কোটা সংস্কার আন্দোলনকে মহান মুক্তিযুদ্ধ ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড় করানোর চেষ্টায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সাংবাদিকদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে)।

সোমবার (১৫ জুলাই) বিকেলে সংবাদ মাধ্যমে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের পাঠানো সংবাদ বিবৃতিতে এ উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। যৌথভাবে বিবৃতি পাঠান বিএফইউজের সভাপতি ওমর ফারুক ও মহাসচিব দীপ আজাদ।

বিবৃতিতে বলা হয়, দেশের সচেতন সব মহলের মতো সাংবাদিক সমাজও মনে করে, কোটা পদ্ধতির একটি যৌক্তিক সংস্কার হওয়া প্রয়োজন। এই দাবিতে যে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছেন তাদের সঙ্গে সাংবাদিক সমাজের ভিন্নমত নেই। সাংবাদিক হিসেবে গত কয়েক সপ্তাহের ঘটনাবলি পর্যবেক্ষণ শেষে আমাদের মন্তব্য হচ্ছে যে, কোটা পদ্ধতির যৌক্তিক সংস্কার করার দাবিটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এখন এই যৌক্তিক বিষয়টিকে পূর্ণতা দিতে আন্দোলনকারী, বিচার বিভাগ ও নির্বাহী বিভাগকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

কিন্তু আমরা বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ্য করছি কোটা সংস্কারের আন্দোলনকে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড় করানোর চেষ্টা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, আন্দোলনের কোনো কোনো পর্যায়ে কেউ কেউ এমন আচরণ করছেন, যা মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তির প্রতিনিধিত্ব করছে। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি এটি এই আন্দোলনের মূল সুর নয়। কিন্তু কোনো বিশেষ মহল এই আন্দোলনকে মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তির পক্ষে, বাংলাদেশ বিরোধী বা বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা বিরোধী পথে পরিচালনা করার চেষ্টা করছে কি না এই প্রশ্নও এখন সামনে আসছে।

আন্দোলনকারীদের কর্মসূচিতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবাহী সংবাদমাধ্যম বিরোধী স্লোগান এবং সংবাদকর্মীদের ওপর আক্রমণ এই ধারণাকে শক্ত ভিত্তি দিচ্ছে। আমরা এমন সব আচরণের নিন্দা জানাই। সব গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সূতিকাগার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজাকারের সমর্থনে স্লোগান দেওয়াকে আমরা ধিক্কার জানাই। এ ঘটনায় আমরা বিস্মিত। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।

এই প্রেক্ষাপটে সাংবাদিক সমাজ মনে করে, আন্দোলনকারীদের উচিত হবে আন্দোলনের নামে জনদুর্ভোগ না বাড়িয়ে, বিচার বিভাগ ও নির্বাহী বিভাগকে সহায়তা করে কোটা সংস্কারের যৌক্তিক দাবিগুলোকে দৃঢ় আইনি ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত করা, যাতে ভবিষ্যতে এ নিয়ে আর জটিলতা সৃষ্টি না হয়।

এমএইচএন/এমএ