মলিন বইমেলার শিশু চত্বর
এমন অবস্থা আগে কখনো হয়নি। বিক্রি তো নেই, দেখা মিলছে না পাঠক-দর্শনার্থীদেরও। মেলার ১২দিন পার হচ্ছে, সারাদিনে পাঁচটি বইও বিক্রি হয়নি। হতাশ কণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন অমর একুশে বইমেলার শিশু চত্বরের ঝিঙেফুল প্রকাশনীর বিক্রয়কর্মী হানিফ মোল্লাহ।
একই অবস্থার কথা জানালেন ছোটদের বই ঘরের বিক্রয়কর্মী সোহান হাসান। তিনি বলেন, মেলা দেরিতে শুরু হওয়া ক্রেতা দর্শনার্থীর সংখ্যা খুবই কম। অন্য অংশগুলোতে কিছুটা বিক্রি হলেও শিশু চত্বর একেবারেই ফাঁকা। আবার করোনার সংক্রমণ হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় অভিভাবকরাও বাচ্চাদের নিয়ে মেলায় আসতে ভয় পাচ্ছেন।
বিজ্ঞাপন
সোমবার (২৯ মার্চ) সরেজমিনে বইমেলার শিশু চত্বর ঘুরে এমন দৃশ্য দেখা গেছে। বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামলেও মেলায় পাঠক-দর্শনার্থীর সংখ্যা একেবারেই কম। কয়েকজন বই হাতে নিয়ে দেখলেও কেনার আগ্রহ চোখে পড়েনি।
প্রকাশকরা বলছেন, গরম আবহাওয়া আর করোনার শঙ্কা মাথায় নিয়ে অভিভাবকরা বাচ্চাদের নিয়ে মেলায় আসছেন না। অন্য বছর এখানে শিশুদের খেলাধুলার ব্যবস্থা থাকলেও, এ বছর সে ব্যবস্থা করা হয়নি। আবার আকর্ষণীয় শিশু প্রহর না থাকার কারণে শিশুদের আনাগোনা নেই। যার ফলে বই বিক্রিও কম।
শিশু চত্বরে এবার খেলাধুলা আর শিশু প্রহর না থাকায় অভিভাবকদের সঙ্গে মেলায় আসা শিশুরাও ছিলো হতাশ। সিসিমপুরের প্যাভিলিয়নের সামনে হালুম, টুকটুকি আর ইকরির খোঁজে হয়রান পাঁচ বছরের ছোট্ট শিশু ফাহিম। বাবার সাথে মেলায় আসা শিশুটির প্রশ্ন হালুম, টুকটুকি, আর ইকরি কোথায়? অনেক বোঝানোর পর হালুমের ছবিযুক্ত বই নিয়েই ফিরে যায় ফাহিম। শিশুটির বাবা তারেক হোসাইন বলেন, গত বছরের বইমেলায় শিশু প্রহরে হালুম আর টুকটুকির দেখা পেয়েছিলো ফাহিম। সেই স্মৃতি এখনও ভুলেনি।
সিসিমপুর প্যাভিলিয়নের কর্মকর্তারা জানান, করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় আমরা শিশু প্রহরের অনুমতি পাইনি। এ কারণে পুরো শিশু কর্নার জুড়ে দর্শনার্থী ও পাঠক সংখ্যা খুব কম।
ঘুরে দেখা গেছে, শুধুমাত্র শিশু চত্বরই না, পুরো মেলা জুড়ে পাঠক-দর্শনার্থীর উপস্থিতি ছিলো একেবারেই কম।
বাংলা একাডেমির স্টল ম্যানেজার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বড় প্যাভিলিয়নগুলোতে কিছুটা বিক্রি হলেও ছোট স্টলগুলোতে বিক্রি নেই বললেই চলে। তার ওপর যুক্ত হয়েছে রাজনৈতিক অস্থিরতা। অন্যদিনের তুলনায় আজ বাংলা একাডেমির প্যাভিলিয়নেও বিক্রি অনেক কম।
আরএইচটি/এমএইচএস