সমাজের সুষ্ঠু বিকাশে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার গুরুত্ব তুলে ধরে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, সমাজ যাদের দিকে তাকানোর সুযোগ পায় না, অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা তাদের না বলা কাহিনী তুলে ধরে।

সোমবার (৩০ মে) সন্ধ্যায় রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) ‘বসুন্ধরা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড-২০২১’ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন।

বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান। প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. নিজামুল হক নাসিম অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা দেন।

ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপ আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের জন্য ১১ জন সাংবাদিকের প্রত্যেককে আড়াই লাখ টাকা, মফস্বল সাংবাদিকতায় ৬৪ জন প্রবীণ সাংবাদিক প্রত্যেককে এক লাখ টাকা ও সবাইকে সনদপত্র ও সম্মাননা স্মারক দেওয়া হয়। 

তথ্যমন্ত্রী পুরস্কারপ্রাপ্তদের অভিনন্দন ও বসুন্ধরা গ্রুপকে বিশেষ করে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় পুরস্কার দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, এ ধরনের পুরস্কার অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা ও সার্বিকভাবে সাংবাদিকতাকে উৎসাহিত করবে।

ড. হাছান বলেন, সাংবাদিকতা এমন একটি পেশা যা, সমাজকে সঠিক খাতে প্রবাহিত করতে সমাজের তৃতীয় নয়ন খুলে দিতে এবং অবহেলিত দিকগুলোতে সমাজের দৃষ্টি নিবদ্ধ করতে যেভাবে ভূমিকা রাখে, তা অন্য কোনো পেশার মানুষ পারে না।

অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার ভিন্ন মাত্রার কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এ ধরনের সাংবাদিকতায় ঝুঁকি থাকে, জীবন বিপন্ন হতে পারে। এসব অতিক্রম করে সাংবাদিককে কাজ করতে হয়। পথের পাশের বিপন্ন মানুষগুলোর জীবনের যে গল্প, যে বেদনা, সেটিও তুলে আনতে পারে অনুসন্ধানী সাংবাদিকই।

গণমাধ্যম রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার মনে করে গণমাধ্যমের বিকাশের সাথে রাষ্ট্র ও গণতান্ত্রিক সমাজের বিকাশ নিহিত উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, সে কারণেই বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বে গত সাড়ে ১৩ বছরে সংবাদপত্র, বেতার, টেলিভিশন ও অনলাইন গণমাধ্যমের প্রতিটি ক্ষেত্র যুগান্তকারী বিকাশ লাভ করেছে। একইসঙ্গে অসুস্থ প্রতিযোগিতা ও আইনবিরোধী চর্চা কমে এসেছে।

আওয়ামী লীগের এ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, সমালোচনাকে সমাদৃত করার সংস্কৃতিতে আমরা বিশ্বাস করি, লালন করি। সমালোচনা পথ চলাকে শাণিত করে, কাজকে বিশুদ্ধ করে।

বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান তার বক্তৃতায় অতিথিদের উপস্থিতির জন্য ধন্যবাদ জানান।

সভাপতির বক্তব্যে সায়েম সোবহান আনভীর পুরস্কারপ্রাপ্তদের অভিনন্দন জানান এবং পুরস্কারের এ ধারা অব্যাহত থাকবে বলে জানান।

চিত্রনায়ক ফেরদৌস ও চিত্রনায়িকা বুবলির উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের জন্য মুক্তিযুদ্ধ ক্যাটাগরিতে ডেইলি স্টারের আহমাদ ইশতিয়াক, মাছরাঙা টেলিভিশনের কাওসার সোহেলী, জাগো নিউজ ২৪.কম-এর সালাহ উদ্দিন জসিম, অপরাধ ও দুর্নীতি ক্যাটাগরিতে দেশ রূপান্তরের শোয়েব চৌধুরী, জিটিভির জান্নাতুল ফেরদৌসী, নিউজ বাংলা২৪.কম-এর জেসমিন পাপড়ি, নারী ও শিশু ক্যাটাগরিতে সমকালের রাজীব আহাম্মদ, আনন্দ টিভির শওকত সাগর, ঢাকা পোস্টের আদনান রহমান, অনুসন্ধানী প্রামাণ্যচিত্রে মাছরাঙা টেলিভিশনের মাজাহারুল ইসলাম এবং আলোকচিত্রে প্রথম আলোর দীপু মালাকার পুরস্কার গ্রহণ করেন।

পুরস্কারের জুরিবোর্ডে ছিলেন অধ্যাপক ড. মো. গোলাম রহমান, একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক অজয় দাশগুপ্ত, সিনিয়র সাংবাদিক মনজুরুল আহসান বুলবুল, দৈনিক দেশ রূপান্তর সম্পাদক অমিত হাবিব, লেখক নাসির আলী মামুন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. এ জে এম শফিউল আলম ভূঁইয়া, সহযোগী অধ্যাপক শাওন্তী হায়দার ও সাংবাদিক জুলফিকার আলি মানিক।

এমএসি/আরএইচ