ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের পরিবর্তে প্রস্তাবিত ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন’ পাস হলে তা মুক্ত গণমাধ্যম এবং স্বাধীনভাবে মতপ্রকাশের ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে আশঙ্কা করছে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ)।

মঙ্গলবার (০৮ আগস্ট) এক যৌথ বিবৃতিতে ডিআরইউ কার্যনির্বাহী কমিটির পক্ষে সভাপতি মুরসালিন নোমানী এবং সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল এ কথা বলেন।

সাইবার নিরাপত্তা আইনে গণমাধ্যমে মানহানিকর তথ্য প্রচার ও প্রকাশ করার ক্ষেত্রে শাস্তি হিসেবে সর্বোচ্চ ২৫ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। অন্যদিকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে যেসব মামলা চলমান রয়েছে, সেগুলোর বিচারকার্য চলবে বলা হচ্ছে। তাই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মতোই ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন’ স্বাধীন ও মুক্ত সাংবাদিকতার জন্য চরম হুমকি হবে বলে মনে করছে সাংবাদিক সমাজ। বিষয়টিকে হাত-পা বেঁধে সাঁতার কাটতে বলার মতো অবস্থা।

বিবৃতিতে ডিআরইউ নেতারা বলেন, সাংবাদিক সমাজ শুরু থেকেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছে। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মহলও আইনটির সমালোচনা করে আসছিল। মনে করা হচ্ছিল যে, সরকার এ আইন বাতিল করে মুক্ত স্বাধীন সাংবাদিকতার জন্য সব ধরনের বাঁধা দূর করবে। কিন্তু গতকাল (সোমবার) মন্ত্রিসভার বৈঠকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল না করে পরিবর্তিত ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন’ করার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাতে সাংবাদিক সমাজ চরম হতাশ।

তারা বলেন, গণমাধ্যম ও সাংবাদিক নিবর্তনমূলক কোনো আইন সাংবাদিক সমাজ মেনে নেবে না। তাই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের পরিবর্তে ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন’ নামে যে আইন প্রবর্তনের সিদ্ধান্ত হয়েছে, সে সম্পর্কে সাংবাদিক সমাজের সঙ্গে কোনো আলোচনা করা হয়নি। তাই সাংবাদিক সমাজ ধোঁয়াশার মধ্যেই রয়েছে। প্রস্তাবিত সাইবার সিকিউরিটি আইনে সাংবাদিকদের বিষয়ে কী কী ধারা রয়েছে সেগুলোও সাংবাদিক সমাজ বিস্তারিত জানতে পারেনি।

তারা আরও বলেন, ডিআরইউ পেশাদার সাংবাদিকদের একটি বড় প্লাটফর্ম হিসেবে এ কথা মনে করে যে, গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ সংক্রান্ত কোনো আপত্তি থাকলে তা প্রেস কাউন্সিলের মাধ্যমে প্রয়োগ করাই সমীচীন। প্রস্তাবিত সাইবার সিকিউরিটি আইনে প্রকাশিত সংবাদ নিয়ে কোনো সাংবাদিকের বিচার হওয়া কাম্য নয়। তাই প্রস্তাবিত আইনে জরিমানা সংক্রান্ত বিধান বাতিল এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ইতোমধ্যে দায়ের হওয়া সব মামলা প্রত্যাহারের আহ্বান জানাই। এমতাবস্থায় এ সংক্রান্ত যেকোনো আইন করার আগে সাংবাদিক সংগঠনগুলোর মতামত নেওয়া না হলে তা নিবর্তনমূলক আইন বলেই গণ্য করবে সাংবাদিক সমাজ।

এমআই/কেএ