বইমেলায় জহির উদ্দিন বাবরের ‘লেখালেখির প্রথম পাঠ’
অনেকে লিখতে চান, কিন্তু শুরুটা কীভাবে করতে হবে বুঝে উঠতে পারেন না। কেউ কেউ লেখালেখিতে পথচলা শুরু করেছেন, কিন্তু বারবার হোঁচট খাচ্ছেন। আবার অনেকে লেখালেখিতে বেশ কিছুটা পথ পাড়ি দেওয়ার পরও রয়ে গেছে নানা বিচ্যুতি। এ ধরনের সবার সমস্যার সমাধান রয়েছে জহির উদ্দিন বাবরের ‘লেখালেখির প্রথম পাঠ’ বইয়ে।
বইটি লেখালেখি শেখার সার্বক্ষণিক প্রশিক্ষক। সংগ্রহে থাকলে যখন খুশি প্রয়োজনীয় বিষয় দেখে নেওয়া যাবে। বইটিতে সাহিত্যের প্রায় সবকটি শাখা নিয়েই আলোচনা করা হয়েছে। তিনটি অধ্যায়ে সাজানো হয়েছে বইটি। সেগুলো হলো লেখালেখি শুরুর পাঠ, লেখালেখির নানা দিক এবং লেখালেখির সহায়ক বিষয়াদি।
বিজ্ঞাপন
প্রথম অধ্যায়ে উঠে এসেছে- কেন লেখেন লেখক? লেখালেখির প্রভাব, কেন লেখক হবেন? লেখালেখি শুরু করব কীভাবে? লেখকের মৌলিক গুণ, লেখকের প্রাথমিক কাজ, কীভাবে পড়তে হবে? লেখার বিষয়, লেখার কলাকৌশল, লেখার উপযুক্ত সময় ও স্থান, বিশিষ্ট লেখকদের জবানিতে লেখালেখি ইত্যাদি।
দ্বিতীয় অধ্যায়ে উঠে এসেছে- পত্রিকায় লেখালেখির টিপস; প্রবন্ধ-নিবন্ধ, কলাম, ফিচার-প্রতিবেদন লেখার নিয়ম; অনুবাদ করার তরিকা; ছড়া-কবিতা ও ছোটগল্প লেখার নিয়ম; উপন্যাস ও উপন্যাসিকার পার্থক্য; নাটক, জীবনীমূলক সাহিত্য লেখার নিয়ম; সাক্ষাৎকার: কী কেন কীভাবে? ভ্রমণ কাহিনি, শিশুসাহিত্য ও রম্য রচনার পরিচয়; দিনলিপির চর্চা, সমালোচনা সাহিত্য ও বই আলোচনা করার নিয়ম; কীভাবে লিখব সংবাদ; প্রেস বিজ্ঞপ্তি লেখার নিয়ম; অনুলিখন করার তরিকা ইত্যাদি।
তৃতীয় অধ্যায়ে উঠে এসেছে- বানান প্রসঙ্গ; সম্পাদনা কী ও কীভাবে করতে হয়; প্রæফ সংশোধনের সাত-পাঁচ; শিরোনাম কেমন হবে; বিরাম চিহ্নের ব্যবহার; সাধু-চলিতের পার্থক্য ইত্যাদি।
লেখক এসব বিষয় আকর্ষণীয় শিরোনামের মাধ্যমে চমৎকার মুনশিয়ানার সঙ্গে তুলে এনেছেন। বইয়ের শেষের দিকে কিছু সমোচ্চারিত শব্দ উল্লেখ করে সেগুলোর বিভ্রাট দূর করেছেন ‘কিছু শব্দের চাই সতর্ক প্রয়োগ’ শিরোনামে। সবশেষে ‘প্রকাশনা: পরিকল্পনা থেকে পাঠকের হাতে’ শিরোনামে একটি বই বা পত্রিকা কয়টি স্তর পেরিয়ে, কত শ্রম ও সাধনার পর পাঠকের হাতে পৌঁছে নিপুণভাবে তা বয়ান করেছেন।
বইটিতে একটি মূল্যবান অভিমত দিয়েছেন শক্তিমান গদ্যশিল্পী মুহাম্মদ যাইনুল আবিদীন। সেখানে বইটি সম্পর্কে মূল্যায়ন করতে গিয়ে তিনি লিখেছেন, ‘বাবর তার দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতার মাখনটুকু তুলে দিয়েছেন অল্প ক’খানা প্রসারিত পাতায়। তার ভাষা সরল সুখকর মেঘমুক্ত আকাশের মতো ফর্সা। বোধ পরিচ্ছন্ন। লেখা মেদহীন। আদর্শে পূর্বসূরিদের প্রতি অশেষ শ্রদ্ধায় আপসহীন। তার ব্যক্তি এবং লেখা দুটোই আমাকে টানে। তার জয় হোক এই কামনা করি।’
ভূমিকায় লেখক লিখেছেন, ‘যারা লিখতে চান, যারা লেখালেখির পথে অনেক দূর এগিয়ে গিয়েছেন তাদের জন্য এই বই। লেখক না হয়েও এই সম্পর্কে ধারণা পেতে চাইলে আপনাকে পথ দেখাবে বইটি। মাতৃভাষা বাংলা চর্চায়ও সহায়ক হবে এটি। এখানে অভিজ্ঞতার আলোকে সহজ ভাষায় টিপসনির্ভর আলোচনা করা হয়েছে। কেতাবি বিবরণ কম দেওয়া হয়েছে।’
লেখকপত্র প্রকাশন বইটি প্রকাশ করেছে। ৩০০ গ্রাম আর্ট কার্ডে পেপারব্যাক বাঁধাই এবং ৭০ গ্রাম অফ হোয়াইট কাগজে ঝকঝকে ছাপা ১৪৪ পৃষ্ঠা বইটির মূল্য রাখা হয়েছে ২৮০ টাকা। বিক্রি হচ্ছে বিশেষ কমিশনে।
বইটির অফলাইন পরিবেশক- বাংলাবাজার ইসলামী টাওয়ারের রাহনুমা প্রকাশনী ও দারুল উলুম লাইব্রেরী। অনলাইন পরিবেশক- রকমারি, ওয়াফি লাইফ, কিতাবঘর এবং মোল্লার বই ডটকম। এছাড়াও বায়তুল মোকাররমের হাবিবিয়া বুক ডিপো, আওয়ার ইসলাম অফিস, একুশে বইমেলায় রাহনুমা প্রকাশনীর ৩৫০-৩৫১ নম্বর স্টলে বইটি পাওয়া যাবে।
এনটি