অবসান হলো দীর্ঘ প্রতীক্ষার। অবশেষে বাংলা পেল ভারতীয় ধ্রুপদী ভাষার মর্যাদা। নয়াদিল্লিতে ভারতের মন্ত্রিসভার বৈঠকে বাংলাকে এই মর্যাদা দেওয়া হয়।

বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দেশটির তথ্য ও সংস্কৃতিমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব।

তিনি বলেন, বাংলা, মারাঠি, পালি, প্রাকৃত ও অসমিয়া ভাষাকে ভারতীয় ধ্রুপদী ভাষার মর্যাদা দেওয়া হলো। এর ফলে দেশের সাংস্কৃতিকগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভাষার তালিকা আরও প্রসারিত হলো। প্রধানমন্ত্রী মোদিজি সর্বদা ভারতীয় ভাষাগুলোর ওপর দৃষ্টি দিয়ে থাকেন। তারই ফলশ্রুতিতে আজ পাঁচটি ভাষাকে অনুমোদন দেওয়া হলো ভারতীয় ধ্রুপদী ভাষা রূপে।

বাংলা ভাষা ধ্রুপদী ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে লেখেন, আমি অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি, আমাদের দীর্ঘ লড়াইয়ের পর আমাদের মাতৃভাষা বাংলাকে ভারত সরকার একটি ধ্রুপদী ভাষার মর্যাদা দিয়েছে। অনেকদিন ধরে আমরা কেন্দ্রীয় সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের কাছে এই সংক্রান্ত গবেষণালব্ধ বিপুল তথ্য জমা দিয়ে দাবি করে আসছিলাম।

তিনি আরও লেখেন, আমাদের সেই স্বপ্ন পূরণ হলো। কেন্দ্রীয় সরকার আজ (বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যায় আমাদের দাবি মেনে নিয়েছে। অন্য কয়েকটি রাজ্যের ভাষা আগে এই স্বীকৃতি পেলেও বাংলাকে বঞ্চিত রাখা হয়েছিল। ভালো লাগছে, আমাদের লড়াইয়ে অবশেষে বাংলা ভাষা এই অভিপ্রেত এবং ন্যায্য স্বীকৃতি পেল।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে লেখেন, আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে মহান বাংলা ভাষাকে একটি ধ্রুপদী ভাষার মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে দুর্গাপূজার এই শুভ সময়ে। বাংলা সাহিত্য বছরের পর বছর ধরে অসংখ্য মানুষকে অনুপ্রাণিত করেছে। আমি সারা বিশ্বের সকল বাংলা ভাষাভাষীদের অভিনন্দন জানাই।

উল্লেখ্য, একটি ভাষাকে ধ্রুপদী ভাষার মর্যাদা পেতে গেলে পূরণ করতে হয় ভারত সরকার নির্ধারিত বেশ কয়েকটি মানদণ্ড। যেগুলোর মধ্যে প্রথম ও অন্যতম হলো, সংশ্লিষ্ট ভাষাটির দেড় হাজার বছর বা তার বেশি পুরোনো লিখিত নথি থাকতে হবে।

জানা গেছে, বাংলা ভাষার ক্ষেত্রে দেড় হাজার বছরের থেকেও অনেক বেশি প্রাচীন নথির সন্ধান মিলেছে। ইতোমধ্যে দেশের ছয়টি ভাষাকে ধ্রুপদী ভাষার স্বীকৃতি দিয়েছে ভারত সরকার। সর্বপ্রথম স্বীকৃতি পেয়েছিল তামিল ভাষা। তারপর একে একে সংস্কৃত, তেলুগু, কন্নড়, মালয়ালম ও সর্বশেষে ২০১৪ সালে ওড়িয়া ভাষাকে ধ্রুপদী ভাষার মর্যাদা দেওয়া হয়েছিল। ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষা হিসেবে বাংলাকেও ধ্রুপদী ভাষার স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি ছিল বহুদিন ধরেই।

এএমকে