বইমেলায় হুমায়ুন আজাদকে স্মরণ
বহুমাত্রিক লেখক হুমায়ুন আজাদের ওপর মৌলবাদী চক্রের সন্ত্রাসী হামলার বার্ষিকীতে ‘হুমায়ুন আজাদের দিবসের ডাক- পাইরেসিমুক্ত বইমেলা চাই’- এ প্রতিপাদ্যে একুশে বইমেলায় তাকে স্মরণ করা হয়।
সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে লেখক, পাঠক ও প্রকাশকদের যৌথ উদ্যোগে বাংলা একাডেমির প্রাঙ্গণে আয়োজিত এ সভার শুরুতে তার স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
বিজ্ঞাপন
সভায় বক্তব্য দেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা, কবি আসলাম সানী, কবি মোহন রায়হান, অধ্যাপক মেসবাহ কামাল, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, হুমায়ুন আজাদের ভাই সাজ্জাদ কবীর, বাংলা একাডেমির পরিচালক ড. শাহাদাৎ হোসেন নিপু প্রমুখ। এতে সভাপতিত্ব করেন আগামী প্রকাশনীর নির্বাহী ওসমান গনি।
এসময় বক্তারা বলেন, হুমায়ুন আজাদের হত্যাচেষ্টার বিচার অবিলম্বে বাস্তবায়ন ও তার আদর্শে মৌলবাদ-জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িকতামুক্ত সমাজ-রাষ্ট্র গঠনের মাধ্যমেই তাকে যথাযোগ্যভাবে স্মরণ করা হবে।
এদিন বিকেল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় বিশ্ববাঙালির সাহিত্য শীর্ষক আলোচনা। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আলম খোরশেদ। আলোচনায় অংশ নেন এ এফ এম হায়াতুল্লাহ, আল-মামুন এবং জসিম মল্লিক। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম।
প্রাবন্ধিক বলেন, বিশ্ববাঙালি বলতে সারা বিশ্বের বাঙালি সম্প্রদায়কেই বোঝানো হয়, যার মধ্যে বাঙালির সর্ববৃহৎ দুই ঠিকানা, বাংলাদেশ ও ভারতও অন্তর্ভুক্ত। এছাড়াও যেসব সাহিত্যিক দেশান্তরী হয়ে বিদেশে বসবাস করছেন এবং যারা বিদেশে অভিবাসনের পর সাহিত্য রচনা শুরু করেছেন তাদের সবার লেখাকেই বিশ্ববাঙালির সাহিত্য বলা যায়। এদের মধ্যে কবি, কথাসাহিত্যিক, নাট্যকার, প্রাবন্ধিক, গবেষক, শিশুসাহিত্যিক, মুক্তিযুদ্ধ গবেষক, ভ্রমণ সাহিত্যিক, অনুবাদক, বিজ্ঞান লেখকসহ সব ধরনের লেখকই রয়েছেন। তাদের লেখায় প্রবাস জীবনের বিচিত্র অভিজ্ঞতা, অনুভূতি, উপলব্ধি, স্বদেশের স্মৃতি-আখ্যান, অভিবাসী জীবনের সংগ্রাম, সংকট ও স্বপ্নের কথা প্রকাশ হয়।
সভাপতির বক্তব্যে সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, প্রবাসী লেখকরা তাদের লেখনীর মাধ্যমে যেমন স্মৃতিচারণ করেন, তেমনি বাংলা ভাষা ও বাংলাদেশের প্রতি ভালোবাসাও প্রকাশ করেন। দূরবিস্তারী চিন্তা ও বুদ্ধিবৃত্তিক গভীরতা সম্পন্ন লেখালেখির জন্য বিস্তৃত অধ্যয়ন প্রয়োজন। কিন্তু আমাদের প্রবাসীরা বিভিন্ন রকম সীমাবদ্ধতার মধ্যে বসে সাহিত্য রচনা করেন। প্রবাসীরা যে ভাষাতেই লিখুক না কেন, তারা যেন মূল শেকড় থেকে বিচ্যুত না হন এবং বাংলা ভাষার প্রতি তাদের ভালোবাসা ধরে রাখতে পারেন।
এইচআর/এফকে