ইসলামী বইমেলায় বাড়ছে পাঠক-দর্শনার্থী
পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) ১৪৪৬ হিজরি উপলক্ষ্যে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে শুরু হয়েছে ২০ দিন ব্যাপী ইসলামী বইমেলা। বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ ও পূর্ব চত্বরে জাঁকজমকপূর্ণভাবে শুরু হয়েছে বইমেলার আয়োজন।
ইসলামী লেখক, পাঠক ও প্রকাশকদের এই মিলন মেলায় বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখা গেছে, চারিদিকে ইসলামী বইয়ের সমারোহ। সারি সারি সাজানো বই দেখলেই পাঠকের মন ছুঁয়ে যায়।
বিজ্ঞাপন
ইসলামী বইমেলায় আসা পাঠক ও কিছু প্রকাশনীর সঙ্গে কথা হয়েছে ঢাকা পোস্টের। বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি) শিক্ষার্থী সাজিদ জাওয়াদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘প্রতি বছর ইসলামিক বই মেলায় আসার চেষ্টা করি। ইসলাম রিলেটেড বই পড়লে আমাদের ইমান বৃদ্ধি পায়। বর্তমানে যেভাবে ফিতনা বাড়ছে, সেই হিসেবে বই পড়ে জ্ঞান অর্জনের বিকল্প নেই।’
তিনি জানান, এমন বইমেলা অবশ্যই থাকা উচিত। অনলাইন থেকে তথ্য সংগ্রহের তুলনায় বই পড়লে বেশি উপকৃত হওয়া যায়। বইমেলা যত বেশি হবে মানুষ ততো বেশি বই কিনবে, বই পড়বে।
সাধারণ বইমেলা ও ইসলামী বইমেলার মধ্যে পার্থক্য নিয়ে এ শিক্ষার্থীর ভাষ্য, ‘সাধারণ বইমেলাতে ইসলামিক রিলেটেড বই কম পাওয়া যায়। সাধারণ বই মেলায় রোমান্টিক উপন্যাস ও ভিন্ন ধাঁচের বই বেশি থাকে। আমার মতে যে বই থেকে কিছু শিখতে পারবো উপকৃত হতে পারবো যেটা আমাদের পরকালেও কাজে লাগবে সেরকম বই পড়া উচিত।’
বই মেলায় ঘুরতে আসা মোহাম্মদ ফয়েজ উল্লাহ ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘ইসলাম প্রচার প্রসারের জন্য এবং ইসলামী চেতনা মানুষের ভেতরে জাগ্রত করার জন্য ইসলামী বইমেলার বিকল্প নেই। সুশিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড, ধর্ম মানুষকে আদর্শ শিক্ষা দেয় ।’
ইসলামিক ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী নুসাইবা আক্তার ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘ইসলাম শব্দটাই ইতিবাচক শব্দ তাই এ বইমেলায় ইসলামী সাহিত্য, কালচার সংস্কৃতি মুসলিম প্রজন্মর কাছে তুলে ধরা হয়েছে । আর এ প্রজন্ম তাদের আসল ঐতিহ্যকে চিনতে পারবে বই মেলায় এলে। লাইব্রেরিতে যেতে বই পড়ার চেয়ে বইমেলায় এসে একটা হলেও বই কেনা বেশি ভালো ।’
আরও পড়ুন
মুক্ত ভাবে এ আয়োজন করতে পেরে কেমন লাগছে প্রশ্ন করা হলে গার্ডিয়ান প্রকাশনীর এ এম ডি মাহমুদুল হাসান ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট সরকার যখন ক্ষমতায় ছিল আমরা দেখেছি, আমাদের যৌক্তিক দাবিগুলো খুব সহজেই নাকচ করে দিয়েছে তারা। এটা নিয়ে আমরা ইসলামী ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দফায় দয়ায় বসেছি। আর যখন ফ্যাসিস্ট বাংলাদেশে থেকে বিদায় নিয়েছে আমরা মনে করেছি যে বাংলাদেশ থেকে ইসলামোফোবিয়া যে ব্যাপারটা আছে, এটা অনেকাংশে কমে এসেছে। তারই ধারাবাহিকতায় এই পর্যায়ে এসে আমরা এখানে একটা বইমেলার আয়োজন করতে পেরেছি ।’
ইসলামী বইমেলার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার বিষয়ে মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘ইসলাম তো দুনিয়ার সবচেয়ে রিচ বিষয়, ইসলামকে কেন্দ্র করে বহুধরনের গবেষণা গড়ে উঠেছে। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম না। বাংলাদেশে যেহেতু ৯২ ভাগ মুসলমান রয়েছে সুতরাং এখানে ইসলাম সবসময়ের জন্য প্রাসঙ্গিক। তাই ইসলামকে বেইজ করে অনেকগুলো অ্যাকাডেমিক কাজ হবে, অনেকগুলো গবেষণা কাজ হবে।’
পাঠকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘বইমেলা সৃজনশীল বুদ্ধিবৃত্তিক ও রুচিশীল মানুষদের মেলা। সুতরাং পাঠকরা যদি এখানে আসেন তারা তাদের কাঙ্ক্ষিত বিষয়ের উপর বই খুঁজে নিতে পারবেন। যেটা তাদের পথ চলতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। পাঠকরা যে বিষয়গুলোর উপর বই চান সেগুলো আমরা আইডেনটিফাই করে সে অনুযায়ী বাজারে বই নিয়ে আসার চেষ্টা করি । এই বই মেলা মূলত পাঠকদের মেলা।’
এমআইকে