সাংবাদিক নাদিম হত্যা স্বাধীন সাংবাদিকতার জন্য হুমকি : ডুজা
সংবাদ প্রকাশের জেরে জামালপুরে সাংবাদিক গোলামী রব্বানী নাদিমকে সংঘবদ্ধভাবে মারধর করে হত্যার ঘটনাকে স্বাধীন ও সাহসী সাংবাদিকতার জন্য হুমকি বলে মনে করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি।
রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি মামুন তুষার ও সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম রুবেল এক বিবৃতিতে সাংবাদিক গোলাম রব্বানী নাদিম হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানান।
বিজ্ঞাপন
একই সঙ্গে ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের কোনো ঘটনা না ঘটে সেদিক বিবেচনায় রেখে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।
বিবৃতিতে সাংবাদিক নেতারা বলেন, স্বাধীনতার সূবর্ণজয়ন্তী পার করা একটি দেশে সংবাদ প্রকাশের জেরে রাতে এভাবে টার্গেট করে হত্যা দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্বশীলতা নিয়ে সংশয় তৈরি করে। একটি ভিডিও বার্তায় আমরা দেখেছি, সাংবাদিক নাদিম মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পুলিশ প্রশাসনের কাছে নিজের নিরাপত্তার আবেদন জানিয়েছেন। কিন্তু একজন নাগরিককে নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হলো প্রশাসন।
তারা আরও বলেন, সাংবাদিক নাদিমের হত্যাকাণ্ডের পর জামালপুর জেলার এসপি নাছির উদ্দিন আহমেদ এক বেসরকারি টেলিভিশনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে বলেছেন, ‘নাদিমকে মেরে ফেলার জন্য আঘাত করা হয়নি, সতর্ক করার জন্য আঘাত করা হয়েছে’। দায়িত্বশীল একজন পুলিশ কর্মকর্তার এ ধরনের বক্তব্য ‘অপরাধকে হালকা করে দেখার শামিল’। এমন বক্তব্য অপরাধীদের উৎসাহিত করতে পারে। আমরা মনে করি, পুলিশের এ কর্মকর্তার বক্তব্য আইনের দৃষ্টিতে নেওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে।
গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার সাধুপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশের জেরে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিম। গত ১৪ জুন রাতে বাড়ি ফেরার পথে বকশীগঞ্জের পাথাটিয়ায় পৌঁছালে অস্ত্রধারী ১০-১২ জন দুর্বৃত্ত নাদিমকে পিটিয়ে জখম করে পালিয়ে যায়। পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত স্থানীয় ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মাহমুদুলসহ ৯ জনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বাকি অভিযুক্তদের অবিলম্বে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে ঢাবি সাংবাদিক সমিতি। সেই সাথে, সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডসহ সকল সাংবাদিক নির্যাতন ও হত্যার ঘটনায় দ্রুত বিচারের দাবি তাদের।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংশোধন বা বাতিলসহ স্বাধীন সাংবাদিকতার পথে জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে সকল ধরনের প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণে সরকার ও সংশ্লিষ্ট মহলের আশু পদক্ষেপ আশা করছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি।
এইচআর/এনএফ