন ও বিচারের আওতায় আনার দাবি জানাই।

হুঁশিয়ারি করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী গণমাধ্যম আন্দোলন মনে করে, গণমাধ্যমে বিদ্যমান বহু বছরের বৈষম্য দূর না করে এবং স্বৈরাচার ও ফ্যাসিস্ট সরকারের সহযোগীদের বহাল রেখে প্রধান উপদেষ্টার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী গণঅভ্যুত্থানের সুফল প্রতিটি নাগরিকের দোরগোড়ায় পৌঁছানো সম্ভব নয়। কারণ, রাষ্ট্রের অতন্দ্র প্রহরী গণমাধ্যম সরকারের নীতি নির্ধারণে ভূমিকা রাখে। আর মুষ্টিমেয় ব্যতিক্রম ছাড়া এই গণমাধ্যমই কিন্তু প্রকাশ্যে স্বৈরাচার ও ফ্যাসিস্ট সরকারের দালালি করেছে। কিন্তু আমরা লক্ষ্য করছি, গণঅভ্যুত্থানের পরে মাস পেরিয়ে গেলেও গণমাধ্যমে বহাল তবিয়তে থাকা পতিত স্বৈরাচার ও ফ্যাসিস্ট সরকারের সহযোগীদের ব্যাপারে সাংবাদিক ইউনিয়ন ও সংগঠনগুলো দুঃখজনকভাবে নীরব ভূমিকা পালন করছে, যা তাদের পৃষ্ঠপোষকতার শামিল ও দৃষ্টিকটু।

টিআই/এসএসএইচ