ছবি : সংগৃহীত

জীবন এক বহমান নদী। বয়ে চলে নিরবধি। কখনো নদী দুকূল ছাপিয়ে কলকল সুরে বয়ে চলে আবার কখনো নদী পায় না জল, নিজেকে উচ্ছলতায় ছড়িয়ে দিতে পারে না। শীর্ণকায় হয়ে বয়ে বেড়ায়, পায় না নদীর পরিচয়।

নদী সব জঞ্জাল বুকে ধারণ করে অবশেষে সাগরে সমর্পিত হয়। মানব জীবন বয়ে বেড়ানো অতটা সহজ নয়। এক জীবনের গল্প সে তো আরও কঠিন। সব দুঃখ-কষ্ট, পাওয়া না পাওয়া আশা-নিরাশার দোলাচলে বয়ে বেড়ায় এই জীবন।

একদিন এই পথ চলা ফুরিয়ে যায়। প্রকৃতির কোলে ঘুমিয়ে পড়ে, বেলা শেষে সূর্যের মতো সমুদ্রের বুকে টুপ করে ডুবে যায়। শুধু রয়ে যায় অল্প অল্প জীবনের গল্প।

অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০২৪-এ সপ্তর্ষি প্রকাশন থেকে প্রকাশিত হয়েছে দুটি বই 'অল্প অল্প জীবনের গল্প' ও 'মন খারাপের মেয়ে'।

লেখিকা, অধ্যাপিকা তৃপ্তি চক্রবর্তী। তার মা-বাবা ও ভাই চির কুমার বীর মুক্তিযোদ্ধা তরুণ দেবকে 'অল্প অল্প জীবনের গল্প' বইটি উৎসর্গ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন।

মৌলভীবাজারের রক্ষণশীল পরিবারের মেয়ে, সেখানে মেয়েরা শিক্ষার আলো দেখতে অনেক বাঁধা বিপত্তি পার করতে হয়েছে। জন্মস্থান ও স্কুল জীবন কাটিয়েছেন বরিশাল। ১৯৭৩ সালে কুমিল্লা কলেজে পড়াশোনা, এরপর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ (অর্থনীতি) সম্পন্ন করেন।

স্বাধীনতা পরবর্তী পারিবারিক জটিলতা, আর্থিক টানাপোড়েন, সামাজিক বিধি নিষেধ সবকিছু উতরে একটা স্থানে নিজেকে কতটুকু প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছেন, 'অল্প অল্প জীবনের গল্পে' তা তুলে ধরতে চেয়েছেন লেখিকা। বর্তমানে মেয়েদের শিক্ষা বিস্তারে এ এক অনন্য উদাহরণ হিসেবে বিবেচিত হবে বলে আশা করা যায়।

তৃপ্তি চক্রবর্তী বাংলাদেশ বেতার ও বাংলাদেশ টেলিভিশনের অভিনয় শিল্পী এবং বাংলাদেশ বেতারের সংবাদ পাঠক ও বাচিক শিল্পী। তিনি উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, কুমিল্লা শাখার বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের নিয়মিত শিল্পী ছিলেন ১৯৭৫ -১৯৯৪। মঞ্চ নাটকে অভিনয় করেছেন ও পুরস্কৃত হয়েছেন। আবৃত্তি করা ছিল তার পছন্দের তালিকায়। কবিতা পড়তে পড়তে একসময় কবিতা লিখতেও শুরু করেন।

যার ফলশ্রুতিতে আজকের কাব্যগ্ৰন্থ 'মন খারাপের মেয়ে'। সহজ কথা যায় না বলা সহজে-একথা একেবারেই ঠিক নয়। 'মন খারাপের মেয়ে' কাব্যগ্ৰন্থে সহজ কথাগুলো খুব সহজভাবেই উপস্থাপন করেছেন।

প্রকৃতিপ্রিয় কবি কবিতায় প্রকৃতিকে খুঁজে ফিরেছেন। কবিতার মাঝে থাকতে পারে চিত্রকল্প তাও কবি তার কবিতায় প্রমাণ রেখেছেন।

বিডি/