সম্প্রতি একটি টেলিভিশন চ্যানেলের টকশো’র সুবাদে ভাইরাল হয়েছেন সঞ্চালক দীপ্তি চৌধুরী। তার অনুষ্ঠানে অতিথি হয়েছেন সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক ও বিএনপি নেতা গোলাম মাওলা রনি। এই টকশো’র ক্যামেরার পেছনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়েছে পড়েছে। তাতে দেখা গেছে, টকশো শেষেও উপস্থাপিকা দীপ্তির সঙ্গে তর্কে জড়িয়েছিলেন বিচারপতি মানিক।

অনুষ্ঠান শেষে দীপ্তি চৌধুরীকে রাজাকারের বাচ্চা বলেন বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক। এ সময় নিজের মেজার হারান দীপ্তি। তিনি বলেন, ‘আপনার কোনো অধিকার নেই আমাকে রাজাকারের বাচ্চা বলার। আমি একটা মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান। আমি একটা মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান, আপনি আমাকে কোন সাহসে রাজাকার বলেন।’

এ সময় শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, ‘আপনার ব্যবহারের দেখে আমি এ কথা বলেছি।’ এ কথা শুনে দীপ্তি চৌধুরী আবারও রেগে যান। পরে পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় বিএনপি নেতা গোলাম মাওলা রনি এসে বিচারপতি মানিককে নিয়ে অনুষ্ঠান সেট থেকে চলে যান।

এদিকে, প্রায় ৪৯ মিনিটের এই শোতে বেশ বুদ্ধিদীপ্ত আলোচনা, উপস্থাপনা, ধৈর্য ও বাচনভঙ্গির কারণে প্রশংসায় ভেসেছেন দীপ্তি। কোটাবিরোধী আন্দোলন নিয়ে এই টকশোটি প্রচারিত হয়। ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে অনুষ্ঠানের বিভিন্ন ছোট ছোট ক্লিপ। যেখানে নেটিজেনদের মুখেও শোনা যাচ্ছে, দীপ্তির ভূয়সী প্রশংসা। 

সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে সেদিনের টকশো নিয়ে কথা বলেছেন এই উপস্থাপিকা। তিনি জানান, সেদিনের টকশোতে আলাদা কিছু করেননি। মানুষের প্রতি ও পেশার প্রতি দায়বদ্ধতাটুকুই পালন করেছেন তিনি। দীপ্তির কথায়, ‘যখন আমি সঞ্চালকের চেয়ারে বসি, তখন অতিথিকে সম্মান করে জনগণ ও দর্শক যে প্রশ্নটি করতে চায় সেই কাজটিই করার চেষ্টা করি। সেদিনও তাই করেছি। এটাই হয়তো মানুষ ভালোভাবে নিয়েছে। সবাই প্রশংসা করছে। তবে আমি খুব মহান কিছু করিনি।’

উপস্থাপিকার ধৈর্য নিয়েও হয়েছে তুমুল আলোচনা। সবাই এর প্রশংসা করেছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ধৈর্য ধরা কিন্তু আমি বোল্ড নই কিংবা শক্তিশালী নই, তা কিন্তু নয়। বরং আমার মনে হয়েছে, শক্তিশালী কথা চিৎকার করে না বললেও সেটা শক্তিশালী। আর যদি কথাটি দুর্বল হয়, তাহলে চিৎকার করলেও সেটা দুর্বলই থেকে যায়।’

দীপ্তি চৌধুরী সঞ্চালনায় যুক্ত রয়েছেন দীর্ঘ সময় ধরে। অষ্টম শ্রেণি থেকেই তার উপস্থাপনায় হাতেখড়ি। ২০১৬ সালে ‘স্বর্ণ-কিশোরী’ প্রতিযোগিতায় সেরা হন দীপ্তি। তারপর সেই অনুষ্ঠান উপস্থাপনার সুযোগ পান তিনি।

এমএ